Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কাবিখা-কাবিটা টিআরে নিয়ম-নীতি উপেক্ষিত: লাভবান হচ্ছে সুবিধাপন্থীরা

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৯, ৩:২৭ পিএম

রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সংস্কার এবং উন্নয়নে চলামান কাবিখা-কাবিটা সহ টিআরএর যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে না। নিয়ম আছে কাবিখা-কাবিটা কাজে ডিজাউনশীট নিয়ে কাজ করবেন ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়োজিত প্রকল্প সভাপতি সহ সংশ্লিষ্টরা। তবে এর কোন বালাই নেই। ডিজাউনশীট না নিয়েই ঝটপট করে প্রকল্প পাশ করেই ডিও নিয়ে তা কালোবাজারে বিক্রি করেই প্রকল্প সভাপতি সহ ওই কাজে নিয়োজিতরা কাজ বাস্তবায়ন করেন। দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ম চলে আসছে।

পঞ্চগড় জেলায় এ অবস্থা বিদ্যমান আছে। এছাড়া কাবিখা-কাবিটা কোন কাজেই বাইরের লোক জড়িত হতে পারবেনা,এমন নিয়ম থাকলেও সে নিয়ম পালন হয়না। সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে তড়িঘড়ি করে ডিও বা বিল নিয়েই প্রথম ধাপেই কোনরকম কাজ করেই সটকে পড়েন প্রকল্প সভাপতি ও তার লোকজন জন। প্রকল্প সভাপতি শতভাগ খাদ্য-শস্য বা বিল পেলেও তার অর্ধেক চলে যায় কতিপয় সুবিধাপন্থীর পকেটে। ইউপি সদস্য/সদস্যারা প্রকল্প পেলে ওই শতভাগের ৪০% চলে যায় চেয়ারম্যান/ প্রকল্প সচিব সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পকেটে। সে ক্ষেত্রে কাজের মানের কি হবে এবং ডিজাউনশীট কেমন করে হাতে নিবে প্রকল্প কমিটির সংশ্লিষ্টরা। এ প্রশ্ন রয়ে যায়। মাসে বছরে অডিট, ত্রাণের পরিচালক বা ডাইরেক্টর পরিদর্শনে এসে ভি আই পি হিসেবে থাকা-খাওয়া সহ সব কিছু ম্যানেজ করতে হয়। এসব ওপেন সিক্রেট বিষয়।

রাস্তার কাজে এই সব অর্থ ও খাদ্য শষ্য বরাদ্দের পিছনে থাকে একটি দুষ্টচক্র। আগে-ভাগে তারা কাজের তালিকা নিয়ে নেন চক্রটি। তাদের বিচরন সব জায়গাতেই। সাংবাদিকরা সব প্রকল্পের তালিকা না পেলেও ওই দুষ্ট চক্রটি দপ্তরের সুবিধাপন্থীদের কাছ হতে সংগ্রহ করেন। পরে চলে যান প্রকল্প কমিটির লোকজনের কাছে। তারা প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন/সম্পাদন করে বিল ও চাল/গম ডি ও খাদ্য গুদাম হতে তুলে দিবেন, এমন শর্তে তাদের হাতে একটি নির্ধারিত দর অনুযায়ী হাতের হাতে নগদ অর্থ তুলে দিয়েই চক্রটি বিপুল পরিমান অর্থ তছরুপ করছেন। এ ক্ষেত্রে ওই কাজের মাষ্টারোল কারা দাখিল করেন এবং কিভাবে করেন তা প্রশ্নবিদ্ধ।

রাস্তা-ঘাট মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন করার সময় প্রকল্পের সভাপতি/ সদস্য সচিব বা সর্দার কাউকে পাওয়া যায়না। নিয়ম অনুযায়ী কাজের রাস্তায় একটি প্রকল্প সাউনবোর্ড থাকার সরকারী নিয়ম রয়েছে।ওই সাইনবোর্ডটিতে প্রকল্প নাম, মোট বরাদ্দ, মাটির পরিমান, সর্দারের মুজুরী ও শ্রমিকের হাজিরা থাকার কথা। সেটি এখন আর দেখা যায়না। এদিকে সোল্যার প্যানেলে ও রয়েছে বড় রকমের ঘাপলা। এসব স্যোল্যার প্যানেল সরবরাহের ক্ষেত্রে সোল্যারের ওর্য়াড নিয়ে কারচুপির অভিযোগ। কারচুপিতে জড়িত আছেন প্রকল্পে সংশ্লিষ্টরা। এসব স্যোল্যারে কোম্পানীর লোকজন স্ব-স্ব
অবস্থায় বিল/চেক নিলেও দাপ্তরিক কাজে অনিয়ম আছে বলে অভিযোগ আছে। কোন কোন উপজেলায় প্রকল্প কমিটি বা পি,আই ও নিজেরা লোক নিয়োগ দিয়ে কাবিখা-কাবিটা এবং টিআরের কাজ করান। পরে বিল /ডিও তুলে প্রকল্প সভাপতিকে একটি নির্ধারিত অঙ্কের টাকা হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিল বা ডিও প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে দেওয়ার নয়িম থাকলেও ওই নিযুক্ত শ্রমিক বা ডিও/ চেক ব্যবসায় জড়িতদের হাতে তুলে দেয়া হয়। যা সরকারী নিয়ম-নীতির বহির্ভূত বা চাকুরীবিধিমালা পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে জেলা হিসাব রক্ষক ও খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়তি।
এসব কাবিখা-কাবিটা টি আর প্রকল্পের ডিজাউনশীট (ম্যাপ) না দিয়ে কিভাবে কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘এমন অনিয়ম হয়ে থাকলে আপনারা দেখেন’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টিআর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ