Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলনের মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে

প্রতিবাদ সভায় বিএনপি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দলকে পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন করতে চান। দলকে পূর্ণগঠন করে দ্রুত খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে নামবে বিএনপি। নেতারা মনে করেন দল পুর্নগঠন করে জোরদার আন্দোলনের মাধ্যমে চেয়ারপার্সনকে মুক্ত করে আনা সম্ভব। আন্দোলন ছাড়া চেয়ারপার্সনের মুক্তি সম্ভব নয় বলে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছে। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় দেয়া বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা একথা বলেন।
‘গণতন্ত্রের মা বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং দেশব্যাপী বিএনপির বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে’ বিএনপি এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে । একই দাবিতে আজ রাজধানী ছাড়া সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে জেলা ইউনিটগুলো। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, এজেডেএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের যেসকল অঙ্গসংগঠন-সহযোগী সংগঠনে যেসব দুর্বলতা আছে তা অতিদ্রুত সংশোধন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করে কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে দ্রুত আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা বলতে চাই, অতীতেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছি। আমরা অনেকের সাথে একমত শুধু দাবি চাওয়ার মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন মাদার অব ডেমোক্রেসি। এই গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে তার আগে তাকে মুক্ত করতে হবে। সেই মুক্তির জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যভাবে, সুসংগঠিতভাবে সাহস নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াবো এই প্রত্যাশা আমরা আজকে করছি।
খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে, এই যে নিম্নতম আদালতে তাদের সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকার কারনে আমি মনে করি এবং আমরা অনেকে মনে করি যে, আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি অর্জন করা সম্ভবপর হবে না। আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। যদি আপনারা বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে চান তাহলে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিন। এছাড়া অন্যকোনো বিকল্প নাই।
গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সাজায় পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
মওদুদ আহমদ বলেন, আমি মনে করি, আন্দোলন করতে হলে সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। সংগঠন যদি শক্তিশালী করতে হয় আজকে নেতা-কর্মী গত ১০ বছর জেলে খেটেছে, তাদের বাড়ি-ঘর পুঁড়িয়েছে, দোকান-পাঠ দখল করেছে, তাদের পুকুরে মাছ নিয়ে গেছে, তাদের জমির ফসল নিয়ে গেছে, তাদের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, নির্বাচনের সময়ে গায়েবী মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে নিগৃহীত করেছে তাদেরকে পূর্ণবাসন করতে হবে। তাদের ভেতরে যে হতাশা তা তুলে নিয়ে আসতে হবে। তাদের ভেতরে আস্থা এবং বিশ্বাস জন্মাতে হবে যাতে করে আমরা আবার নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পারি।
তিনি বলেন, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই মিলে যে দলকে আমরা ভালোবাসি, যে নেত্রীর জন্য আজকে আমরা সভা করছি। আমাদের পর্যায়ে মাথা হেট হয়ে যায় যে, এতো বড় একটা আমাদের সংগঠন, এতো বড় জনসমর্থন, সেই দলের নেত্রী তিন বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন সেই দলের নেত্রী আজকে একবছর যাবত জেলখানায় আছেন- এটা ভাবতেও চোখের পানি চলে আসে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছে রাজনৈতিক একটি মিথ্যা মামলায়। রাজনৈতিক মামলার আইনের মাধ্যমের ফয়সালা হবে না। রাজপথের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নাই। আসুন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা শপথ গ্রহণ করি আমরা রাজনৈতিকভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব।
পেশাজীবী নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ও সরকারের ষড়যন্ত্রে বেগম খালেদা জিয়া একবছর যাবত কারাগারে বন্দি হয়ে আছেন। আজকে বিচার বিভাগ ও বিচারকের কাছে সুবিচার চাওয়া বাতুলতা মাত্র। আমি বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে বলতে চাই, আজকে মাসের ৮ তারিখ। বাকী ১৮দিন আছে। আমি প্রস্তাব করতে চাই, ১৮ দিনের মধ্যে প্রতিদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করে আল্লাহর কাছে বলুন, এই জালেমের কাছ থেকে দেশকে রক্ষা করো, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করো।
সভাপতির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নেত্রী সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী এক বছর কারাগারে, আমরা তাকে মুক্ত করতে পারি নাই-এটা আমাদের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দ্বায়ভার নিয়েও আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। দুর্বার আন্দোলন তৈরি করে তার মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ তিনি আমাদের দিকে চেয়ে আছেন।
দলের প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী, সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আালীমের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, শ্রমিক দলের নুরুল ইসলাম নাসিম, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্র দলের আকরামুল হাসান বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ