পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা চালিয়ে যেতে ২০১৯ সালের জন্য জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান ( জেআরপি) প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। যৌথ এ কর্মপরিকল্পনায় ভাসানচরকে অন্তর্ভুক্ত করেনি জাতিসংঘ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ভাসানচরকে জেআরপিতে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু সে আহবানে সাড়া দেয় জাতিসংঘ।
জেআরপি ২০১৯-এ ভাসানচর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ভাসানচরকে ১০ লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সম্ভাব্য স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে ভিড়ের চাপ কমাতে ভাসানচরে তাদের স্থানান্তরের জন্য সরকার প্রস্তাবও দিয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। জাতিসংঘ ভাসানচরের নিরাপত্তা, উপযুক্ততা এবং কমনীয়তার নিশ্চয়তা চেয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সেবার সহজলভ্যতা, পরিবেশ ও আর্থসামাজিক স্থিতিশীলতা বিবেচনায় সুরক্ষারও নিশ্চয়তা চেয়েছে জাতিসংঘ। এ পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে স্বচ্ছ আলোচনার মাধ্যমে তাদের উদ্বেগ হ্রাস করা এবং স্থানান্তর প্রক্রিয়া সহজীকরণ জরুরি বলে বলছে জাতিসংঘ। এসব মতামত উল্লেখ থাকলেও জেআরপি ২০১৯-এ ভাসানচর নিয়ে কোনো পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের ২০১৯ সালের ত্রাণ ও অন্যান্য চাহিদা পূরণে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান তৈরি করেছে জাতিসংঘ। জেআরপি তৈরি হয় সংশ্লিষ্ট সবার মতের ভিত্তিতে। যেহেতু বাংলাদেশের নেতৃত্বে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কাজ করছে, তাই বাংলাদেশের মতামত এখানে গুরুত্বপূর্ণ। জেআরপি খসড়া থাকাবস্থায় বাংলাদেশ এ দলিলে ভাসানচরকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছে, যাতে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করা হলে আগে থেকে সব সুযোগ-সুবিধা তৈরি থাকে। তবে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্টরা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে নেই। এজন্য জেআরপিতে ভাসানচরের উল্লেখে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ সুরক্ষা চেয়েছে সংস্থাটি।
কূটনীতিকদের মতে, পূর্ণ সুরক্ষার বিষয়টিতে অনেক কিছু জড়িত। এক্ষেত্রে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, নিরাপত্তা, কাজের অধিকারসহ অন্য বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা চেয়েছে, যা একজন শরণার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর রোহিঙ্গাদের পূর্ণ শরণার্থীর স্বীকৃতি বা সুরক্ষা দিতে নারাজ বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, জেআরপি মূলত জাতিসংঘ তৈরি করে। এতে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত চাওয়া হয় এবং চাহিদার বিষয়গুলো জানতে চাওয়া হয়। ফলে বাংলাদেশেরও ভূমিকা থাকে। বাংলাদেশ চাইছে ভাসানচর যাতে জেআরপিতে থাকে। তাহলে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেখানে তাদের সেবা নিয়ে যাবে। কারণ বাংলাদেশের একার পক্ষে পুরো বিষয়টি ব্যবস্থাপনা করা কঠিন।
জেআরপিতে না থাকায় ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর অনিশ্চিত হয়ে পড়ল কিনা? বাংলাদেশ কি দাতা সংস্থাগুলোকে ছাড়াই এগিয়ে যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, একদমই নয়। বাংলাদেশ তাদের সঙ্গেই এগিয়ে যাবে। এর জন্য একটি প্রক্রিয়া দরকার। একটি যৌথ দল কাজ করবে।
সূত্র জানায়, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রশ্নে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের মতভিন্নতা রয়েছে। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, জেনে-শুনে ভাসানচরে যেতে চাইলেই কেবল তাদের স্থানান্তর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থার বিশেষ দূত ইয়াং হি লি রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য পাঠানোর আগে কারিগরি ও মানবিক বিষয়াদি নিয়ে পরিপূর্ণ সমীক্ষার জন্য জাতিসংঘকে অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি কাঠামোগত বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছার আগে কোনো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে না পাঠানোর তাগিদ দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।