মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতজুড়ে বিরোধী ঐক্যের ছবিটা সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে স্পষ্ট করে প্রথম বারের জন্য তুলে ধরল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের সমাবেশ। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপির বিরুদ্ধে শনিবার জোট বাঁধলেন বিরোধী রাজনীতিকরা, ঘোষণা দিলেন এক হয়ে চলার। সে সুবাদে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন জাতীয় রাজনীতির আলোয়। আঞ্চলিক পর্যায় থেকে তিনি চলে আসলেন জাতীয় নেতৃত্বে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীও তার নেতৃত্ব মেনে নিলেন ।
বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গুরুত্ব পেয়েছেন একজন গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক নেত্রী হিসেবে। ভারতে জাতীয় স্তরের নেত্রী হিসেবে এর আগে তাকে দেখা হয়নি কখনও। শনিবারের সমাবেশ বুঝিয়ে দিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন জাতীয় রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক। বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর এ জোটের চলার শুরু ঘোষণা করে মমতা বিরোধী নেতাদের বলেন, ‘এরপর এই মহাজোটের সভা হবে দিল্লি ও অন্ধ্রপ্রদেশের অমরাবতীতে। সেখানেও হাজির থাকবেন সব বিরোধী নেতা।’ মোদী সরকারের ‘এক্সপায়ারি ডেট এসে গেছে’ বলেও তোপ দাগেন মমতা। বিরোধী নেতারা বলেন, ‘দেশের সংবিধান বাঁচাতে, ভারতকে অখন্ড রাখতে আসন্ন লোকসভা ভোটে বিজেপির বিদায় চাইই।’ ধর্মের নামে হিন্দু মুসলমান ভাগের জন্য সভায় মোদিকে দায়ী করেন কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। শারদ পাওয়ার স্লোগান দেন, ‘মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও।’
এদিকে, গোয়ার সিলভাসার জনসভা থেকে পাল্টা তোপ দেগেছেন মোদি। তিনি বিরোধীদের এ জোট ‘দুর্নীতি, নড়বড়ে জোটের’ শো বলে কটাক্ষ করে বলেন, ‘বিজেপির জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়ে গিয়ে সব অবসর নেয়া নেতারা এক হয়েছেন। কোনো লাভ হবে না, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে জিতবে, সরকারে ফিরবে বিজেপি।’
শনিবার তৃণমূলনেত্রী মমতার সমাবেশ ছিল কার্যতই বিজেপি বিরোধী মঞ্চ। সেখানে ছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া, চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কুমারস্বামী, উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদব, বিহারের তেজস্বী যাদব, গুজরাতের হার্দিক প্যাটেল, কাশ্মীরের ফারুক আবদুল্লাহ, মহারাষ্ট্রের শারদ পাওয়ার প্রমুখ। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী না আসতে পেরে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জ্জুন খাড়গেকে চিঠি দিয়ে পাঠান। চিঠি লিখে বিরোধী মহাজোটকে সমর্থন জানান সোনিয়া গান্ধীও। সভায় সেই চিঠি পড়ে শোনান খারগে। সভায় ছিলেন বলিউড অভিনেতা বিজেপির সংসদ সদস্য শত্রঘ্ন সিংহ, অটল বিহারি বাজপেয়ির অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুন শৌরিও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে বিরোধী ঐক্যের রূপরেখাকে গোটা দেশের সামনে প্রথম বারের জন্য স্পষ্ট করে তুললেন, তাতে এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে গেলেন জাতীয় রাজনীতির অন্যতম চালকের আসনে। কংগ্রেসকে ছাড়া বিজেপি বিরোধী সরকার গড়া সম্ভব নয় আর কংগ্রেসকে নিয়ে সরকার গঠিত হলে প্রধানমন্ত্রী রাহুল গাঁন্ধীই হবেন এমন ইঙ্গিত বার বার দিতে কংগ্রেস নেতারা খুবই ভালবাসেন। কিন্তু রাহুলকে বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে তিনি যে একেবারেই প্রস্তুত নন, তা বুঝিয়ে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চেষ্টার ত্রুটি করেননি। তা নিয়ে মমতা-রাহুলে বা কংগ্রেস-তৃণমূলে ঠান্ডা লড়াই চলেছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দমেননি। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাউকে তুলে ধরার প্রয়োজন নেই এই অবস্থানে অনড় থেকেছেন। দীর্ঘ স্নায়ুযুদ্ধের ফল কিন্তু মিলল। শনিবারের ব্রিগেড সমাবেশ বুঝিয়ে দিল, বিরোধী জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে মমতা নিজেও কম অগ্রগণ্য নন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃণমূল তুলে ধরতে শুরু করেছে গত কয়েক মাস ধরেই। জাতীয় স্তরে তেমন কোনও প্রস্তাবের অবতারণা এখনও হয়নি। কিন্তু রাহুলের প্রধানমন্ত্রিত্বের যাবতীয় প্রস্তাবনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার খারিজ করেছেন। তার পরেও কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে প্রতিনিধি পাঠানোয় প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতের মিল হোক বা না হোক, তাকে অবজ্ঞা করার জায়গায় এখন কংগ্রেসও নেই। খড়গে এবং সিঙ্ঘভিকে মঞ্চে বসিয়ে রেখে মমতা এ দিন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, ভোটের পরে ঠিক করব।’ সভামঞ্চ থেকে তো নয়ই, সভা শেষে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন থেকেও খড়গে সে কথার কোনও স্পষ্ট বিরোধিতা করেননি। উচ্চারিত হয়নি, কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দেওয়ালের লিখন। সূত্র: ইন্টারনেট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।