Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআইয়ের হানা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে নজিরবিহীন ভাবে সিবিআই হানা নিয়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নাটকীয় পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। সিবিআইয়ের ডিএসপির নেতৃত্বে ৪০ জনের একটি দল কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে লাউডন স্ট্রীটে পুলিশ কমিশনারকে জেরা করতে তার বাড়ির সামনে এসেছিলেন। সেখানে পুলিশ আধিকারিকরা তাদের বাধা দেয়। সিবিআইয়ের কাছে প্রযোজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়েছিল। 

সিবিআই অফিসারা জানিয়েছেন, তাদের কাছে প্রযোজনীয় তথ্য রয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই কলকাতা পুলিশের উচ্চ আধিকারিকরা সিবিআই আফিসারদের আটক করে সেক্সপীয়র রোড থানায় নিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। একপর্যায়ে সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের রীতিমত ধস্তাধস্তি হয়েছে। বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে, সিবিআই অফিসারদের মুক্ত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী যে কোনও সময় আসরে নামতে পারে।
সিবিআই অফিসারদের থানায় নিয়ে যাওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজীব কুমারের বাড়িতে গিয়েছেন। সেখানে কয়েকজন সিনিয়র আইপিএস অফিসারও রয়েছেন বলে জানা গেছে। মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতি মোকাবিলার পরবর্তী কৌশল ঠিক করা নিয়ে বৈঠক চলছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিনই সকালে টুইট করে রাজীব কুমারকে নিয়ে মিডিয়ায় প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর খবরের ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির সমালোচনা করে রাজীব কুমারকে বিশ্বের একজন সৎ ও সাহসী অফিসার বলে বর্ণনা করেছেন।
অন্যদিকে এদিন বিকেলে সিবিআই আধিকারিকরা লাউডন স্ট্রিটে পৌঁছানোর ঠিক এক ঘণ্টা আগেই লালবাজারে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে বসে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (১) জাভেদ শামিম বলেছেন, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের খবর ভুয়া। যারা এই খবর ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর এক ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ কমিশনারের সিবিআই হানা দেয়ায় অনেককেই অবাক করেছে। গত শনিবার থেকে জল্পনা চলছিল যে সারদা এবং রোজভ্যালি চিট ফান্ড মামলায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে জেরা করতে চায় সিবিআই। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সিবিআই সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছিল, সিবিআই অফিসারদের তরফে তাদের জানানো হয়েছে, রাজীব কুমারকে একাধিক বার হাজিরার জন্য নোটিস পাঠানো হলেও তিনি আসেননি। সর্বশেষ উপায় হিসেবে গ্রেফতারের মতো চ‚ড়ান্ত পদক্ষেপের সংস্থান আছে বলেও ওই অফিসারেরা ওই সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন। এদিকে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের সদর দপ্তরের সামনে গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছেন রাজ্য পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। এছাড়া নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের আরেকটি অফিস এলাকা এবং কোল ইন্ডিয়ার গেস্ট হাউসে সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টরের বাড়ির সামনেও কড়া পুলিশ প্রহরা মজুত করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, যাতে নতুন করে কোনও সিবিআই আধিকারিক ঘটনাস্থলে যেতে না পারেন সেজন্যেই এই সিদ্ধান্ত।
জানা গেছে, সারদা চিটফান্ডের মামলায় আটক দেবযানি মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে সিবিআই আধিকারিকরা জানতে পারেন সংস্থার মিডল্যান্ড পার্কের অফিস থেকে একটি লাল ডায়েরি এবং পেন ড্রাইভ অভিযানের সময় বাজেয়াপ্ত করেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তভার হস্তান্তরের সময় সেই ডায়েরি এবং পেন ড্রাইভ দেওয়া হয় নি। কোথায় গেল সেগুলি? তদন্তে এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার সঠিক উত্তর দিতে পারবে বলে মনে করছে সিবিআই। তবে সিবিআই যে পদ্ধতিতে পুলিশ কমিনারের বাড়িতে হানা দিয়েছিল তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নানা আইনি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ঘটনা বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ প্রধানের বাড়ি থেকে বের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এটি একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কলকাতা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ