পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে কিছুদিন কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সাঈদ আবেদন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামিপক্ষে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম। বাদীপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন মামলা পরিচালনা করেন। এদিকে টানা তিনদিনের আন্দোলন শেষে শিক্ষকদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাস ও পরীক্ষার হলে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে আন্দোলনকারীরা। গতকাল বিকেলে শিক্ষকদের সাথে ছাত্রীদের এক বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীরা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
আদালত ও পল্টন থানা সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার এবং শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে আসামী করে একটি মামলা করেন। বুধবার রাতে উত্তরার একটি হোটেল থেকে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব) একটি টিম। হাসনা হেনা মামলার তিন নম্বর আসামি।
এ বিষয়ে ডিবির (পূর্ব) উপকমিশনার খন্দকার নুরুন্নবী বলেন, নির্দেশনা পাওয়ার পর অভিযুক্ত শিক্ষকদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করেন ডিবি পুলিশ। রাত ১১টার দিকে উত্তরা থেকে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওই শিক্ষিকা গ্রেফতার থেকে বাঁচতে বাসা থেকে পালিয়ে হোটেলে আশ্রয় নেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, গতকালও টানা তৃতীয় দিনের মতো বেশ কিছু ছাত্রী শিক্ষা ভিকারুননিসা মূল ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। আন্দোলনকারীরা বলেন, ৬ দফা দাবি না মানা হলে ক্লাস-পরীক্ষাসহ স্কুলের কোনও কার্যক্রমে তারা যোগ দেবে না। ছাত্রীরা বলেন, দাবিগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। বাকিগুলোরও দ্রæত বাস্তবায়ন করতে হবে।
কয়েকজন ছাত্রী জানায়, আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনাকারী হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, শাখাপ্রধান ও এক শ্রেণি শিক্ষককে চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। তিনজনকেই বুধবার বরখাস্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপে তারা সন্তুষ্ট। তাদের অন্য দাবির মধ্যে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ এবং অরিত্রীর বাবা-মায়ের কাছে কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি রয়েছে। এছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন নয়, কথায় কথায় টিসির হুমকি, প্রতিটি ক্লাসে মনোবিদের ব্যবস্থা রাখা, আন্দোলনকারীদের কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়াসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রæতি চেয়েছে ছাত্রীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন শিক্ষকরা। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষকদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুক্রবারের পরীক্ষা ও পরবর্তী ক্লাসে ফিরে যাচ্ছেন তারা।
প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শৈষে প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রী আনুষকা ও অধরা সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষকরা আমাদের কথা দিয়েছেন। যে সব দাবি পূরণ করা সম্ভব সেগুলো শিক্ষকরা পূরণ করবেন। আর যেগুলো আইনি বিষয়, সেগুলো আইনের মাধ্যমে সমাধান হবে। ছাত্রীরা বলেন, আমরা শিক্ষকদের আশ্বাসে বিশ্বাস রেখেছি। আজকের (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় আমরা অংশগ্রহণ করব এবং পরবর্তী ক্লাসে সবাই ফিরে যাব। এছাড়া গ্রেফতার হওয়া শিক্ষিকা হাসনা হেনার মুক্তির দাবি জানিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় তারা হাসনা হেনাকে নির্দোষ দাবি করেন।
এদিকে, আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন স্কুলের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান গোলাম আশরাফ তালুকদার। তিনি বলেন, আমাদের একজন শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। একইসাথে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহŸান জানান। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের বৃহৎ স্বার্থে যদি আমার পদত্যাগ করতে হয় তাহলে অবশ্যই করবো। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি তিনি কমিটির বৈঠকে তুলবেন বলে জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।