পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। ঢাক-ঢোল-কাঁসর ও শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন পূজামন্ডপ। শাস্ত্রমতে, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী দেবীর আরাধনা করেন। পূজা উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্রবসনা। দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এজন্য তাকে বীণাপানিও বলা হয়। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জ্ঞান ও বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী তার আশীর্বাদের মাধ্যমে মানুষের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করতে প্রতি বছর আবির্ভূত হন ভক্তদের মাঝে। শিক্ষার্থীরাই এই পূজায় মনোযোগী হয়। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঘরে ঘরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়। ঢাকায় বিভিন্ন এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজার আয়োজন হলেও সরস্বতী পূজার প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল মাঠ। বিস্তীর্ণ এই মাঠজুড়ে সরস্বতী পূজা চমৎকার এক উৎসবে পরিণত হয়। ঢাবি প্রতিনিধি জানান, কেন্দ্রীয় উপাসনালয় ও চারুকলার মন্ডপসহ এ বছর হলের মাঠে প্রায় ৬৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজামন্ডপগুলোর মূল আকর্ষণ ছিল শিক্ষার্থীদের নির্মিত প্রতিমা। এ বছর হলের পুকুরের মাঝখানে নির্মিত হয়েছে প্রায় ৪৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমা। জগন্নাথ হল ছাড়াও বর্ণিল সাজে সাজানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, কুয়েত মৈত্রী হল, শামসুন্নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হল। এই পাঁচটি ছাত্রী হলে সকাল ৯টায় পূজা আরম্ভ হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর ফলে হল প্রাঙ্গণে পূজা অর্চনার পাশাপাশি আনন্দে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা। সেখানে শিশুদের খেলার জন্য ছিল নানা আয়োজন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজার বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে পদবীর আরাধনা হয়। ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় পূজা আরম্ভ হয়। ৯টায় হাতেখড়ি, সাড়ে ১২টায় পুষ্পাঞ্জলি, ১২টা ১৫ মিনিটে হোম, ১টায় ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যায় আরাত্রিক ও ভজন সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা। আজ সোমবারও রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। হাটখোলা রোডস্থ প্রভু জগদ্বন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় বাণী অর্চনা, প্রসাদ বিতরণ এবং বিকাল ৪টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় পূজা কমিটির উদ্যোগে উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে পুরাতন ঢাকায় সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই পূজা উৎসব পালিত হয় পুরান ঢাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। এবার পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩৪টি পূজামন্ডপ স্থাপন করা হয়। পূজামন্ডপে সকাল ৯টার দিকে শুরু হয় বাণী অর্চনা। এরপর ভক্তরা দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেন। এ সময় ভক্তদের মাঝে অঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সরস্বতী পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পূজা উদযাপিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক সংলগ্ন সার্বজনীন এই উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রো ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সিকদার, প্রো ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, প্রো ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, সরস্বতী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, সাধারণ সম্পাদক ডা. দেবতোষ চন্দ্র পাল প্রমুখ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।