পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইপিজেডের শ্রমিকদের জন্য নতুন বেতনকাঠামো ঘোষণা করেছে রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। এই কাঠামোয় হেলপার পর্যায়ের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা (৭০ ডলার) থেকে বাড়িয়ে আট হাজার ২০০ টাকা বা ১০০ ডলার (১ ডলার ৮২ টাকা ধরা হয়েছে) নির্ধারণ করে গত বৃহস্পতিবার সার্কুলার জারি করা হয়, যা ইপিজেডের বাইরের গার্মেন্ট শ্রমিকদের চেয়ে ২০০ টাকা বেশি। বেতন বৃদ্ধির হার ৪৬ শতাংশ। যদিও সর্বশেষ ২০১৩ সালের বেতনকাঠামোতে এই পর্যায়ের শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল ৭৫ শতাংশ। বেপজা নিয়ন্ত্রিত আটটি ইপিজেডের ৪৭৩টি শিল্প-কারখানার পাঁচ লাখ চার হাজার ৪৬২ জন শ্রমিকের বেতন চলতি ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে বেপজা সূত্রে জানা গেছে। অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসের বেতন নতুন কাঠামোতেই পাবেন শ্রমিকরা।
গত ২৭ নভেম্বর বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান খান স্বাক্ষরিত সার্কুলারে মোট পাঁচটি খাতে আলাদা করে বেতনকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। কাঠামো বিশ্লেষণে দেখা যায়, ইপিজেডের গার্মেন্ট, জুতা, চামড়াজাত পণ্য, তাবু, প্লাস্টিক ও ক্যাপ কারখানার শিক্ষানবিশদের জন্য আগের চার হাজার ৪৮০ টাকা থেকে প্রায় সাড়ে ৩৯ শতাংশ বাড়িয়ে এবার ছয় হাজার ২৫০ টাকা (৭৬ দশমিক ২২ ডলার) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া হেলপার পর্যায়ে পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৪৬.৪২ শতাংশ বাড়িয়ে আট হাজার ২০০ টাকা (১০০ ডলার)। এ ছাড়া জুনিয়র অপারেটর, সিনিয়র অপারেটর ও হাই স্কিল বা দক্ষ অপারেটরদের বেতনও বাড়ানো হয়েছে যথাক্রমে ৪১.৩০, ৩৯.২১, ৩৭.৩৬ এবং ৩৩.৪৮ শতাংশ হারে।
এ ছাড়া ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস, সফটওয়্যার, লেন্স ও গ্লাস, অটোমোবাইল, বাইসাইকেল, গল্ফ শেফট, ভারী শিল্প, টেক্সটাইল, কেমিক্যাল, আসবাব, কৃষিজাত শ্রমিকদের জন্যও আলাদা আলাদা বেতনকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া পিসরেট ভিত্তিক টাওয়াল ও সোয়েটার ফ্যাক্টরির শ্রমিকরাও এই কাঠামোর আওতায় রয়েছেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের দুপুরের খাবার এবং যাতায়াত ভাতা আগের মতো বহাল রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেতনকাঠামো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শ্রমিকদের মোট বেতন যে হারে বেড়েছে বেসিক সে হারে বাড়েনি। হেলপার পর্যায়ের একজন শ্রমিকের পাঁচ বছর আগের কাঠামোয় বেসিক ধরা হয়েছিল তিন হাজার ৬০০ টাকা। নতুন কাঠামোয় বেসিক ধরা হয়েছে চার হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ বেসিক বেড়েছে ২৫ শতাংশ। যদিও মূল বেতন বেড়েছে ৪৬ শতাংশের বেশি। শিক্ষানবিশ পর্যায়ে বেসিক বেতন বেড়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ। বেসিক দুই হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা বাড়িয়ে তিন হাজার ২০০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে এই ঘাটতি মেটানো হয়েছে বাড়িভাড়া আর চিকিৎসাভাতা বাড়িয়ে। ইপিজেড শ্রমিকদের বাড়িভাড়া আগে ছিল বেসিকের ৪০ শতাংশ। এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ শতাংশ। একইভাবে সবার জন্য চিকিৎসাভাতাও ৫৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৪৫০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। নতুন বেতনকাঠামোর সার্কুলার পাওয়ার পর থেকেই সব কারখানার হিসাব ও মানবসম্পদ বিভাগ ব্যস্ত এখন কর্মীদের নতুন বেতনকাঠামো তৈরিতে। তবে আগামী মাসে নতুন বেতন দিতে গিয়ে বড় ধরনের ধাক্কা সামলাতে হবে বলে মনে করছেন ইপিজেডের কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানভিত্তিক বিএসকেএলের ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) কামরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমাদের ১৮শ শ্রমিকের কারখানায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে নতুন বেতনকাঠামোর কারণে। অবশ্য দুই বছর আগে থেকেই আমরা প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটিয়েছি আমাদের কারখানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।