পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিজাইনার বিদিশাকে চেনেন না দেশে এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা বর্তমানে সমাজসেবামূলক কাজে ব্যস্ত। এরশাদের এই সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন ব্যক্তিগতভাবে তিনি খুবই সদালাপী, বন্ধুবৎসল এবং যাপিত জীবনে অনাড়াম্বর। বিদেশে পড়শোনা এবং জীবনের বেশিরভাগ সময় বিদেশে বসবাস করায় তিনি চিন্তা-চেতনায় আধুনিক মননের মানুষ। তার নামের সঙ্গে যেমন জড়িয়ে রয়েছে বিতর্ক; তেমনি পরোপকারী নারী হিসেবে সমাদৃত। এরশাদের ঘরে রয়েছে তার নাড়ি ছেঁড়াধন শাহতা জারাব এরিক। এরশাদের সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর বিদিশা ‘শত্রুর সঙ্গে বসবাস’ ‘এরশাদের চিঠি’সহ বেশ কয়েকটি আত্মজীবনীমূলক বই লিখেছেন। ঝরঝরে লেখা বইগুলো হয়েছে পাঠক সমাদৃত। ৮৮ বছর বয়সী এরশাদের মৃত্যুর ‘গুজব’ও উঠেছিল। গুরুত্বর অসুস্থ এরশাদের রোগমুক্তি কামনায় দলের নেতারা প্রতিদিনই মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করছেন। আত্মীয়-স্বজনরা রোগমুক্তি কামনায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের যখন এই অবস্থা তখন স্ত্রী রওশন এরশাদ দেখতেও যাননি। কিন্তু সাবেক স্বামীর এই অবস্থা দেখে নীরব থাকেননি বিদিশা। তিনি এরশাদের আরো দীর্ঘজীবন কামনা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। গুরুত্ব অসুস্থ এইচ এম এরশাদকে নিয়ে বিদিশা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ইংরেজি অক্ষরে বাংলায় লেখা সেই স্ট্যাটাস ইনকিলাব পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
বিদিশা লিখেছেন, ‘উনাকে (এরশাদ) আরও কিছুদিন বাঁচতে দিন। এফবিতে (ফেসবুকে) দেখেছি উনাকে মেরে ফেলেছেন। বিশ্বাস করুন, উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান আমাদের ছেলে এরিকের জন্য। উনি পৃথিবীতে এরিক ছাড়া বোধহয় আর কাউকে এতো ভালোবাসেননি। আমিও সব মাতৃত্বের লড়াই করার পরও ছেলেকে বাবা থেকে আলাদা করতে পারিনি।’
বিদিশা লেখেন, ‘সব থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছি আমি আমার সন্তানকে কাছে না রেখে, চোখে না দেখে। তারপরও আমাকে পরম আনন্দ দেয় বাবা ছেলের (এরশাদ-এরিক) খুঁনসুঁটি দেখে। কোনো শর্তের বন্ধন নেই। বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্যের পরও তাদের মধ্যে আড্ডা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক চোখে পড়ার মতো। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে ও নিয়ে আসে একজন বৃদ্ধ পিতা। ছুটির দিনে বাবা ছেলের একসঙ্গে ভ্রমণ।’ বিদিশা আরও লিখেন, ‘রাতে এরিক ছাড়া উনি (এরশাদ) ঘুমাতে পারেন না একদম। তাই তো গত সপ্তাহে আমি যখন সিএমএইচে গেলাম দেখতে (এরশাদকে), দেখি নাস্তা করেন নাই, অপেক্ষায় আছে এরিকের। দুপুরে এরিক স্কুল থেকে ফিরলে লাঞ্চ করবেন বললেন। আমাকে সরি বললেন, অনেক অন্যায় হয়ে গেছে আমার সঙ্গে যা সংশোধন করার উপায় নেই। তা অন্য প্রসঙ্গ। অনেক স্মৃতিচারণ করলেন তিনি।’ এরশাদ ‘বলেই ফেললেন, রাত জেগে এরিক নাকি বক বক করে, যা নাকি আমি করতাম এককালে। উনি চোখ বন্ধ করলে এরিক নাকি চোখ খুলে দেয়, বলে আচ্ছা ড্যাডি এইবার তাহলে একটা রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনাই। কিন্তু তুমি তো ঘুমাবে না আমার আগে। গান করতে করতে এরিক নিজেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমিও নাকি একই কাজ করতাম অনেক বছর আগে। সেদিন উনার চোখে পানি ছিল। জীবন মৃত্যুর এই শেষ সময়ে উনার (এরশাদ) উপলব্ধিগুলো নিশ্চয়ই মিথ্যা না।’
বিদিশা এরশাদ আরও লিখেছেন, চল্লিশ মিনিট আমার হাত উনার দুই হাত দিয়ে ধরে বসেছিলেন। চোখ দিয়ে ঝরছিল পানি আমাদের দু’জনেরই। আমাদের দুইজনের মধ্যে সময়ের গ্যাপটা অনেক বেশি হয়ে গেছে এতদিনে, তাই উনার (এরশাদ) জীবনে শেষ সময়ে আমি কোনো সেবা করতে পারলাম না। উনি বললেন, আমি নাকি বেশি সোজা সাপ্টা, সাধা-সিধা ছিলাম। লম্বা হয়েছি, বুদ্ধি হয়নি আমার। আমি আরো খুশি আছি অল্প বুদ্ধিতে সোজাসাপ্টা সিম্পল জীবনে। রাজনীতি, প্যাঁচ ষড়যন্ত্র টেনশন নিয়ে ঘুমাতে হয় না আমার। সততার সাথে স্বল্প পরিশ্রম আমার ফাউন্ডেশনটা চালাই তাতেই আমার শান্তি।’ তিনি লেখেন ‘দিনের শেষে রাতে এরিকের কথা মনে হলে মায়াকে বুকে চেপে ঘুমাই আমি। উনিও মায়াকে ভালোবাসেন। বললেন, তোমার মতো মা থাকলে বাবা দরকার নেই। আমি শুধুই বললাম, ‘উই্স আওয়ার মেরিজ ওয়াজ নট সো ক্রাউডেড’। উনি আমার গালে আলতো করে কাঁপা কাঁপা হাতে স্পর্শ করে বললেন, ‘সরি’। এরিক আছে, মায়া আছে তোমার পাশে। আমার মনে হয়েছে উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান উনার এরিকের জন্য শুধু। আমিও চাই আরও কিছুদিন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, আনন্দ উনি এরিকের কাছ থেকে নিয়ে যাক। যেটা একমাত্র এরিকই দিতে পারবে উনাকে, কারণ এরিক তো স্পেশাল চাইল্ড।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।