Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারাদেশে শীতের দাপট

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

হাড় কাঁপানো উত্তরের হিমেল হাওয়ার সাথে শীতের দাপট অসহনীয়। মাঝ-পৌষে এসেই কুয়াশা ও শীতের কামড়ে জবুথবু শহর-নগর-বন্দর-গঞ্জ থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম-জনপদ। গতকাল (শনিবার) বাংলাদেশে তাপমাত্রার পারদ ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। ভারতের দার্জিলিংয়ে পারদ ২ থেকে ৩ ডিগ্রিতে, দিল্লীতে ৩.৫ ডিগ্রিতে নেমেছে। উপমহাদেশের প্রায় সর্বত্র শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। আজ (রোববার) ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনটিতে সমগ্র দেশে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে বিরাজ করতে পারে হিমশীতল বৈরী আবহাওয়া। গত তিন দিনে শীতের দাপট ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে সাথে হতদরিদ্র দিনমজুর, ছিন্নমূল মানুষের জীবনযাত্রায় দুর্ভোগ অসহনীয় মাত্রায় বেড়ে গেছে। তাদের আয়-রোজগারেও মন্দাদশা তৈরি হয়েছে।
তাছাড়া সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, পেটের পীড়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতাল ক্লিনিক, চিকিৎসকের চেম্বারে বিশেষত শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগীরা যাচ্ছেন অস্বাভাবিক হারে। ঘন কুয়াশাসহ শীতের তীব্রতায় ফল-ফসল, সবজি আবাদ ও উৎপাদনে কোল্ড ইনজুরি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত এখন কৃষককুল। এদিকে মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে সারাদেশে গরম কাপড়ের জন্য বিভিন্ন মার্কেট থেকে ফুটপাত পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষের প্রবল ভিড় দেখা গেছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, ঊর্ধ্বাকাশের হিমেল জেটবায়ুর নিম্নমুখী প্রবাহ বৃদ্ধি এবং সুদূর উত্তরের হিমশীতল সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে শীতল বায়ুপ্রবাহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ‘কপাট’ অতিক্রম করেছে। হু হু করে আসছে উত্তরের হিমেল বায়ুর স্রোত। এরফলে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশের উত্তর জনপদসহ অনেক জায়গায় মৃদু থেকে মাঝারি কোথাও কোথাও তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে চলতি সপ্তাহজুড়ে। এ মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে ডিসেম্বরের শেষের দিকে মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতার কথা জানানো হয়।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রংপুর বিভাগের রাজারহাটে ৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৫.৮, চুয়াডাঙ্গায় ৫.৬, বরিশালে ৬.৫. যশোরে ৬.৬, তেঁতুলিয়ায় ৫.৮, দিনাজপুরে ৬, বদলগাছিতে ৬.২, শ্রীমঙ্গলে ৭.৮, মাদারীপুরে ৬.৬, গোপালগঞ্জে ৬.২, টাঙ্গাইলে ৭, ময়মনসিংহে ৮.৩, চট্টগ্রামে ১০.৬, স›দ্বীপে ৮.৫, কুমিল্লায় ৮.২, ফেনীতে ৮.৫ ডিগ্রি সে.। এমনকি সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি। ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩.৫ এবং ১১.৮ ডিগ্রি সে.।
তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে গেলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ স্থানে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে মাঝারি তেকে তীব্র ধরনের।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। রাজশাহী, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। স›দ্বীপ, সীতাকুন্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ