গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
'১০ টাকায় এক কাপ চা, গরম পানিও তো ১০ টাকায় পাওয়া যাবে না রাস্তায়।' বাংলাদেশে বর্তমান বাজার দরের তুলনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম টাকায় খাবার পাওয়া যায়-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি মো. আখতারুজ্জামানের দেওয়া এমন এক বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, এটি যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে পারে তাহলে গিনেস বুকে রেকর্ড হবে। আর এ নিয়ে ফেসবুকে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। নানা ধরণের সমালোচনার পাশাপাশিছবি, কোলাজ, কার্টুন, বঙ্গোক্তি করে অনেকেই এর সমালোচনা করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগের মধ্যে চা, সিঙ্গাড়া, সমুচার ছবি দিয়েও অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন।
ভিসি মো. আখতারুজ্জামান গত রোববার টিএসসি মিলনায়তনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে এই বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যের ওই অংশের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন নূরনবী সরকার নামে একজন। একদিনের মধ্যে ভিডিওটি তিন লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে। বিভিন্ন আইডির ভিউয়ার যোগ করলে এই সংখ্যা বহুগুণ বাড়বে।
ভিডিওতে ভিসিকে বলতে শোনা যায়, 'তুমি পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও পাবে না ১০ টাকায়, ১০ টাকায় এক কাপ চা, একটি সিঙ্গাড়া, একটি চপ এবং একটি সমুচা, ১০টাকায় পাওয়া যায় বাংলাদেশে। এটি যদি কোনো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে পারে, বিশ্ববাসী; তাহলে এটি গিনেস বুকে রেকর্ড হবে।
তিনি বলেন, '১০ টাকায় এক কাপ চা, গরম পানিও তো ১০ টাকায় পাওয়া যাবে না রাস্তায়। ১০ টাকায় এক কাপ চা, একটি সিঙ্গাড়া, একটি সমুচা এবং একটি চপ-এইগুলো পাওয়া যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে। এটি আমাদের গর্ব, এটি আমাদের ঐতিহ্য।'
ওই পোস্ট থেকে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন তিন হাজার সাতশ জনের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী। এই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে মন্তব্য করেছেন অনেকে। তার পুরো বক্তব্যের মাঝখানের কাট করা ৪৫ সেকেন্ডের বক্তব্যটি মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে মত দিচ্ছেন অনেকে।
এ বক্তব্য সম্পর্কে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, তাকে বুঝতে হবে তিনি কোথায় বসে আছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের চেয়ারের ভার বুঝতে পারবে না অথচ উপাচার্য হয়ে যাবেন, তা মেনে নেয়া যায় না। মাননীয় ভিসি মহোদয় এমন সস্তা কথা বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই নিচে নামিয়েছেন।
হোসাইন এস সজিব নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘সকাল-বিকাল “১০ টাকার "সা, সিংগাড়া, সামোসা ও সপ" খেলেই মনে হয় এমন মহান মহান উক্তি বের হয়।’’
মাহাবুব আলম লিখেছেন, ‘‘আমাদের সৈয়দপুরে ৫ টাকায় পাওয়া যায় তাইলে আমরা কোন বুকে নাম লিখাবো।’’
‘‘তাহলে উনি চায়ের দোকান দিয়ে বসুক। এটা নিয়ে যেহেতু ওনার ব্যাপক গর্ব। আগে দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে ছাত্র শিক্ষকরা গর্ব করতো। বর্তমান ভিসি সেটা ভুলে ছামচা, সিঙ্গারা ও চা নিয়ে গর্ব করছে। চারিদিকে চলছে শুধু ছারকাস---’’ লিখেছেন জাফর হোসাইন।
তবে সাইফুল ইসলাম মিমো লিখেছেন, ‘‘পুরা ভাষণ না শুনে আসলে কিছু বলা মুশকিল, তবে আমার ধারনা গৌরবের আলোচনায় অন্য কিছুও নিশ্চই ছিল, মাঝে সিংগারা সমুচা ঢুকায় দিয়ে আর কি এখন খিচুরি হয়ে গেছে এটা’’।
ফেসবুক ব্যবহারকারী এম মুসা খান লিখেছেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চয় কোন হোটেল নয় যে- সেখানে কম দামে খাবারের প্রলোভনে কেউ আকৃষ্ট হবেন। ঢাবির লেখাপড়ার মান উন্নত করে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করাই আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।’’
‘‘বিশ্ববিদ্যালয়র গর্ব হলো, চা সিংগার চপ, যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষার মান নিয়ে আমাদের আর কিছু নাই!’’ আক্ষেপ করে বলেছেন ইরফান শেখ।
হাসান মনসুর চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি ভাবতাম বিশ্ববিদ্যালয় গর্ব করে তার শিক্ষক, শিক্ষার মান ও ছাত্র ছাত্রীদের কৃতিত্ব নিয়ে, গবেষণা নিয়ে। এই ভাবা আজ ভবিতব্য। শিক্ষালয়ের শিক্ষার মান আজ চায়ের মানের সাথে তুলনীয়। হায় মান আজ কই তোর সম্মান।’’
‘‘মহাশয় এর কথা গ্রিনিজ বুকে রেকর্ড হবে’’ লিখেছেন সুশান্তা সিনহা।
অবশ্য উপাচার্যের বক্তব্যের পক্ষেও বক্তব্য রাখছেন অনেকে। নীল অনিবার্ণ লেখেন, ‘টিএসসিতে নবীনবরণের অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য মহোদয় আমন্ত্রিত। তিনি আসলেন, নবীনদের নিয়ে অনেক কথা বললেন, টিএসসিতে
প্রোগ্রাম যেহেতু টিএসসি নিয়েও কথা উঠে আসাটা স্বাভাবিক। তিনি সেই প্রসঙ্গ নিয়ে অনেক কথা বললেন, মজা করলেন, হাস্যোজ্জ্বলভাবে বরিশালের ভাষাতেও আরও কিছু সময় কথা বললেন। মজার ছলেই তিনি টিএসসির পরিচিত খাবার,
চা-সিঙ্গাড়া-সমুচা নিয়ে কথা বললেন। এর কিছু সময় আগে অবশ্য ২০ টাকার খাবার নিয়েও কথা বলেছেন।
১০-১২ মিনিটের বক্তব্যের মধ্যে ৪৫ সেকেন্ডের একটা ভিডিও ভাইরাল হলো। ভিডিওর এই ৪৫ সেকেন্ড এমনভাবে কাটা হলো, যার আগের পরিস্থিতিও জানার সুযোগ নেই, পরেও কী হয়েছে আপনারা তা জানেন না। হোমপেজে আসছে, দেখছেন, লাইক কামানোর উদ্দেশ্যে ট্রল করছেন। অথচ না আপনি অনুষ্ঠানে ছিলেন না আপনি জানেন এ কথাগুলোর প্রাসঙ্গিকতা। আপনাদের বুদ্ধি ও বিবেককে লাল সালাম।’
এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, আসলে ট্রল করা আমাদের সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। আমরা কোনোভাবেই বুঝছি না যে আমরা ভিসিকে ট্রল করতে গিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানকে নিচে নামাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।