পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
নিমতলি থেকে চকবাজার কতদূর? খুব বেশি দূর নয়। পাশাপাশি মহল্লা। মাঝখানে পুরানো জেলখানা। নিমতলিতে ২০১০ সালের ৩ জুন এক ভয়াবহ অগিকাণ্ডে ১২৪জনের মৃত্যু হয়। ওই অগ্নিকাণ্ডের উৎস ছিল একটি স্টোভ। যে ভবনে স্টোভ থেকে আগুন লাগে সেখানে ছিল কেমিক্যাল ও দাহ্য পর্যায়ের বিপুল মজুদ। স্টোভের আগুন কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে এলে আগুন ভয়ংকর রূপ লাভ করে এবং ওই ১২৪ জনের মুত্য ছাড়াও বহু লোক অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়। ২০১৯ সালে ২০ ফ্রেব্রুয়ারি চকবাজারে অনুরূপ এক অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেই নিখোঁজ। আহত হয়েছে প্রায় দু’শ জন। অগ্নিকাণ্ডের উৎস ও কারণ এখনো সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত হয়নি। এনিয়ে সরকারি মহল থেকে একেকজন একেক কথা বলছে। কেউ বলছে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে, কেউ বলছে ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ থেকে এবং কেউ বলছে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ওয়াহেদ ম্যানশন থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে কেমিক্যালই যে আগুনের দ্রত বিস্তার ও ক্ষতির প্রধান কারণ, তাতে সন্দেহ নেই। ওয়াহেদ ম্যানশন কেমিক্যালের গুদাম হিসাবে পরিচিত ছিল এবং অগ্নিকাণ্ডের পরেও তার বেজমেন্টে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যালের সন্ধান পাওয়া গেছে। অক্ষত অবস্থায় থাকা ওই কেমিক্যালে আগুন লাগলে প্রাণহানি, বিপর্যয় ও ধ্বংসযজ্ঞ যে আরো কতটা ভয়ানক হয়ে উঠতে পারতো, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
পুরানো ঢাকায় অগ্নিকাণ্ড এবং প্রাণহানি নতুন না হলেও নিমতলি ট্রাজেডির পর এটা সকলের কাছেই প্রতীয়মান হয়, অরক্ষিত, অবৈধ কেমিক্যাল গুদাম, কারখানা ও দোকান কার্যত একেকটি মৃত্যুকূপ। ঘনবসতিপূর্ণ পুরানো ঢাকার সরু রাস্তা ও অলিগলিতে অবস্থিত ভবনে কেমিক্যাল গুদাম, কারখানা ও দোকান শত শত নয়, হাজারে হাজার। তখনই এই মর্মে জনমত প্রবল হয়, পুরানো ঢাকাকে নিরাপদ এবং ধ্বংস ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে এসব গুদাম, কারখানা ও দোকান অবিলম্বে সরিয়ে দিতে হবে। এগুলোকে অন্য কোনো নিরাপদ এলাকায় রিলোকেড করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা ও মৃত্যুর আশংকা দূর করতে এর বিকল্প নেই। অত্যন্ত দু:খজনক হলেও বলতে হচ্ছে, জনমত অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গত প্রায় ১০ বছরে নেয়া হয়নি। এই সময়ে কেমিক্যালের গুদাম, কারখানা ও দোকান আরও বেড়েছে। এখন বলা হচ্ছে, এদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ হাজারের মত।
নিমতলি ট্রাজেডির পর হাইকোর্ট একটি রুল ও নির্দেশনা প্রদান করেন। নিমতলির অগ্নিকাণ্ডের কারণ শনাক্ত করে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে বলেন। একই সঙ্গে একটি টান্সফোর্সের মাধ্যমে কেমিক্যাল বা দাহ্য পদার্থের গুদাম, কারখানা ও দোকান খুঁজে বের করে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দানের নির্দেশনা দেন। বিস্ময়কর হলেও সত্য, সরকার হাইকোর্টের এই রুল ও নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোনো গরজই দেখায়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে তখন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকেও অন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু তারপর কী হলো, কেউ জানতে পারেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তরফে গঠিত কমিটি, যতদূর জানা, বেশ কিছু সুপারিশ পেশ করে। ওই সুপারিশের প্রথম দফায় ছিল, পুরানো ঢাকাসহ আবাসিক এলাকাগুলো থেকে কেমিক্যাল গুদাম, কারখানা ও দোকান সরিয়ে দিতে হবে। অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে ছিল, পুরানো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশের সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ ও অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। কেমিক্যাল বা এসিড জাতীয় দাহ্য পদার্থ বিক্রির দোকান ও বিক্রির লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো সতর্ক হতে হবে। এসব দাহ্য পদার্থ বিক্রি ও রক্ষণাবেক্ষণে পৃথক শিল্প এলাকা স্থাপন করতে হবে। এছাড়া অগ্নিবিস্তার রোধে ওয়াসার লাইনে ফায়ার সার্ভিসের জন্য হাইড্রেন্ট পয়েন্ট রাখা, সম্ভাব্য দুর্ঘটনা রোধে প্রতিমাসে একবার ট্রান্সফরমার পরীক্ষা করা, সব ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলায় জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন, অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি সুপারিশে ছিল। এত বছরেও এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, সরকার ইতোমধ্যে পুরানো ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গুদাম ও দোকান সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রয়োজনে পুরানা ঢাকাকে নতুন করে গড়ে তোলা হবে। বলা বাহুল্য, এসব কথা, প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার এখনো কথার কথাই হয়ে আছে। পুরানো ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম, কারখানা ও দোকান কেরানীগঞ্জের একটি এলাকায় সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। জমি অধিগ্রহণই নাকি হয়নি। আর কত দিনে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে এবং এজন্য আর কত মানুষের প্রাণ দিতে হবে, সেটাই প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকদের মতে, নিমতলি ট্রাজেডির পর জনমত ও বিভিন্ন সুপারিশ অনুযায়ী কার্যব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ড, মানবিক বিপর্যয় ও ধ্বংসাযজ্ঞ ঘটতে পারতো না। লক্ষ্য করার বিষয়, নিমতলি ট্রাজেডির পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রমুখ যে ধরনের কথা বলেছিলেন, যেসব প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন এখনকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীবৃন্দ এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হুবহু প্রায় সেই ধরনের কথা ও সেই সব প্রতিশ্রুতি-অঙ্গীকারই ব্যক্ত করেছেন। লোক বদল হয়েছে, কথা, প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার বদল হয়নি।
নিমতলি ট্রাজেডির পর চকবাজার ট্রাজেডি মানুষের বোধশক্তিকে রীতিমত অসাড় করে দিয়েছে। জীবন্ত মানুষের নিমিষেই কয়লা হয়ে যাওয়া, হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ-আহতদের বাঁচার আকুতি, স্বজনদের হাহাকার, সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধ্বস্ত চিত্র-কোনো কিছুই দেখা যায় না, সহ্য করা যায় না। প্রশ্ন উঠেছে, এই মানবিক বিপর্যয়, এই শত শত মানুষের হতাহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনার জন্য দায়ী কে বা কারা? অনেকেই বলছেন, এটা একটা সম্মিলিত ব্যর্থতার ফল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, শিল্পমন্ত্রণালয়, বাণিজ্যমন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, রাজউক এই মৃত্যু ও ক্ষতির দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। যেহেতু এসব মন্ত্রণালয় সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সরকারের অংশ, সুতরাং চূড়ান্ত বিচারে এর দায় সরকারের ওপরই বর্তায়। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের। যেখানে বা যেক্ষেত্রেই নিরাপত্তার ঝুঁকি আছে সেখানেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে নেয়া এই মন্ত্রণালয় ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। অগ্নিঝুঁকির বিষয়ে তার নিরব থাকার সুযোগ নেই। বিভিন্ন কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ প্রধানত আমদানী করা হয়। এর দায়িত্ব বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের। এসব কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ কোনো না কোনো শিল্পে ব্যবহৃত হয়। কাজেই, এক্ষেত্রে শিল্পমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতাও রয়েছে। ব্যবসার লাইসেন্স দিয়ে থাকে সিটি কর্পোরেশন। ভবন নির্মাণের অনুমোদন ও দেখভাল করার দায়িত্ব রাজউকের। কর্তৃপক্ষীয় সূত্র থেকে জানা গেছে। পুরানো ঢাকার শতকরা ৯৮ ভাগ কেমিক্যাল গুদাম অবৈধ, যাদের কোনো লাইসেন্স নেই। কিভাবে এসব লাইসেন্সবিহীন গুদাম গড়ে উঠলো? কেমিক্যাল কারখানা ও দোকান কি সবই বৈধ? তাও বলা যাবে না। অভিযোগ রয়েছে, পুরানো ঢাকার বাড়িঘর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যথাযথ অনুমোদন নেয়া হয় না। ১১টি ওয়ার্ডের ২৪ হাজার বাড়ি ঘরের ওপর সমীক্ষা করে দেখা গেছে, অধিকাংশেরই রাজউকের অনুমোদন নেই। বুয়েটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ ভবনেই রয়েছে কেমিক্যালের মজুদ।
পুরানো ঢাকার সংশ্লিষ্ট এলাকার চিত্রটি কমবেশি আমরা অনেকেই জানি। সদরঘাট থেকে চকবাজার এবং চকবাজার থেকে লালবাগ পর্যন্ত চলে গেছে প্রধান সড়ক। এ সড়কও তুলনামূলকভাবে অপ্রশস্ত। এর দু’পাশে অসংখ্য গলি শিরা-উপশিরার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে। আবাসিক হলেও কার্যত গোটা এলাকা বাণিজ্যিক এলাকা হিসাবে পরিচিত। বলা হয়, এমন কোনো জিনিস নেই যা এই এলাকায় পাওয়া যায়না। হোলসেলের দোকান ছাড়াও অসংখ্য খুচরা দোকান এখানে রয়েছে। রয়েছে নানা পণ্যের গুদাম ও বিভিন্ন কারখানা। রাতদিন গোটা এলাকা লোকসমাগমে মুখর থাকে। যানজট প্রায় নিত্য বাস্তবতা। এরকম একটি এলাকায় অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটলে আর কোনো উপায় থাকে না। অগ্নিনির্বাপবদলের এই এলাকায় অলিগলিতে ঢোকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাছাড়া পর্যাপ্ত পানির সংস্থানও এলাকায় নেই। চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় এটা বিশেষভাবে লক্ষ্য করা গেছে। আমরা সুযোগ পেলেই উন্নয়নের কথা বলি, বড় বড় মেগা প্রকল্পের কথা বলে কৃতিত্ব জাহির করি; কিন্তু পুরানো ঢাকার পুর্ণগঠন ও নিরাপত্তায় কোনো প্রকল্প ও কার্যব্যবস্থা নিতে দেখিনা। এখন বলা হচ্ছে, পুরানো ঢাকার লাখ লাখ লোক বোমার সঙ্গে, মৃত্যুর আশংকার মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের এই মৃতুকূপ থেকে উদ্ধার করার, নিরাপদে নির্ভয়ে ও সচ্ছন্দে বসবাস করার ব্যবস্থা আমরা এখনো করে দিতে পারিনি। এ ব্যর্থতা কি আমাদের রাষ্ট্র ও সরকারের বড় ব্যর্থতা নয়?
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চকবাজার ট্রাজেডির জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। তথ্যমন্ত্রী তার প্রতিবাদ করেছেন। এমন কি, ওই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না তা খতিয়ে দেখার তাকিদ দিয়েছেন। আমরা অত্যন্ত দু:খের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, এতবড় একটি দুর্ঘটনা ও মানবিক বিপর্যয় নিয়েও ‘রাজনীতি’ হচ্ছে। নিমতলি ট্রাজেডির পর যেসব সুপারিশ এসেছিল তা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব ছিল সরকারের। তখন যে সরকার ও প্রশাসন ক্ষমতায় ছিল, এখনো সেই সরকার ও প্রশাসনই ক্ষমতায় আছে। ওই সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে না পারা কি সরকারের ব্যর্থতা নয়? বিরোধী দলের নেতাদের এ ব্যর্থতার কথা বললেই হবে না, কীভাবে ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা যায়, সে ব্যপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও সরকারকে দেয়া উচিৎ। সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা উচিৎ এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করার জন্য। পক্ষান্তরে বিরোধীদলের কোনো নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানোই কোনো মন্ত্রীর কর্তব্য হওয়া উচিৎ নয়। এতে দায় এড়ানো যায় না। উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা বাঞ্ছনীয় নয়। এব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অনেক বেশী সেনসিবল। তিনি বলেছেন, চকবাজার ট্রাজেডির দায় সরকার এড়িয়ে যেতে পারে না। দায় স্বীকার একারণে ইতিবাচক যে, সরকার অত:পর ব্যর্থতা মোচনে এবং দায়িত্ববোধ থেকে সক্রিয় ও তৎপর হবে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার বসে নেই।
আমরাও মনে করি, সরকারের বসে থাকার সময় এটা নয়। সরকারকে অবশ্যই মৃত্যুর উপত্যকায় পরিণত হওয়া পুরানো ঢাকাকে বাঁচাতে হবে। বোমার সঙ্গে বসবাসের যে বাস্তবতা সেখানে বিরাজ করছে তা থেকে সেখানকার অধিবাসীদের মুক্ত করার ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের প্রস্তাব: পুরানো ঢাকার সকল কেমিক্যাল গুদাম, কারখানা ও দোকান এখনই সিলগালা করে দিতে হবে। যেহেতু এর সঙ্গে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা, ব্যবসা, শিল্প অর্থাৎ অর্থনীতির একটা বড় অধ্যায়ের সম্পর্ক রয়েছে। কাজেই, যতদ্রুত সম্ভব এইসব গুদাম, কারখানা ও দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে বা রিলোকেট করতে হবে। কেরানীগঞ্জে কেমিক্যাল পল্লী করার যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে যত বৈধাবৈধ্য গুদাম, কারখানা ও দোকান রয়েছে তা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে এবং অবৈধ গুদাম, কারখানা ও দোকানের মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। যাদের ছত্রচ্ছায়ায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় এসব অবৈধ গুদাম, কারখানা ও দোকান গড়ে উঠেছে ও টিকে আছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিল্ডিং কোড অমান্য করে যেসব ভবন গড়ে উঠেছে সেসব ভবন ভেঙ্গে দিতে হবে এবং তার মালিকদের বিরুদ্ধে যথোচিত ব্যবস্থা নিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এসব দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের ছিল তাদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার জন্য প্রতিষ্ঠানিক ও আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোসরি পুরানো ঢাকা পুর্ণগঠন ও পুননির্মণের ব্যাপারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, পরিবেশ ও নাগরিক সুবিধাদি এমনভাবে পুর্নবিন্যাস করতে হবে যাতে এখানে বসবাসকারীরা নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।