পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
আগামীকাল নতুন মন্ত্রীসভা গঠিত হতে যাচ্ছে। নতুন মন্ত্রীসভা কাদের নিয়ে গঠন করা হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সম্ভাব্য মন্ত্রী এবং বর্তমান মন্ত্রীদের মধ্যে কারা বাদ পড়তে পারেন, এ নিয়ে বিভিন্ন সূত্রের বরাতে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান মন্ত্রীসভা থেকে প্রায় এক ডজন মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন। অনেক ডাকসাইটে মন্ত্রীও এ তালিকায় থাকতে পারেন। তাদের পরিবর্তে নতুন মুখ হিসেবে দশ-বার জন যুক্ত হতে পারেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন মন্ত্রীসভায় বড় ধরনের চমক থাকতে পারে। তিনি বলেছেন, আমার কেন যেন মনে হয়, বিশাল একটা চমক আসবে। বিশাল জয়ের সঙ্গে বিশাল চমক থাকবে। ইতোমধ্যে মন্ত্রী হওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের অনেক নবীন-প্রবীণ বিভিন্নভাবে লবিং করে যাচ্ছেন। পুরণোরা মন্ত্রীত্ব টিকিয়ে রাখতে জোর তদবির করছেন। তবে চূড়ান্ত বিচারে নতুন মন্ত্রীসভা কাদের নিয়ে গঠিত হবে, তা একান্তই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন কাদের নিয়ে মন্ত্রীসভা গঠন করা হবে এবং তাঁর কাদের প্রয়োজন।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ে অনেক এমপির মধ্যে মন্ত্রী হওয়ার বাসনা জাগা স্বাভাবিক। বলা যায়, প্রত্যেক এমপিরই আশা, তিনি মন্ত্রী হবেন। মন্ত্রীসভায় ঠাঁই পেতে যে যার মত তদবিরও করছেন। মন্ত্রী হব কি হব না, চেষ্টা করতে দোষ কি! এমন আশা নিয়ে যার যার কানেকশন অনুযায়ী তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশাল জয় তাদের মধ্যে বড় আশা জাগিয়ে তুলেছে। ফলে মন্ত্রীত্বের ‘সোনার হরিণ’-এর পেছনে এমপিরা ছুটে চলেছেন। তবে মন্ত্রীসভায় যে সবার ঠাঁই হবে না কিংবা ঠাঁই দেয়া সম্ভব নয়, এটা জানা কথা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারের সম্ভাব্য মন্ত্রীসভা ষাট সদস্যের হতে পারে। এই ষাট জন কারা হবেন, তাই এখন দেখার বিষয়। প্রধানমন্ত্রীই এ সিদ্ধান্ত নেবেন। অন্যদিকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি শুরুতে গত সরকারের মতোই একই সঙ্গে মন্ত্রীসভা এবং বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা দিয়েছিল। তার দুই দিন পর দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন সংসদে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে থাকবে। এ ঘোষণায় দলটির যেসব এমপি মন্ত্রী হতে জোর লবিং করে যাচ্ছিলেন, তাদের মাথায় হাত। অবশ্য তারা এটাও আশা করছেন, দলের চেয়ারম্যানের মতামত যেভাবে সকাল-বিকাল পরিবর্তন হয়, মন্ত্রীসভা গঠনের আগমুর্হতেও তার এ কথার পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। মন্ত্রীসভা কাদের নিয়ে গঠিত হবে এবং কারা ঠাঁই পাবেন, তা আগামীকালই পরিস্কার হয়ে যাবে। তবে দেশের মানুষের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রীসভা যোগ্য, দক্ষ এবং সৎ ব্যক্তিদের নিয়েই গঠিত হবে। কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। বর্তমান সরকারের বিগত আমলে অনেক এমপি তাদের অপকর্মের কারণে বিতর্কিত হয়েছেন। এমনকি মন্ত্রীদের কারো কারো অদক্ষতা এবং বিতর্কিত বক্তব্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। এবার এ ধরনের বিতর্ক ও অভিযোগ উঠুক, তা দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে না। যে বিপুল বিজয় নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এবং বিগত দশ বছর ধরে দেশ পরিচালনা করেছে, তার অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন মন্ত্রীসভা জনবান্ধব এবং দেশের কল্যাণে গঠিত হবে-এটা সকলে প্রত্যাশা করছে। এর ব্যতিক্রম হলে তা জনগণের জন্য হতাশা বয়ে আনবে। আমরা আশা করি, দেশের গণতন্ত্র, সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির লক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি উপযুক্ত মন্ত্রীসভা প্রধানমন্ত্রী উপহার দেবেন।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগিত এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব ভিশন ও মিশন রয়েছে। তাঁর এই লক্ষ্য সফল করার জন্য একটি দক্ষ মন্ত্রীসভার বিকল্প নেই। সন্দেহাতীতভাবেই প্রধানমন্ত্রী নিজেও তা উপলব্ধি করেন। মন্ত্রী হওয়া নিয়ে অনেক ধরনের লবিং থাকা স্বাভাবিক। কেউ ঘনিষ্টতার সূত্রে, কেউ আত্মীয়তার সূত্রে কেউ বা জেলা কোটায় মন্ত্রীত্ব পাওয়ার চেষ্টা ও তদবির করছেন। তবে সবকিছুর উর্ধ্বে দক্ষ, সৎ ও যোগ্যদেরকেই প্রাধান্য দেয়া উচিত। উন্নয়নের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী যাদের যোগ্য মনে করবেন এবং যারা তাঁর লক্ষ্য এগিয়ে নিতে সততা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করবেন, তাদেরকেই তিনি মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। যাদের মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দেয়া হবে তাদের প্রত্যেকের অতীত ইতিহাস, কর্মদক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সক্ষমতা-এ বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার- বিশ্লেষণ করে নতুন মন্ত্রীসভা গঠিত হওয়া বাঞ্চনীয়। অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্কিত, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের কোনোভাবেই মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দেয়া উচিত হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।