পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ডাকাতি ও প্রহসন দাবি করে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। এই নির্বাচনে ভোট চুরি ও পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। সে অনুয়ায়ি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না দিয়ে বর্জনও করেছে। নির্বাচনের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়ে এবার বেশ কঠোর অবস্থানে দলটি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারাই উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তাদেরকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম দুইধাপের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিএনপির ১১০জন নেতা বহিষ্কৃত হয়েছেন। অন্যবার নির্বাচনের পর আবেদনের প্রেক্ষিতে দলে ফেরানো হলেও এবার সেই সুযোগ থাকছে বলেও বার্তা দেয়া হয়েছে তাদেরকে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যারা মনে করছে নির্বাচনের পর আবার তাদেরকে স্বপদে ফিরিয়ে নেয়া হবে তাদের জন্য দৃষ্টান্ত হচ্ছে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। তিনি বলেন, এর আগের পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশ এক নয়। সুলতান মনসুর নির্বাচিত হওয়ার পরও তাকে দল ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং গণশত্রু হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই নির্বাচিত হলেই দলে ফিরতে পারবে এমন ধারণা পোষণকারীরা এখান থেকেই শিক্ষা নিতে পারেন।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতির জঘন্যতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে সরকারি দল ও নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতা বলে এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। তাই সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই আর কোন নির্বাচনে যাচ্ছে না রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। গত ২৪ জানুয়ারি দলটির স্থায়ী কমিটির সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিএনপি সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। দলের সে সিদ্ধান্ত সকল সাংগঠনিক জেলাগুলোকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে বিএনপির দপ্তর থেকে। একইসাথে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দল হিসেবে বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছে। এই নির্বাচনে বিএনপির কোন নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবে না। কেউ যদি এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে অংশগ্রহণ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মূলদলের পাশাপাশি বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোও তাদের নেতাকর্মীদের একই বার্তা দিয়েছে। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেন, মহিলা দল আগামী উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। যদি সংগঠনের কেউ উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিএনপির এই সিদ্ধান্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুরোপুরিভাবেই কার্যকর হয়েছে। নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় ভোটারদের অনীহাও ছিল চোখে পড়ার মতো। নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীদের আহ্বান সত্তে¡ও সামান্য সংখ্যক কিছু ভোটার ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিলেন। যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনও বিব্রত হয়েছে। আর এটিকেই সফলতা হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটির নেতাকর্মীরা মনে করেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করায় একইভাবে ভোটারবিহীন কেন্দ্রের চিত্র ফের দেখা যাবে। যেটি দেশে-বিদেশে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বিব্রত ও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাই দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারাই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বিএনপি। এ পর্যন্ত প্রথম দুই ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ১১০জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও অনেকের নাম কেন্দ্রে জমা পড়েছে। তাদেরও বহিষ্কার করা হবে। বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ফেব্রæয়ারি বহিষ্কার করা হয়েছে ৯ জনকে, ২৮ ফেব্রæয়ারি ১০ জন, ১ মার্চ ১ জন, ৩ মার্চ ৮৩ জন, ৫ মার্চ ৮জন এবং ৭ মার্চ ১জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এদের প্রায় সবাই উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ১৪ দলের শরিকেরা নিজেরাই স্বীকার করেছে ২৯ ডিসেম্বর মাঝ রাতেই একাদশ জাতীয় সংসদের ভোট হয়ে গেছে। যেখানে নির্বাচন কমিশন, অংশগ্রহণকারী দলগুলো বলছে দেশে নির্বাচন নাই। একদলীয় শাসন চলছে, সেখানে তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন হয় না। তাই বিএনপি এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও দলের কিছু লোক রয়েছে যারা নির্বাচন এলেই অংশগ্রহণ করতে চায়। দল এবার তাদের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর। এখন পর্যন্ত যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানান, নির্বাচনের পরিবর্তে দলকে সুসংগঠিত করা এবং দলের প্রতি অনুগত নন এমন নেতাদের নেতৃত্ব থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই আলোকে অঙ্গসংগঠনগুলোর কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপিতেও পুনর্গঠনের আলোচনা হচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা প্রমাণিত। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেই স্বীকার করেছেন যে ভোটের আগের রাতেই ভোট হয়ে যায়। তাই আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বিএনপি। যারাই এই সিদ্ধান্ত অমান্য করবে তারা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে এজন্য তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।