রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
পূর্ববঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে উল্লেখ করা হয় সিরাজগঞ্জকে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এ জেলার গুরুত্ব অতীত থেকেই অনেক বেশি। আ.লীগ ও বিএনপির বাইরে জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাকের পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে মূল লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষে।
সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর) : সিরাজগঞ্জের উত্তর জনপদের যমুনা নদী বেষ্টিত গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন কাজীপুর উপজেলা। এ আসনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন মোহাম্মদ নাসিম। এখানে রয়েছে আ.লীগের একচ্ছত্র আধিপত্য।
অন্য দিকে, বিএনপি তাদের মাঠ সাজাতে এবারো হিমশিম খাচ্ছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক আন্দোলন ও সংগ্রামে এ অঞ্চলে বিএনপি তেমন নজির রাখতে পারেনি। বিএনপি থেকে এ আসনে কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপাকে প্রার্থী দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে আ.লীগের ঘাঁটি পরিচিত কাজিপুর-১-এ চেয়ারম্যান পদে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। সেই সাহস বলে যোগ্য প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বিএনপি সম্মুখভাগে এগিয়ে গিয়ে আ.লীগের দুর্গ ভাঙতে চায়। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ আসনে আ.লীগের বিজয় হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-২ (সদর একাংশ-কামারখন্দ) সরকার দলীয় আ.লীগের মধ্যে চলমান মৌন দ্ব›দ্ব আগামী নির্বাচনে দলটির বিজয়ের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ছাপিয়ে যেতে পারে এ সরকার আমলের সকল উন্নয়নের মাপকাঠি। অন্য দিকে, দীর্ঘ দিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বিএনপি মনে করে বরাবরের মতো আসনটি বিএনপির শক্ত ঘাঁটি।
এ আসনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ডা. হাবিবে মিলাত মুন্না। অন্য দিকে, বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় রুমানা মাহমুদকে।
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) : এই দুই উপজেলার প্রায় অর্ধেক রয়েছে আদিবাসী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস। সম্পূর্ণ নতুন মুখ হিসেবে ডা. আব্দুল আজিজকে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। পরিচিত মুখ না হওয়ায় পিছিয়ে রয়েছেন ভোট রাজনীতির মাঠে।
অপর দিকে, বিএনপিতে একক প্রার্থী রয়েছেন আব্দুল মান্নান তালুকদার। এ আসনে জামায়াতের ভোটব্যাংক বিএনপির সাথে যুক্ত হলে গলার কাঁটা হতে পারে আ.লীগের।
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) : এ আসনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম। কোন্দলের কারণে এখানে আ.লীগের দলীয় ও জাতীয় কর্মসূচি পৃথকভাবে পরিচালিত হয়। আ.লীগ প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত তা বলা যাচ্ছে না।
অপর দিকে, বিগত সময়ে বিএনপির রাজপথে নানা কর্মসূচি এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে কার্যত ভূমিকা না রাখলেও এ আসনে ২০ দলীয় জোটের ভ‚মিকা চোখে পড়ার মতো। এ আসনে জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দেয়ার ফলে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ উপজেলার অঙ্গসংগঠন তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
এখানে জামায়াতের রয়েছে বড় একটি ভোটব্যাংক। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও বেশ শক্ত।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) : সিরাজগঞ্জের অন্যতম আলোচিত অন্যতম সংসদীয় আসন সিরাজগঞ্জ-৫। এ আসনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় আব্দুল মজিদ মন্ডলকে। এ আসনে মন্ডল গ্রুপ ও বিশ্বাস গ্রুপের মধ্যে দ্ব›দ্ব-সঙ্ঘাত চরম পর্যায়ে। তাদের এ দ্ব›দ্ব না মিটলে মোমেন মন্ডলের এ আসনে বিজয় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে। অপর দিকে, বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলীম। এ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভোটব্যাংক যেমন রয়েছে, তেমন তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। আ.লীগের ত্রিমুখী দ্ব›দ্ব-সঙ্ঘাতের সুযোগ আর জামাতের ভোটব্যাংক যুক্ত হলে এ আসনে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) : এ আসনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন পান হাসিবুর রহমান স্বপন। তিনি নানা উন্নয়নমূলক কাজে গঠনমূলক ভ‚মিকা রাখেন এবং প্রশংসিত হন। বর্তমানে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার কারণে চয়ন ইসলাম গ্রুপের মধ্যে দ্ব›দ্ব রয়ে যায়। এ দ্ব›দ্ব নিরসন করে তাকে এগিয়ে যেতে হবে, অন্যথায় তিনি ব্যর্থ হবেন।
অপর দিকে, এ আসনে মনোনয়ন পান ডা. এম এ মুহিত। এ আসনে বিএনপির দ্ব›দ্ব নেই বললেই চলে। সুতরাং নৌকা ও ধানের শীষের লড়াইয়ে এ আসনে ডা. মুহিতের পাল্লা ভারী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপর দিকে, আ.লীগের প্রার্থী হাসিবুর রহমান স্বপন যেহেতু শ্রমিক নেতা ছিলেন, তারও কিছু ভোটব্যাংক রয়েছে এবং এলাকায় তার যথেষ্ট প্রভাবও রয়েছে। সুতরাং ভোট নিরপেক্ষ হলে এ আসনে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।