Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইতালির মুসলিম স্মৃতি-বিজরিত শহরে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাড়ি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৯, ৫:০৭ পিএম

ইতালির অন্যতম সুন্দর শহর সাম্বুকা। বছর কয়েক আগে অসংখ্য ইতিহাসের সাক্ষী প্রাচীন এই শহরটির নাম উঠেছিল দেশের সব থেকে সুন্দর শহরগুলোর তালিকায়। সেই শহরেই এখন বাড়ি বিক্রি হচ্ছে পানির দামে। মাত্র ১ ইউরো দিলেই পাওয়া যাচ্ছে বাড়ি। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ১০০ টাকা।
২০১৬ সালে ইতালির সবচেয়ে সুন্দর শহর প্রতিযোগিতায় মনোনয়ন পেয়েছিল সাম্বুকা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদে ঠাসা এই শহর। এর সঙ্গে অনেক ইতিহাসও জড়িয়ে আছে। সাম্বুকা গড়ে তোলে প্রাচীন গ্রিকরা। পরবর্তীকালে ৮৩০ সালে আরব মুসলিমদের দখলে আসার পরে সাম্বুকা সমৃদ্ধ বাণিজ্য নগরীতে পরিণত হয়। তখন তারা আমির আল জাবুতের নামে শহরটির নাম দিয়েছিল জাবুত। ১৯২৮ সাল পর্যন্ত এটির পরিচিতি ছিল সাম্বুক আল জাবুত নামে। এর পরে তৎকালীন শাসক বেনিতো মুসোলিনি এর নাম পাল্টে রাখেন সাম্বুক অফ সিসিলি। মুসলিম অধ্যুষিত সমৃদ্ধ এই শহর ১৩ শতকের দিকে দ্বিতীয় ফ্রেডরিক দখল করার পর থেকেই এর পতন শুরু হয়। সমৃদ্ধির সাথে আসে মহামারি, জাঁক-জমকের পাশাপাশি একের পর এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। বর্তমানে শহরটির বৈচিত্র্যপূর্ণ স্থাপত্যশৈলীতে আরব প্রভাব স্পষ্ট।
মনোরম সৈকতের পাশাপাশি অপরূপ ও প্রশান্ত এই শহরের চারদিকে রয়েছে গাছগাছালি ও পাহাড়-পর্বত। কিন্তু, দেশের আর পাঁচটা শহরের মতো গত কয়েক বছরে এখান থেকে বহু মানুষ রাজধানী বা বড় শহরে চলে গিয়েছেন। প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে এই ছোট্ট শহর। সাম্বুকা ছেড়ে চলে যাওয়ার মূল কারণ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। চিকিৎসা ব্যবস্থাও তেমন উন্নত ছিল না এখানে। ফলে এখানে থেকে আধুনিক জীবন যাত্রার স্বাদ নেওয়ার সুযোগও তেমন ছিল না।
ক্রমাগত জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। সাম্বুকার উপ-মেয়র জুসেপ্পে ক্যাসোপ্পো আবেদন করেন, শহরে বাড়ি কিনতে। আবেদনে সাড়া দিয়ে, অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জুসেপ্পে। সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স ও স্পেন থেকে অনেকে এখানে বাড়ি কেনার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
এখানকার বেশির ভাগ বাড়িতেই সাজানো উদ্যান রয়েছে। সূর্যাস্তের সময় গোলাপি-লালচে রঙের দোতলা একটি বাড়ির জ্বলজ্বল করা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। এতে রয়েছে পাম গাছের বাগান, কমলালেবু গাছ, ফুলশোভিত সিঁড়ি, সিসিলীয় ধাঁচের ছাদ ও বারান্দা।
সাম্বুকা থেকেই অভিজাত সিসিলীয় ওয়াইনের নবজাগরণ শুরু হয়। লাল আঙুরের চাষ হয় এখানে। এই শহরে রয়েছে বিস্তীর্ণ আঙুর ক্ষেত। ইতালির স্থানীয় খাবার সাম্বুকার অন্যতম আকর্ষণ। ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে বানানো রুটি ও পাস্তার চাহিদা ব্যাপক। ফুল ও লেবুর সমন্বয়ে ডিম ভাজাও অতুলনীয়। সঙ্গে পিৎজা আর কেক তো আছেই।
১ ইউরোতে বাড়ি কেনা গেলেও একটি শর্ত আছে। নতুন মালিককে বাড়িটি সংস্কার করতে হবে। আর তা করতে হবে তিন বছরের মধ্যে। এ ছাড়া নিরাপত্তা আমানত হিসেবে নেওয়া হবে ৫ হাজার ইউরো। সংস্কার হয়ে গেলে তা ফেরত পাবেন নতুন মালিক। জুসেপ্পে ক্যাসোপ্পা বলেন, ‘সাম্বুকায় বাড়ি কিনলে কেউ হতাশ হবেন না। সাম্বুকায় এলে সবারই মনে হবে ভূ-স্বর্গ। প্রাকৃতিক সম্পদের ভেতর শহরটি অবস্থিত। এর সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে। সূত্র: সিএনবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।



 

Show all comments
  • Jubayer ২০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১১:৪৮ পিএম says : 0
    ঘটনা টা কতটুকু সত্য?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইতালি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ