মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কলকাতার ঐতিহাসিক ব্রিগেডে আজ ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া র্যালি বা ঐক্যবদ্ধ ভারত’-এর মহাসমাবেশ। এতে ভারতের প্রায় বিজেপি বিরোধী সব দলগুলোর প্রধান ও প্রতিনিধি সহ অন্তত ৪০ লাখ লোক উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সমাবেশের সমর্থন জানিয়ে গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি মমতার প্রসংশা করে মহাসমাবেশে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিলেন বিজেপি সাংসদ ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শত্রুঘ্ন সিন্হা। বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক আর তাতে নিজেদের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সমর্থন দেয়া নিয়ে আসন্ন নির্বাচনের আগে বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আর আঞ্চলিক নেতা নন। তিনি এক জন জাতীয় মাপের নেতা। এমনই মন্তব্য করে আবারও বিতর্ক উস্কে দিলেন শত্রু ঘ্ন। পাশাপাশি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হার প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিগেডে তৃণমূলের মহাসমাবেশে তিনি অংশ নেবেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘প্রাপ্ত আসনসংখ্যার ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী কে হবেন ঠিক করবেন দেশের মানুষ এবং দলগুলো। তবে নিঃসন্দেহে তিনি (মমতা) সেরা ব্যক্তিত্বদের একজন। তিনি এখন আর আঞ্চলিক নেতা নন। তিনি এক জন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পর্যায়ের নেতা।’
এই সভা থেকেই বিজেপির ‘কফিনে’ শেষ পেরেক ঠোকার কাজটা সেরে ফেলতে চাইছেন মমতা-সহ বিরোধী দলগুলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দলের বিরুদ্ধে ফের আওয়াজ তুলতে ব্রিগেডের মঞ্চকেই বেছে নিতে চাইছেন শত্রুঘও। দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেও দলের প্রতি তার যে অগাধ আনুগত্য রয়েছে পাশাপাশি সেটাও দাবি করেছেন পটনা সাহিবের বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, ‘দলের প্রতি আমার আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা যুক্তিযুক্ত নয়। বিজেপি যখন দুই সাংসদের দল ছিল তখন এই দলে যোগ দিয়েছিলাম। দলকে আরও মজবুত করতে সব সময়ই কাজ করে গিয়েছি।’
এদিকে, সমাবেশে সমর্থন জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপির বিরুদ্ধে সারা দেশের সমস্ত বিরোধী শক্তি ঐক্যবদ্ধ বলেও এই চিঠিতে জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। সমাবেশের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানোর পাশাপাশি নিজের বার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়টিও সামনে এনেছেন রাহুল। তা স্পষ্ট হয়েছে চিঠির একদম শেষে ‘মমতাদি’ সম্বোধনের মাধ্যমেই।
আমাদের কলকাতা প্রতিনিধি কালীপদ দাস জানান, ১৯৯২ সালের ২৫ নভেম্বর তৎকালীন বামফ্রন্টের মৃত্যু ঘন্টা বাজানোর লক্ষ্যে বিগ্রেডে প্রথম সমাবেশ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের সভার লক্ষ্য ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্ত্রীয় সরকার উৎখাত। আজ বিগেডকে কেন্দ্র করে সারা রাজ্যের অন্তত ৪০ লাখ দলীয় কর্মী-সমর্থক উপস্থিত থাকবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। যা অতীতের সব রেকর্ডকেম্লান করে দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এতে সারা দেশের অ-বিজেপি প্রায় সমস্ত দলগুলির সুপ্রিমো অথবা প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকছেন বলেও দলীয় সূত্রে খবর। মমতা আগেই ঘোষণা করেছেন, এই র্যালি হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে ২০১৯-এর যুদ্ধের মঞ্চ। সমাবেশে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নেতা, প্রতিনিধি বা মুখপাত্রদের বক্তব্য রাখার সুযোগ থাকবে।
মঞ্চও তৈরি করা হচ্ছে সেই ভাবেই। মূল মঞ্চ সহ মোট ৫টি মঞ্চ তৈরি হয়েছে। মূল মঞ্চের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট, প্রস্থ ৪৪ ফুট এবং উচ্চতা ১০ ফুট। থাকছে ২২টি এলইডি স্ক্রিন ও ১০০০টি মাইক।
ইন্দিরা গান্ধিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিগ্রেডে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার ১৯৭৭ সালে। তাতে জয়প্রকাশ নারায়ণ সহ সারা দেশের তাবড় তাবড় অ-কংগ্রেসী নেতারা আংশ গ্রহণ করেছিলেন। এ পর্যন্ত বামেদের সেই র্যালিকেই বুহত্তম র্যালি বলে মনে হরা হয়। কিন্তু আজকের ব্রিগডের মহার্যালি ৪১ বছরের সেই র্যালিকেও ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে খবর, আজকের এই র্যালি থেকেই মোদী সরকারের উৎখাতের ডাক দেবেন মমতা। পাশাপাশি দলের নেতৃবৃন্দ স্বচ্ছ ও লড়াকু নেত্রী হিসাবে মমতাকেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরবে। সর্ব ভারতেীয় নেতাদের সামনে এমন একটা দাবিও তুলতে পারে দলীয় নেতারা। তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের এই মোক্ষম সুযোগকে তারা পুরোপুরি কাজে লাগাবার চেষ্টা চালাতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।