Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নদীভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

অবশেষে কির্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টসহ মহানগরীর উত্তর প্রান্তের বিশাল এলাকার ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম শুরু করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। এ কাজে ব্যয় হবে প্রায় ২১০ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে কির্তনখোলা নদীর তীর রক্ষা ও ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন খুলনা শিপইয়ার্ড।
জানা গেছে, ২০১৭-এর নভেম্বরে ৩৩১কোটি টাকার ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পটি একনেক-এর চ‚ড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। পানি স¤পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল(অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম গত শনিবার বরিশাল মহানগরীর চরবাড়ীয়া এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্রয় নীতিমালার আওতায় ডিপিএম পদ্ধতিতে নৌবাহিনীর পক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ড আগামী বছরের ২এপ্রিলের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। গত মাসেই এলক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে খুলনা শিপইয়ার্ডের ২০৯ কোটি টাকার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২০-এর ৩০জুন পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে খুলনা শিপইয়ার্ড শরিয়তপুরের নড়িয়াতেও সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যায়ে ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পের আওতায় আগামী বর্ষার আগেই বরিশাল মহানগরীর উত্তর প্রন্তের বেলতলায় সিটি করপোরেশনের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে পুরো চরবাড়ীয়ার ৩ হাজার ৩৬৬ মিটার এলাকায় প্রায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে প্রাথমিকভাবে ভাঙন প্রতিরোধ করা হবে। পাশাপাশি ৩৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ এবং সমপরিমান উচ্চতার ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৬২৪টি সিসি ব্লক, ৪৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ এবং ৩০ সেন্টিমিটার উচ্চতার আরো এক লাখ ১৯ হাজার ৩৬৬টি সিসি ব্লক এবং ৪৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ এবং সমপরিমান উচ্চতার আরো ৫৬ হাজার ৩২টি সিসি ব্লক কির্তনখোলার ভাঙন কবলিত এলাকায় সন্নিবেশ করা হবে বলে জানা গেছে।
আগামী ১৫মার্চ থেকে প্রকল্প এলাকায় এসব সিসি ব্লক তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা শিপইয়ার্ডের জিএম নকশা ও পরকিল্পনা-ক্যাপ্টেন ফারুক-বিএন। তবে প্রাথমিকভাবে ১হাজার ২৫০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্য ও ১ হাজার মিলিমিটার প্রস্থ প্রায় ৪ লাখ ৮৫ হাজার জিও ব্যাগ ভাঙন কবলিত এলাকায় ডাম্পিং করার পরেই তার ওপর বিভিন্ন মাপের সিসি বল্ক প্লেসমেন্ট –এর কার্যক্রম শুরু হবে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল প্রকৌশলী।
প্রকল্পের আওতায় ভাঙন কবলিত এলাকার বিপরীত দিকে জেগে ওঠা বিশাল চরটির লুপ কাটিং করেও কির্তনখোলা নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় কির্তনখোলা নদীর পশুরীকাঠির পশ্চিম প্রান্তে জেগে ওঠা চরটির ৫ হাজার ৬শ মিটার ড্রেজিং করে গতিপথ পরিবর্তন করারও পরিকল্পনা রয়েছে ।
তবে মূল ডিপিপিতে ৩৩১কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ৫১০ মিটার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কথা থাকলেও খুলনা শিপইয়ার্ডকে প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার ৩৬৬ মিটার এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। বাস্তবতার আলোকে ড্রেজিং কাজ কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় ডিপিপি সংশোধন করে অনুমোদিত অর্থের মধ্যেই ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম ৪ হাজার ৫১০ মিটারেই বর্ধিত করা হবে বলে জানা গেছে। ডিপিপি সংশোধনের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২০-এর বর্ষা মৌশুমের শুরুতেই কির্তনখোলার নদী ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও খুলনা শিপইয়ার্ডের প্রকৌশলীরা। ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন হলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ছাড়াও চড় বাড়িয়ার বিশাল জনপদ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি গত দুই দশকে বরিশালে গড়ে ওঠা বিশাল নৌযান শিল্পের ডকইয়ার্ডগুলোও নদী ভাঙনের ঝুঁকিমুক্ত হবে বলে আশা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিপইয়ার্ড

২১ নভেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ