নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ওয়েলিংটন টেস্ট জিতে সিরিজ নিজেদের দখলে নিতে সকল রসদই আছে নিউজিল্যান্ডের। তাদের আছে শক্তিশালী পেস অ্যাটাক, সফরের এই পর্যন্ত এসে যা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়েও আছে আগুনে শক্তি, হ্যামিল্টন টেস্টে ৬ উইকেটে রেকর্ডগড়া ৭১৫ রানই দিচ্ছে তার সাক্ষী। তামিম-সৌম্য-রিয়াদ বাদে বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ওয়ানডে সিরিজে লজ্জার হোয়াইটওয়াশের পর প্রথম টেস্টেও রান না পাওয়ার হাপিত্যেস দিয়েছে সেই কিউই গতিকে সিল মোহর। দু’দলের শক্তি আর সামর্থ্যরে বিচার করতে এই ক’টি পার্থক্যই যথেষ্ট। কিন্তু উইলিয়ামসনদের সিরিজ জয়ের সুযোগে বাধ সাধতে পারে বেরসিক বৃষ্টি, যা আশা জাগাচ্ছে মাহমুদউল্লাহর দলকে!
রিপোর্টটি যতক্ষণে পড়ছেন ততক্ষণে সিরিজে ফেরার লড়াইয়ে নেমে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে ভোর ৪টায় শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়াত মরিয়ার সফরকারীদের ভাবতে হয়েছে কম্বিনেশন নিয়েই! ইনজুরিতে থাকা মুশফিকুর রহিমকে পাওয়া যাচ্ছে না সেটি মোটামুটি নিশ্চিত, সফরের সবচেয়ে সফল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালও ভুগছেন চোটে। তবে তাকে খেলানোর ব্যাপারে আশাবাদী কোচ-অধিনায়ক। ব্যাটিং নিয়ে ভাবনা তো আছেই, সেই সঙ্গে যে গতি দিয়ে কিউইরা নাস্তানাবুদ করছে বাংলাদেশকে তাদের বিন্দুমাত্র পরীক্ষায়ও ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের পেস অ্যাটাক। আবু জায়েদের ছিল চতুর্থ টেস্ট। সৈয়দ খালেদ আহমেদের দ্বিতীয়। আর ইবাদত হোসেনের অভিষেক। হ্যামিল্টন টেস্টে এই ছিল বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। মাঠের পারফরম্যান্সেও পড়েছিল সেই অনভিজ্ঞতার প্রতিফলন। কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেননি তারা। তবে আশার আলো হয়ে এসেছে মুস্তাফিজুর রহমানের ফেরার বিষয়টি। আর কোন অঘটন না ঘটলে ওয়েলিংটন টেস্টে খেলছেন কাটার মাস্টার। আর তাতেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আঁকছেন আশার ছবি। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ¯্রফে পেসারদের কাছে চান, আরেকটু ধারাবাহিকতা।
হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের মূল তিন পেসার মিলে নিতে পেরেছিলেন নিউজিল্যান্ডের একটি উইকেট। তিন জনই ছিলেন খরুচে। ৩০ ওভারে ১০৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন আবু জায়েদ; ৩০ ওভারে ১৪৯ রান গুনেছিলেন খালেদ। ২৭ ওভারে ১০৭ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছিলেন কেবল ইবাদত, সেটিও নাইটওয়াচম্যান নিল ওয়েগনারের। সেই তুলনায় বেশি কার্যকর ছিলেন অনিয়মিত পেসার সৌম্য সরকার। ২১ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন দলের সফলতম বোলার।
তিন পেসারের ধারহীন বোলিংয়ে চোখে পড়ার মতো ছিল অকার্যকর সব শর্ট বল। তিনজনই একের পর এক শর্ট বল করে গেছেন একটা পর্যায়ে। কিন্তু তাদের বলে যে গতি এবং যে লেংথে বল করেছেন, তাতে কিউই ব্যাটসম্যানদের কোনো সমস্যাই হয়নি সামলাতে। এছাড়াও লাইন-লেংথ বেশির ভাগ সময় ছিল এলোমেলো। আপাতত অনভিজ্ঞতার ঢালেই পেসারদের আড়াল করলেন মাহমুদউল্লাহ। অতি আগ্রাসী বোলিংয়ের দায়টা অধিনায়ক হিসেবে নিলেন নিজেও। আর জানিয়ে দিলেন ওয়েলিংটন টেস্টের জন্য তার চাওয়া, ‘পেস বোলারদের কাছে আমি খুব বেশি কিছু চাইনি। কারণ এত অনভিজ্ঞ ও নবীন পেস আক্রমণের কাছে খুব বেশি প্রত্যাশা করলে কঠিন হতো। অবশ্যই ওরা ভালো বোলার, ওদেরকে একটু সময় দিতে হবে। বেড়ে ওঠার সঙ্গে ওরা দেশের হয়ে ভালো পারফর্ম করতে পারবে। ওদের মধ্যে সেই আগ্রাসনটা আছে, যেটা আমার আশীর্বাদ মনে হয়েছিল। আমি স্বীকার করি যে ওরা বেশি আগ্রাসী ছিল, ব্যক্তিগতভাবে আমি যেটা চেয়েছিলাম ওদের কাছে। ওরা বিভিন্ন কিছু চেষ্টা করেছে, শর্ট বল বা বাইরে বা লেংথ বল। অনেক ওভার বোলিং করেছে। যাই হোক, এখন আরেকটু ধারাবাহিক হলে ভালো হবে।’
বেসিন রিজার্ভের বাতাসে বেশি কার্যকর হবেন ধারণা করেই হ্যামিল্টন টেস্টে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল মুস্তাফিজকে। এই টেস্টে বাঁহাতি পেসার ফিরেছেন, সেটি নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে কার জায়গায় ফিরবেন একাদশে, সেটি (রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত) নিশ্চিত করেননি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
এদিকে, ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে প্রচণ্ড বাতাস আর ঠাণ্ডায় ভুগতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সেবার ওয়েলিংটনে টেস্ট ছিল জানুয়ারি মাসে, এবার মার্চে। সময়ের তারতম্যের কারণে এবার ওই ভেন্যুতে বেশ মাননসই আবহাওয়া পাওয়ার কথা জানালেন তাইজুল ইসলাম। এমন আবহাওয়া থাকলে বোলার, ব্যাটসম্যান সবার কাছ থেকে ভালো কিছুর আশা দেখছেন তিনি।
২০১৭ সালের সফরে ওয়েলিংটনে একই সঙ্গে সুখস্মৃতি আর আফসোস আছে বাংলাদেশের। প্রথম ইনিংসে সাকিব আল হাসানের ২১৭ আর মুশফিকুর রহিমের ১৫৯ রানে ৫৯৫ রান করে ৫৬ রানের লিডও নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যর্থতাও ওই টেস্টেও হেরেছিল ৭ উইকেটে।
এবার এই মাঠেই দলের আগেরবারের সেরা দুই পারফর্মার সাকিব ও মুশফিককে ছাড়াই নামতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ৫২ রানে হার। দলের চোট সমস্যা মিলিয়ে সুখবর কেবল ওখানকার আবহাওয়ায়। আগেরবারের মতো হাড় কাঁপানো বাতাস নেই। যাতে অনেক আশা দেখছেন তাইজুল, ‘যখন আগে এসেছিলাম তখন আবহাওয়া আলাদা ছিল। এখন গ্রীষ্মের জন্য এই আবহাওয়াটা। তখন বাতাস বেশি ছিল, ঠাণ্ডা ছিল। এই আবহাওয়া থাকলে বোলারদের জন্য ভাল হবে, ব্যাটসম্যানদের জন্যও ভাল হবে। এরকম আবহাওয়ায় অভ্যস্ত, হয়ত এরচেয়ে বেশি ঠাণ্ডা হলেও সমস্যা নাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।