Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সু চি’র উদ্যোগের বিরোধিতায় সেনাবাহিনী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

রোহিঙ্গা নিপীড়নে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে থাকা অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) সংবিধান সংশোধনে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নেওয়ার পর দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েছে। মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাব আনে সু চি’র দল। প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে আলোচনার তীব্র বিরোধিতা করেন সামরিক আইনপ্রণেতারা। তাদের অভিযোগ, এই প্রস্তাব উত্থাপনের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।
কথিত গণতান্ত্রিক উত্তোরণের নামে মিয়ানমারে আদতে জারি রয়েছে সেনাশাসন। ২০০৮ সালে সামরিক শাসনামলে প্রণীত সংবিধান অগণতান্ত্রিক হিসেবে সমালোচনার মুখে পড়েছে। সংবিধান অনুযায়ী দেশটির পার্লামেন্টের এক চতুর্থাংশ আসন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা এবং সীমান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে। শক্তিশালী জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদের ১১টি আসনের মধ্যে ছয়টি আসনেও রয়েছেন সেনাবাহিনী মনোনীত ব্যক্তিরা। গণতান্ত্রিক সরকার বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে সেনা সংখ্যাগরিষ্ঠ এই পরিষদের। এনএলডি’র অন্যতম নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল এই সংবিধান সংশোধন করা। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেলেও মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত সু চি’র দলের পক্ষ এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রস্তাবটি আলোচনার জন্য ভোটাভুটিতে সামরিক আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার পরও পাস হয়েছে। ভোটাভুটিতে অধিবেশনে উপস্থিত ৬০১ জন এমপির মধ্যে পক্ষে ভোট দেন ৩৬৯ জন, বিপক্ষে ভোট দেন ১৭ জন। আর ভোটদানে বিরত থাকেন তিনজন। সেনা এমপিরা ভোটের প্রক্রিয়া বয়কট করেছেন। প্রস্তাবটি উত্থাপনের পরপরই তারা পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে নীরব থেকে প্রতিবাদ জানান। আগামীকাল শুক্রবার প্রস্তাবটি নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের সিনিয়র সেনা এমপি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাউং মাউং বলেন, আমরা এই বিষয়ে সেনাপ্রধানের অবস্থান এখনও জানি না। এই প্রক্রিয়াতে আমাদের অংশগ্রহণ থাকবে। আমরা ইতোমধ্যেই বলেছি যে এই প্রস্তাবকে আমরা সমর্থন করি না। তাই আমরা ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলাম।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দাবি করেন, প্রস্তাবটি আলোচনার জন্য অনুমোদন দেওয়াতে পার্লামেন্টের বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। প্রস্তাবটি আলোচনার বিষয়ে ভোটাভুটির আগেই তিনি পার্লামেন্টে একই অভিযোগ করেছিলেন। সংবিধান সংশোধন ইস্যুতে সেনাবাহিনী ও সু চি’র নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের বিরোধ ২০১৫ সাল থেকেই চলছে। সাবেক সামরিক শাসক উ থেইন সেইন সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করেছিলেন। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি এই প্রস্তাবনার বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে ১০৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি পার্লামেন্টে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে পার্লামেন্ট ৩১ সদস্যের সংবিধান সংশোধন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে। ওই সময় এনএলডি অনুচ্ছেদ ৫৯(এফ)সহ ১৬৮টি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে। সূত্র : মিয়ানমার টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ