রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে লক্ষীপুরে আ.লীগ ও বিএনপি দুই জোটের মধ্যে প্রার্থী নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ভোটারসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাদের চোখ এখন ৮ ডিসেম্বরের দিকে। প্রত্যাহারের পর দৃশ্যমান হবে কে আসল প্রার্থী। জেলার তিনটি আসনেই বড় দুই দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।
দলীয় ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আ.লীগের লক্ষীপুর সদর আসন ছাড়া বাকি তিনটি আসন মহাজোটকে দেয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত। লক্ষীপুর-৪ রামগতি আসনে আ.লীগের দলীয় এমপি আব্দুল্যা আল মামুন ও মহাজোটের (বিকল্পধারা) মেজর (অব.) মান্নানকে নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। ঘোষণা না দেয়ার কারণে এ দুইজনকে নিয়ে বিভিন্ন রকম বক্তব্য শুনা যাচ্ছে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে। ঠিক একইভাবে বিএনপির দলীয় সাবেক এমপি এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান ও ঐক্যজোটের (জাসদ রব) আ স ম আব্দুর রবকে নিয়ে নানা কথা শুনা গেলেও বিএনপি থেকে কোনো মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। তাই এ আসনটি ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আ স ম আব্দুুর রব অনেকটা নিশ্চিত। মহাজোট থেকে মেজর (অব.) মান্নানকে নিশ্চিত না করায় রামগতির ভোটারসহ নেতাকর্মীরা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
অপর দিকে, বিএনপি তাদের জোটের থেকে লক্ষীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে এলডিপির শাহদাত হোসেন সেলিম, লক্ষীপুর-২ (রায়পুর ও সদর আংশিক) আসনে বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া, লক্ষীপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপি থেকে কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, লক্ষীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে জেএসডি থেকে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব প্রায় শতভাগ নিশ্চিত থাকলেও নিজেদের মধ্যে একাধিক প্রার্থী থাকায় তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে বলে জানান বিএনপি জোটের নেতাকর্মীরা।
রোববার মনোনয়ন বাছাইয়ের শেষ দিন ছিল। লক্ষীপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক এলায়েন্স জোটের (জাকের পার্টি) লায়ন এম এ আউয়ালসহ ছয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাতিলকৃত অন্যরা হচ্ছেন- ১ আসন থেকে স্বতন্ত্র মাহাবুল আলম, ২ আসনে জামায়াতের আমীর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল আমিন ভূঁইয়া, ফয়েজ ভূঁইয়া, ৪ আসনে আবদুল মতিন চৌধুরী ও খালেদ সাইফুল্লাহ। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, ঋণখেলাপি ও কাগজপত্র সঠিক না থাকায় যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল।
লক্ষীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে আ. লীগের ড. আনোয়ার হোসেন খান, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপি থেকে হারুনুর রশিদ কমিশনার, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাহাব উদ্দিন তুর্কি (বিএনপির বিদ্রোহী), জেএসডির এম এ গোফরান, জাতীয় পার্টির জাকির হোসেন পাটোয়ারী, বিএনএফের সিরাজ মিয়া, ইসলামী আন্দোলনের রফিকুল ইসলাম, এনএনপির মোশারেফ হোসেন, (জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী), আলমগীর হোসাইন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ রেজাউল করিমসহ ১১ জন।
লক্ষীপুর-২ (রায়পুর ও সদর আংশিক) আসনে জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি বর্তমান এমপি মোহাম্মদ নোমান, বিএনপির জেলা সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জেএসডির সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল, বিকল্প ধারার শাহ আম্মদ বাদল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শেখ মোহাম্মদ ফায়িজ উল্ল্যাহ শিপন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ মো. হেলাল উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শাহজাহান পাটোয়ারী, জেএসডির এম এ ইউছুফ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শহীদ ইসলাম পাপুলসহ ১০ জন।
লক্ষীপুর-৩ (সদর) আসনে আ.লীগের পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল ও জেলা আ.লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার (আ.লীগের বিদ্রোহী), বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, জেএসডির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল, গণফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্ল্যাহ, নুর মোহাম্মদ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, এনডিএমের মোহাম্মদ উল্ল্যাহ, ইসলামী আন্দোলনের মোহাম্মদ ইব্রাহীম, এনপিপি সেলিম মাহমুদসহ ১১ জন।
লক্ষীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে বিকল্পধারা একাংশের মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, আ.লীগের বর্তমান এমপি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, জেএসডির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তানিয়া রব, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী, বাসদের মিলন কৃষ্ণ মন্ডল, ইসলামী আন্দোলনের শরীফুল ইসলাম, স্বতন্ত্র মাহমুদা বেগমসহ আটজন।
এদিকে আ.লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীরা উন্নয়ন স্রোতধারাকে সামনে রেখে নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনা রয়েছে জানিয়ে নির্বাচনে করছেন বলে জানান। আর বিএনপির প্রার্থীরা আন্দোলনের অংশ বিশেষ নির্বাচনে যাওয়া ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।