Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রংপুর চিনিকলের আখ ক্ষেতে দফায় দফায় রহস্যজনক অগ্নিকান্ড

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে রবিউল কবির মনু | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের আওতাধীন সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের আখ ক্ষেতে দফায় দফায় রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনা বেড়েই চলছে। চলতি মৌসুমে এই খামারে ৪ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৩ শ’ বিঘা জমির আখ পুড়ে গেছে। বার বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা চলতে থাকায় চিনি কলের ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে চিনিকল কর্তৃপক্ষ এই অগ্নিকান্ডকে নাশকতা ও রহস্যজনক বললেও স্থানীয় সচেনতন মহল ও এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদিক শ্রমিক বলেন, অগ্নিকান্ডগুলি মোটেও রহস্যজনক নয়। তাদের দাবি খামারের জমিতে পরিচর্চার অভাবে এবার ভাল আখ না হওয়া জমিতে ছোট ছোট আখের সাথে আগাছা লতাগুল্ম জন্ম নেয়ায় আখ কর্তনে সমস্য সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও এই আখ কর্তনে তারা লাভবান হতেও পারছে না। কারন শ্রমিকরা আগাছা বেষ্টিত সেই আখ কাটতে রাজি না হওয়ায় খামারে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তাই যোগসাজসের মাধ্যমে অগ্নিসংযোগ করে তরিঘড়ি করে জমি থেকে পোড়া আখ চিনিকলে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র অভিযোগ করেছে।

স্থানীয়রা জানায় গত সোমবার মাদারপুর এলাকায় অগ্নিকান্ডে ৫০বিঘা ও রবিবার দুপুরে ইক্ষু খামারে এক অগ্নিকান্ড প্রায় ১শ ৫০ বিঘা জমির আখ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ধারাবাহিক এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মিল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার অফিস সংলগ্ন গত রবিবার দুপুরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ মতে, দাবানলের মত খন্ড খন্ড আকারে এই আগুন খামারের বিশাল অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত আগুন যেকোন একপ্রান্ত লেগে অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এ বছরের অগ্নিকান্ডে বিভিন্ন জায়গায় খন্ড খন্ড আগুন লাগায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আখ কর্তনের সাথে সংশ্লিষ্টদের একাংশকে দায়ী করছেন।
গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আব্দুল হামিদ জানান, বিচ্ছিন্ন জায়গায় আগুন লাগায় ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট দীর্ঘ তিন ঘন্টার বেশি সময় ধরে চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনিও এই অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলিকে নাশকতা বলছেন।

গত ২৩ ডিসেম্বর খামারের চারা বটগাছ এলাকায় আগুন লেগেছিলো। এতে খামারের প্রায় ৫০ বিঘার মত জমির আখ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। এছাড়াও গত ৩ জানুয়ারি রাতে এ ধরণের একটি অগ্নিকান্ডে নওটাগাড়ী সংলগ্ন একটি জমির প্রায় ৭০ বিঘা জমির আখ পুড়ে যায়।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন আগুন লাগার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাঝে মধ্যেই এই অগ্নিকান্ডে চিনিকলের ক্ষতির পরিমান বৃদ্ধি পাচেছ। এখন অগ্নিকান্ডের কারন নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

রংপুর চিনিকল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনা নাশকতা কিনা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও বিশাল এলাকা জুড়ে খামারের অবস্থান হওয়ায় দোষী ব্যক্তিদের আটক করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় খন্ড খন্ড আগুন লাগার বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় স্বার্থানেষী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আগুন লাগাচ্ছে বলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ মনে করে।
এেিদক গত ৭ জানুয়ারি ও ২৩ ডিসেম্বর ইক্ষু খামারে আগুন লাগার বিষয়ে চিনিকল কর্তৃপক্ষ দুটি সাধারন ড্ইারি করলেও সেখানে কোন দোষী ব্যক্তির নাম বা তেমন কোন ক্ষতির কথা উল্লেখ করেনি বলে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অগ্নিকান্ড


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ