Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পায়রায় বিশ্বমানের শিপইয়ার্ড

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

বিশ্বমানের শিপইয়ার্ড স্থাপন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর এলাকায় নির্মিত হবে এ শিপইয়ার্ড। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। যার পুরোটাই আসবে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) মাধ্যমে। এ জন্য সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেন্টিয়াম সলিউশনস্ এবং ডাচ প্রতিষ্ঠান ডামেন শিপইয়ার্ডস গ্রুপ যৌথভাবে প্রকল্পটিতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে এটিই হবে সর্বোচ্চ সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ। গতকাল শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের কাছে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্ণাঙ্গ ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি রিপোর্ট উপস্থাপন ও হস্তান্তর করে।
এর আগে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি) এবং জেন্টিয়াম ও ডামেন-এর মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ‘ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি ফর ডেভেলপিং এ ওয়ার্ল্ড ক্লাস শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড শিপ রিপেয়ার ফ্যাসিলিটি (ডব্লিউসিএসবিএফ) ইন দ্যা পটুয়াখালী ডিস্ট্রিক্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম শেষ করা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন জেন্টিয়াম সলিউশনসের উপদেষ্টা বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব মো. কায়কোবাদ হোসেন এবং ডামেন গ্রুপের নেভাল প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন পরিচালক ইফ ভ্যান ডেন ব্রোয়েক ও ডামেন শিপইয়ার্ডসের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক রাবিয়েন বাহাদুর। এ সময় শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, জেন্টিয়ামের সহ-উপদেষ্টা অতিরিক্ত সচিব (অব.) ড. সাইদুর রহমান সেলিম, জেন্টিয়ামের কারিগরি প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফায়েজুল আমীন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের নিকটবর্তী এলাকায় একটি জাহাজ নির্মাণ কারখানা স্থাপন কার্যক্রম হলো প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত একটি প্রকল্প। ২০১৪ সালে পটুয়াখালী সফরের সময় তিনি এখানে একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৫ সালে শিল্প মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে তিনি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয় এটিকে তাদের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এ সময় সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেন্টিয়াম সলিউশনস এবং ডাচ প্রতিষ্ঠান ডামেন শিপইয়ার্ডস গ্রুপ বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আসলে বিএসইসির সঙ্গে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে কোম্পানি দুটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সমঝোতা স্মারক সই হয়। পায়রা বন্দরসংলগ্ন এলাকায় এ প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রায় ১০১ একর জমির সংস্থান করে রেখেছে। এ সময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ‘জাহাজ ক্রেতা জাতি’ থেকে ‘জাহাজ নির্মাণকারী জাতি’ হতে চায়। প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর এলাকায় জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ মেরামত শিল্প গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি চূড়ান্ত হলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয় বা বিএসইসি পায়রা বন্দরসংলগ্ন এলাকায় জমির সংস্থান করবে এবং বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ কারখানা স্থাপনে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে। বিনিয়োগে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে প্রচুর শ্রমিকের দরকার হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথম পর্যায়ে আঞ্চলিক ও স্থানীয় প্রায় দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। জেন্টিয়াম-ডামেনের মতো বিশেষায়িত কোম্পানির সঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশের শ্রমিকরা তাদের দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ পাবে।
উন্নত বিশ্বের প্রযুক্তি বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হবে। এর মাধ্যমে তারা দেশে ব্যবহারের জন্য এবং দেশের বাইরে রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উচ্চমানের জাহাজ নির্মাণ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। আমদানি বিকল্প জাহাজ তৈরি করে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশ্বমানের জাহাজ সরবরাহ করবে। সর্বোপরি বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম জাহাজ নির্মাণ করতে বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক সাপ্লাই চেইন উন্নয়নে তারা ভূমিকা রাখবে।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পায়রায় বিশ্বমানের শিপইয়ার্ড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ