পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাভারে ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারীর আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে। দুর্নীতির অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে বরখাস্ত করা হলেও থেমে নেই তার অপকর্ম। সরকারী কাগজপত্র নয়ছয় করে এবং দালালীর টাকায় তিনি বনে গেছেন প্রায় ৫০ কোটি টাকার অগাধ বিত্ত বৈভবের মালিক।
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি বিহীন সম্পদ অর্জনকারী এই ব্যক্তির নাম দীন ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি একসময়ে আশুলিয়া ভূমি অফিসে এমএলএস (চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) পদে চাকুরী করতেন। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তাকে ধামরাই ভূমি অফিসে শাস্তিমূলক বদলি করা হলে দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) হন। গত তিন বছর ধরে তিনি সাসপেন্ড থাকলেও আশুলিয়া ভূমি অফিসের সামনে নিজে একটি অফিস খুলে সেখানে নামজারী, খাজনা, খারিজ ও পর্চার কাজের দালালি করে আসছেন।
সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা মহল্লার পূর্ব ভবানীপুরে তার রয়েছে বহুতল চারটি ভবন। সারি সারি এসব ভবনের মধ্যে বি ৮/৪ গেন্ডা, পূর্ব ভবানীপুর হোল্ডিংয়ের চারতলা ভবনের (১০ তলা ফাউন্ডেশন) দোতলায় তিনি থাকেন পরিবার নিয়ে। একই এলাকার বি ৮/১, বি ৮/২, বি ৫/১৯ (গেন্ডা, পূর্ব ভবানীপুর) হোল্ডিংয়ের বাড়িগুলো তার ভাড়া দেয়া। এরমধ্যে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর চোখে ধুলো দিত ধূর্ত দীন ইসলাম একটি বাড়ির জন্য ব্যাংক থেকে ঋন নিয়েছেন বলে চাউর রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার গড়নগর গ্রামের রেনু ভূঁইয়ার পুত্র দীন ইসলাম ভূঁইয়া প্রায় দেড়যুগ আগে কাজের খোঁজে সাভারে আসেন। এক সময়ে তার নুন আনতে পাত্তা ফুরালেও সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই ভূমি অফিসে নয়-ছয় করে তার নাটকিয় উত্থান ঘটে। সেই সূত্রে মোটা অঙ্কের টাকায় এলএমএস পদে চাকুরী বাগিয়ে নিয়ে ভূমি অফিসে দুর্নীতি ও অনিয়মের শিকড় গড়েন। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। যেন আলাদীনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছে তার। অল্প কয়েক বছরের ব্যবধানে শুধু বেড়েছে তার সম্পদ ও নগদ টাকা। এখন সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে চারটি বহুতল ভবন ছাড়াও টান গেন্ডা ও নামা গেন্ডায় রয়েছে আরো ৫টি প্লট। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে অল্পদিনের ব্যবধানে তার জমি ও মার্কেট দেখে ‘থ’ বনে গেছেন স্থানীয়রাও। সাভার ও বাজিতপুরের একাধিক ব্যাংকে তার নিজের, স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্রের নামে রয়েছে ফিক্সড ডিপোজিটসহ কয়েক কোটি টাকার হিসাব। রয়েছে কয়েক লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। বাজিতপুরে প্রায় ৩৪ শতাংশ জমির উপর তার পাকা-আধাপাকা মার্কেটসহ কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। ফসলী জমির পরিমাণ প্রায় ৪০ বিঘা। তার একমাত্র পুত্র প্লাবন একটি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করছে না। মামলার তদন্তকারী সংস্থা ও তদন্ত কর্মকর্তা বদল হলেও তাদের ভূমিকা রহস্যজনকই থেকে যাচ্ছে। স্বল্প শিক্ষিত দীন ইসলামের সম্পদের পাহাড় দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে নানাভাবে একাধিকবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানালেও তিনি আছেন বহালে। বৈধ কোনো আয়ের উৎস্য ছাড়া চোখ ছানাবড়া করার মতো সম্পদের মালিক দীন ইসলাম রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
স্থানীয় সূত্র মতে, দীন ইসলামের পুত্র প্লাবন আশুলিয়ার খাগানের সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হলেও ক্যাম্পাসে তিনি গরহাজির। ইভটিজিংয়ের এন্তার অভিযোগ রয়েছে। এমন অভিযোগে একবার তিনি বাড়ি থেকে নগদ ৭০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেন! কয়েকমাস পর বাড়ি ফিরলেও মা-বাবার আল্লাদে প্লাবন মাদক সেবনসহ নানাবিধ অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। সর্বশেষ গতবছরের ২১ আগষ্ট সাভারে ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী মারুফ খানকে (২১) ছুরিকাঘাতে নৃশসভাবে হত্যা করা হয়। সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে সংঘটিত ওই ঘটনায় স্থানীয় বখাটে মঞ্জু ও প্লাবন নেতৃত্ব দেয়। মারুফের বড়ভাই লুৎফর রহমান খান মানিকের দায়েরকৃত মামলায় প্লাবন তিন নম্বর আসামি। ঘটনার পর পুলিশ, র্যাব, ডিবি ও সিআইডি তাদের বাসায় অভিযান চালায়। প্লাবন কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়ালেও অধড়া রয়েছেন। তবে অল্পদিন পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থেমে যাওয়ায় গুঞ্জন রয়েছে ‘সব ম্যানেজ’!
এদিকে দীন ইসলামের বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনকে ভাড়া রাখার নামে তিনি নিজের কালো টাকা ও অবৈধ সম্পদ রক্ষার কৌশল করছেন বলে চাউর রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেহিসাবী সম্পদের মালিক দীন ইসলাম পুত্র প্লাবন শুধু মাদক সেবন নয় ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এই ব্যবসায় তার কয়েক লাখ টাকা বিনিয়োগও রয়েছে।
এসব ব্যাপারে জানতে দীন ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি এখন পেনশনে আছেন। তিনি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং সম্পদ বিবরণ আয়কর নথিতে উল্লেখ করা আছে। একমাত্র পুত্র হত্যা মামলার আসামি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো তার জামিন হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।