বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ব্যাগেজ পার্টির কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে কমে গেছে আমদানি বাণিজ্য। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে। জানা গেছে, ভারত থেকে আসা ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকায় রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যাগেজ সুবিধায় প্রতিনিয়ত আনছেন অতিরিক্ত মালামাল। গত ২ মাসে বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস চেকপোস্টে অবৈধ ব্যাগেজ পার্টির কাছ থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে বিদেশ ভ্রমনকর বাবদ রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। গত ২ মাসে ৮২৬ টি ডিটেনশন মেমো (সাময়িক আটক পত্র)’র মাধ্যমে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশী ও ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীদের ব্যাগেজ সুবিধার অতিরিক্ত মালামাল জব্দ করে সেখান থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। জব্দ মালামালের মধ্যে রয়েছে শাড়ী, থ্রী-পিচ, জুতা, কসমেটিকস, সাবান, চকলেট, আগরবাতি এবং বিভিন্ন ব্যান্ডের ভারতীয় মদ, মোটর পার্টস এবং আমদানী নিষিদ্ধ ওষুধ। তবে জব্দ মালামালের ডিটেনশন মেমো দেয়া হচ্ছে। আর মালিকবিহীন মালামাল সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হচ্ছে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে বহির্গামী যাত্রীর সংখ্যা ছিলো বাংলাদেশী ৭৯ হাজার ৪ শত ১৭ জন, বিদেশী ৯ হাজার ৫৬ জন এবং আগমনী যাত্রীর সংখ্যা ছিলো বাংলাদেশী ৮০ হাজার ৮ জন এবং বিদেশী যাত্রীর সংখ্যা ছিলো ৮ হাজার ৭ শত ৩৮ জন। ভ্রমনকর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭ শত ৬৩ জন যাত্রীকে। এ সময় ব্যাগেজ ব্যবসায়ীদের ৮২৬টি ডিটেনশন মেমোর মাধ্যমে মালামাল আটক করা হয়েছে।
তাছাড়া অক্টোবর মাসে এ পথে বহির্গামী যাত্রীর সংখ্যা ছিলো ৯৬ হাজার ৯ শত ১৪ জন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশী ৮১ হাজার ২শ’ এক জন, বিদেশী ১৩ হাজার ৬শত ১২ জন এবং আগমনী যাত্রীর সংখ্যা ছিলো বাংলাদেশী ৯২ হাজার ৫৭ জন এবং বিদেশী ১২ হাজার ১ শত ৭০ জন। ভারত গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে বিদেশ ভ্রমনকর বাবদ রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ব্যাগেজ ব্যবসা ছিল ওপেন সিক্রেট। ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হওয়ায় কাস্টমস এবং বিজিবি‘র অভিযান অব্যাহত রাখে। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার ভুয়া পরিচয় দিয়ে এ সব সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রতিদিন প্রায় ১’শ থেকে ২’শ ব্যাগেজ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জন প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আদায় করে আসছিল। ফলে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের নতুন কমিশনার বেলাল চৌধুরী যোগদানের পরপরই পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানি বন্ধ, ব্যাগেজ পার্টির চোরাচালানী ব্যবসা বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়।
বেনাপোলের কয়েকজন আমদানীকারক জানান ব্যাগেজ পার্টির অবৈধ ব্যবসার কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ছোট ছোট আমদানীকারকরা ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে ব্যাগেজ ব্যবসায়ীরা। ব্যাগেজ ব্যবসায়ীদের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হলে পুনরায় আমদানি বৃদ্ধি পাবে।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে যাত্রী সেবা অধিকতর নিশ্চিত করতে কাস্টমস কর্মকর্তারা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। কাস্টমস চেকপোস্টকে ব্যবহার করে অসাধু ব্যাগেজ পার্টি যাতে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক আছি। ব্যাগেজ ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় কিছু ব্যাগেজ ব্যবসায়ী কাষ্টমস এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অপপ্রচার চালাতে তারা ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করছে। ইতোমধ্যে ঐ সব দালালদের নামে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।