পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি বিএনপির তৃণমূল নেতাদের ক্ষোভ বাড়ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বিপর্যয়ের জন্য তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়ী করছেন। ২০১৪ সালের আন্দোলন যেমন কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকার কারণে ব্যর্থ হয়েছে। এবারও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দূরদর্শীতার অভাব ও তৃণমূলের সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে নির্বাচনে দলের এই বিপর্যয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কক্সবাজার জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, দেশের সত্তর ভাগেরও বেশি জনগণ এ সরকারের বিরুদ্ধে। অথচ জনগণের এই মতামতকে আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। এ ব্যর্থতা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। কেন্দ্রীয় নেতারা তৃণমূল নেতাদের কোন কথাই কানে নেননি। তৃণমূলের সাথে কেন্দ্রীয় নেতাদের কোন সমন্বয়ই ছিলনা।
তৃণমূল এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতারা তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতকে কোন গুরুত্বই দেননি। জাতীয় ঐক্যের নামে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের সঙ্গে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্রীয় নেতারা নিয়েছেন। ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও তৃণমূল নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়ে ছিলেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা যে ভাবে কেন্দ্র দখল করে জয়ী হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনেও তারা এ ভাবেই জোর করে বিজয়ী হবে এমনটাই বলেছিলেন তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী। একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কথাই তারা বার বার কেন্দ্রীয় নেতাদের বলেছেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের কোন পরামর্শই কানে নেননি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাত দফা দাবী দিয়েছিল। তাদের সে সাত দফার একটি দফাও মানা হয়নি। তখনও তৃণমূলের নেতারা সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতারা তখন প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের উপর আস্থা রেখে নির্বাচনে যওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছেন। এখন বলছেন, নির্বাচনে গিয়ে তারা প্রমাণ করেছেন দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। অর্থাৎ ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’ বিএনপিরও হয়েছে তাই।
নির্বাচনকালীন জোট গঠনের বিষয়েও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের মতামতের কোন গুরুত্ব দেয়নি। ইসলামী ভাবধারার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ ছিন্ন করে বামধারার কিছু রাজনৈতিক দলের সাথে যে নির্বাচনী জোট গঠন করেছে তা দলের আদর্শিক চেতনাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে। যারা বিএনপিকে পছন্দ করেন, বিএনপির সমর্থক তারা এ বিষয়টিকে খুব একটা ভালভাবে নেয়নি। এ বিষয়টি তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের বার বার বলছেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা তাতে কর্ণপাত করেননি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ-উদ্দেশ্য থেকে বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব অনেক দূরে সরে গেছে। সিলেট জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, বিএনপির সমাবেশে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা যখন জয়বাংলা স্লোগান দেয়, বঙ্গবন্ধুর প্রশংসায় তাদের মুখে খই ফোটে তখন বিএনপির সমর্থকদের হৃদয় ভেঙ্গে যায়। দলের মহাসচিব যখন বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেন ভারতের সাথে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি। তখন শহীদ জিয়ার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী চেতনার মূলে আঘাত লাগে। এসব বিষয় কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেক বার বলার পরও তারা তা আমলে নেননি। সব মিলিয়ে দলের বর্তমান নাজুক অবস্থার জন্য তৃণমূল নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে দায়ী করছে।
যে সব নেতাকর্মী জেলে আছেন তাদের পরিবার পরিজনদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক নেতাকর্মী এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের ভবিষ্যত কি? তারা কি করবে? এ সব প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা এখনো নির্বাচন উত্তর সব প্রার্থীদের নিয়ে বসতে পারেনি। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ বেড়েই চলছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তেরণের জন্য করণীয় কি? এ প্রশ্নের জবাবে কক্সবাজার বিএনপির নেতা বলেন, দ্রুত দলের সর্বস্তরের কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। আমরা গত দশ বছর যাবত গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি। সে গণতন্ত্র আগে আমাদের দলে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বর্তমান কমিটি গত দশ বছরে কোন সাফল্য দেখাতে পারেনি। তাই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল দলের সর্ব পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। ছাত্রদল, যুবদলসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনগুলোও কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করে দ্রুত পুন:গর্ঠন করতে হবে। এ বিষয়ে ফেনী জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আবু তাহের বলেন, সারা বিশ্ববাসী দেখেছে ভোট ডাকাতির নির্বাচন হয়েছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক নির্বাচন। প্রহসনের এই নির্বাচন আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন আমাদেরকে দ্রুত দল পুন:র্গঠন করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য আমরা আন্দোলন করছি, লড়াই করছি। তাই আমাদের দলে আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে দলের সর্বস্তরের কমিটি গঠন করে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।