পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে যেসব সা¤প্রদায়িক (হিন্দু ধর্মাবলম্বী) হামলার ঘটনা ঘটছে, তা পূর্বপরিকল্পিত। এ জন্য রাষ্ট্র দায়ী। সরকার বা রাষ্ট্র কোনোভাবেই এর দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। সা¤প্রদায়িকতা বা সা¤প্রদায়িক হামলাকে যত দিন পর্যন্ত রাষ্ট্র ও প্রশাসন স্বীকার না করবে, তত দিন পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে
যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘সা¤প্রদায়িকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এই বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ।
সা¤প্রদায়িক হামলার পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার, ১৯৭২ সালের সংবিধানের পূর্ণ বাস্তবায়ন, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনকে ক্রিয়াশীল করার মাধ্যমে সা¤প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেওয়া এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ সব নাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, যতগুলো ঘটনা ঘটছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় বিচ্ছিন্ন ঘটনা। অথচ কোনোটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সবই একসূত্রে গাঁথা। এই সত্যটা রাষ্ট্র বা প্রশাসন কবে স্বীকার করে নেবে? যত দিন পর্যন্ত স্বীকার করবে না, তত দিন পর্যন্ত যথাযথ প্রতিষেধক ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব নয়।
সা¤প্রদায়িকতাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সমাজ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর নানা ধরনের নির্যাতনের পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনা ঘটার আগে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।
সা¤প্রদায়িক হামলার সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের ভ‚মিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, সা¤প্রদায়িক ঘটনার সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে।
আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, সা¤প্রদায়িক সংকট সমাধানে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। রাষ্ট্রকে জাতিগত ও ধর্মীয় অন্যান্য স¤প্রদায়কে স্বীকৃতি দিতে হবে। তা নাহলে সংকটের সমাধান হবে না। অথচ সা¤প্রদায়িক হামলায় রাষ্ট্রকে দুঃখ প্রকাশ করতেও দেখা যায় না।
মধ্যবিত্তের আবেগ ও চৈতন্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন সাংবাদিক আবেদ খান। সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, রাজনীতি ঠিক না হলে সমাজ ঠিক হবে না। সা¤প্রদায়িক শক্তি দলে ঢুকে গেছে। বাম দল দুর্বল হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ পথ হারিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক। তিনি বলেন, ধর্ম অবমাননার নামে এ দেশে হিন্দুশ‚ন্য করার প্রক্রিয়া চলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে এই দেশ টিকে থাকতে পারবে না। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, পরিকল্পিত সা¤প্রদায়িক হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রয়েছে। সা¤প্রদায়িক ঘটনার শেষ কবে হবে, আমরা কেউ কি বলতে পারি?
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাংবাদিক আবেদ খান, স¤প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।