Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নৌকার প্রচারণায় জোর ঘরে হাজির ধানের শীষ

চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুই জোটের গণসংযোগে গতি, হয়রানি ভয়ভীতিতেও এগোচ্ছে বিএনপি জোট

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

প্রচারণা-গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, মিছিল-মাইকিংয়ের মধ্যদিয়ে বাধাহীন নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের নৌকা আর লাঙলের প্রার্থীরা। প্রার্থীদের অনেকেই বর্তমান সরকারের এমপি-মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। সেই সুবাদে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে পারছেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাÐের বিবরণ এবং নির্বাচনী ওয়াদা-অঙ্গীকারের কথা জনগণের সামনে সাবলীলভাবে তুলে ধরছেন। এরফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভোটের মাঠে-ময়দানে নৌকার জোরালো প্রচারণা সহজেই চোখে পড়ে।
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ অংশগ্রহণমূলক এই নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ পাওয়ার কথা বলা হলেও ধানের শীষের প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে, বাস্তবে তা মাঠে অনুপস্থিত। বৃহত্তর চট্টগ্রামে যখন-তখন পুলিশি তল্লাশি, ধরপাকড়, গোয়েন্দা নজরদারি হয়রানি, নতুন-পুরনো মামলায় ফাঁসানোর ভয় এবং প্রচারণা গণসংযোগ করতে গেলে আওয়ামী লীগের হামলা, হুমকি-ধমকিসহ নানামুখী বাধা-বিপত্তি। বন্দরনগরী ও জেলা চট্টগ্রাম এবং তিনটি পার্বত্য জেলায় বিএনপি জোটের পোস্টার ব্যানার চোখে পড়ে কদাচিৎ। এসব বাধা অতিক্রম করেই এগুচ্ছে বিএনপি জোট। ভয়কে জয় করার প্রত্যয়ে তারা অনড়-অবিচল।
তবে শত বাধা ভয়ভীতির মাঝেও থেমে নেই বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নির্বাচনী তৎপরতা। ধানের শীষের প্রার্থী ও তৃণমূলের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা প্রতিদিনই ভোটারদের বাড়িঘরে গিয়ে হাজির হচ্ছেন। যার যার এলাকা পাড়া-মহল্লার ভোটারদের কাছে গিয়ে ৩০ ডিসেম্বর পরিবারের ভোটার-সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে উদ্বুদ্ধ করছেন। দেশে গত দশ বছরের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি জোটের কর্মীরা দেশ ও দশের স্বার্থে, গণতন্ত্র কায়েমের লড়াইয়ে ধানের শীষের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করার উদাত্ত আহŸান জানাচ্ছেন।
ঘড়ির কাঁটা ৩০ তারিখের দিকে ছুটে চলার সাথে সাথেই বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৯টি আসনে দুই জোটের ভোটের ক্যানভাস আর গণসংযোগে এসেছে গতি। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা প্রতিটি ঘণ্টা এখন কাজে লাগাতে চান। তারা প্রতিটি এলাকায় গিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চান নিজ নিজ অঙ্গীকার। এরফলে পৌষের হিমেল হাওয়া তুচ্ছ করে ভোটের গরম হাওয়ার জোর বেড়েই চলেছে। শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জ, হাট-বাজারের সাধারণ মানুষের মাঝে ‘ভোটের হাওয়া কোন দিকে যাচ্ছে’ তা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা ও গুঞ্জনের শেষ নেই।
প্রচারণা-গণসংযোগের জোর বজায় রেখেও চট্টগ্রামের অধিকাংশ আসনের নৌকা আর লাঙলে আওয়ামী লীগ-মহাজোটের প্রার্থীরা জয়লাভের ব্যাপারে চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না। ফলে তারা ছুটছেন অবিরাম। মহাজোট সরকারকে আবারও ৫ বছরের জন্য জয়ী করার জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। অনেক আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ-অসন্তোষ, হতাশা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। তাদের কেউ কেউ ভোটের মাঠে নৌকা লাঙলের প্রার্থীর পাশে আসছেন, আবার কেউ কেউ নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৩ (স›দ্বীপ), চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুÐ), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী), চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী), চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ), খাগড়াছড়ি আসনে নৌকার মাঝি হতে গিয়ে বঞ্চিতরা এখন গলার কাঁটা হওয়ার ভয়েই আছেন এসব আসনের নৌকা-লাঙলের প্রার্থীরা। বঞ্চিতদের নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে নানামুখী গুঞ্জনও রয়েছে।
অন্যদিকে কয়েকটি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীরাও রয়েছেন অস্বস্তিতে। চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই), চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৩ (স›দ্বীপ), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী), চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী), চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ), পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া, ‘বিকল্প’ এবং মনোনয়ন বঞ্চিতদের নিয়ে বিএনপি জোটে কমবেশি টেনশন রয়েছে। কারণ তারা ভোটের মাঠে তেমন তৎপর নেই।
এদিকে মহানগরী ও জেলা চট্টগ্রামের বিএনপি জোটের প্রার্থী, নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, কোথাও ভোটের প্রচার-গণসংযোগ তৎপরতা চালিয়ে আসার পরই খবর পাই সেখানে পুলিশ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে গিয়ে হয়রানি করছে। এতে করে অহেতুক ভীতিকর অবস্থা তৈরি করা হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। প্রচার কর্মীদের বাধা দেয়া হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জোট

২২ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ