বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মীরসরাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য মাটির হাঁড়ি পাতিল। বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ভিড়ে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশের চিরচেনা মৃৎশিল্প। সেই সাথে প্রায় হারিয়ে গেছে মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানো গ্রামীণ সংস্কৃতির নানা উপকরণ ও গৃহস্থালি নানান প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।
জানা গেছে, মীরসরাইয়ের মৃৎশিল্প তৈরী কারক পরিবারগুলোর মধ্যে চলছে অভাব অনটন। কারণ তাদের তৈরি পণ্য এখন বাজারে চলছেনা বলে বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়ার জীবনের চিত্র। উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের পূর্ব মিঠানালা গ্রাম। ঐ গ্রামে মোহন পাল বাড়ীর এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে মৃৎশিল্প প্রস্তুতকারী পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে মেলায় অংশ গ্রহণের জন্য তৈরী করছে ছোট ছোট পুতুল ও মাটির খেলনা। পরিবারের নারী সদস্যরা রঙের কাজে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। পূর্বে মৃৎ শিল্পের খ্যাতি ছিল কিন্তু আজকাল অ্যালুমিনিয়াম, চীনা মাটি, মেলামাইন এবং বিশেষ করে সিলভারে রান্নার হাড়ি কড়াই প্রচুর উৎপাদন ও ব্যবহারের ফলে মৃৎশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। কথিত আছে মৃৎশিল্প প্রায় দুই থেকে আড়াই শত বছর পূর্ব থেকে চলে আসছে। জানা যায় অতীতে এমন দিন ছিল যখন গ্রামের মানুষ এই মাটির হাঁড়ি কড়া, সরা,বাসন, মালসা ইত্যাদি দৈনন্দিন ব্যবহারের সমস্ত উপকরণ মাটির ব্যবহার করত কিন্তু আজ বদলে যাওয়া পৃথিবীতে প্রায় সবই নতুন রূপ। নতুন সাজে আবার নতুন ভাবে মানুষের কাছে ফিরে এসেছে। আজ শুধু গ্রাম বাংলার নয় শহরের শিক্ষিত সমাজ ও মাটির জিনিস ব্যবহার করে। তবে তা বিচিত্ররূপে। এখন মানুষের রুচি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নিত্য নতুন রূপ দিয়ে মৃৎ শিল্পকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করছে। এক সময়ে মীরসরাইয়ের হাজীশ্বরাই,ওয়াহেদপুর, করেরহাট, গোপীনাথপুর, মায়ানী, সাহেবপুর,মিঠানালা গ্রামেও ছিল মাটির তৈরি পণ্য সামগ্রীর সমাহার। বিভিন্ন বাজারে ছিল মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল সহ অন্যান্য সামগ্রীর দোকান ।
মীরসরাই মিঠানালা গ্রামের কুমার স্বপন চন্দ্র পাল জানান, এখন দৃষ্টি নন্দন মাটির সামগ্রী কলসি, হাঁড়ি, পাতিল, সরা, মটকা, দৈ পাতিল, মুচি ঘট, মুচি বাতি, মিষ্টির পাতিল, রসের হাঁড়ি, ফুলের টব, চাড়ার টব, জলকান্দা, মাটির ব্যাংক, ঘটি, খোঁড়া, বাটি, জালের চাকা, প্রতিমা, বাসন-কোসন, ব্যবহারিক জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী ইত্যাদি তৈরী করা হতো কিন্তু এখন প্লাস্টিক সামগ্রীর বিভিন্ন পণ্য বাজারে চলে আসায় মাটির তৈরির পণ্য কদর কমে গেছে।
কুমার বাড়ির বিপুলা রাণী পাল, জানান এই মাটির জিনিস গুলো তৈরি করতে এখন অনেক খরচ হয়। সেই হিসেবে এখন টাকা পাওয়া যায় না। তারপরও পুরনো পেশা তাই কোন রকম ভাবে বেঁচে আছি।
সুসেন চন্দ্র পাল জানান, এখন অনেকেই কুমারেরা পেশা বদল করায় মাটির পণ্য সামগ্রী বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিক এবং সিলভার সামগ্রীর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় তাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।