চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর পবিত্র জীবন হলো আমাদের সকলের জন্য সর্বোত্তম ও সর্বোৎকৃষ্ট জীবনাদর্শ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ও মূহুর্তে প্রয়োজন প্রিয় নবীর প্রিয় সুন্নত মুতাবিক জীবন পরিচালনা করা এবং তাঁর নূরানি আদর্শে আলোকিত জীবন গড়া। আল্লাহ পাক বান্দার ইবাদত কবুল হওয়ার মাফকাঠী রূপে নির্ধারন করেছেন তাঁর রাসূলের তরীকাকে। যে আমল হবে কেবল রাসূলের তরীকা অনুযায়ী কেবল মাত্র সেই আমলগুলো আল্লাহ পাকের নিকট ইবাদাত হিসেবে কবুল হবে। যেসব আমল আল্লাহ পাকের হুকুম ও তাঁর রাসূলের তরীকা অনুযায়ী হবে না, সেসব আমল আল্লাহ পাকের নিকট কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। যেমন আল্লাহ পাকের বানী (আপনি বলুন! যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমাকে অনুসরণ করো আল্লাহও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদের গুনাহ্ সমূহ মাফ করে দিবেন। আল্লাহ ক্ষমাকারী দয়ালু। (সূরা আল ইমরান-৩১) অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- যে রাসূলের অনুসরণ করলো সে আল্লাহ তায়ালারই অনুসরণ করলো (সূরা নিসা-৮০)। সুতরাং ইবাদত কবুল হওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো প্রিয় রাসূলের অনুসরণ করা। তাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর পথ ও পদ্ধতিকে পরিপূর্ণভাবে পালন করা এবং শক্তভাবে আঁকড়ে ধরা। সুন্নাতের প্রতি যত্নবান হওয়া।
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম রাঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছন, যে আমার সুন্নাতকে শক্ত করে ধরবে এবং দৃঢ়ভাবে তার উপর আমল করবে সে নাজাত পাবে। আর যে সীমালঙ্গন করবে সে সঠিক দ্বীন থেকে সরে যাবে। আর যে সুন্নাতের খেলাফ করবে সে ধ্বংস হবে। ( আল ইবনাতুল কুবরা লি ইবনে বাত্বত্বা হাদীস নং- ১৫০) দুঃখজনকভাবে সত্য এবং পরিতাপের বিষয়!! আজ আমরা প্রিয় নবীর প্রিয় সুন্নাত সমূহকে ছেড়ে দিয়ে বিজাতীয় কৃষ্টিকালসারকে জীবনের মডেল হিসেবে গ্রহন করেছি। খাওয়া-দাওয়া হতে শুরু করে পোশাক-পরিচ্ছেদ পর্যন্ত তাদের (বিধর্মীদের) অনুকরণ করছি।
হাদীসে আসছে- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে দায়লামী (রহ) বলেন, আমার কাছে পৌঁছেছে, দ্বীন তরক করা হবে সুন্নত তরকের মাধ্যমে। দ্বীন উঠে যাবে এক একটা সুন্নত উঠে যাওয়ার মাধ্যমে যেমন রশী ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। (মুকাদ্দামা সুনানে দারেমী হাদিস নং-৯)। প্রত্যেক মানুষ কারো না কারো অনুসরণ করে। আর কারো অনুসরণ না করলেও নিজ নফসের অনুসরণতো করে। কিন্তু নফসের অনুসরণ বান্দার ধ্বংস ডেকে আনে। আর যারই অনুসরণ করুক না কেন, প্রিয় রাসূলের চাইতে উত্তম ব্যক্তি এবং তাঁর আদর্শের চাইতে উত্তম কোনো আদর্শ নেই। যেমন হযরত আলী (রা:) বলেছেন, তোমরা অনুসরণের জন্য তোমাদের রাসূলের সুন্নাতের চাইতে উত্তম কোনো জিনিস পাবে না (মুসনাদে আহমদ হাদীস নং-৯৩২)। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) বলেছেন, সুন্নাত মুতাবিক সাধারণ আমল বিদআতের কষ্টকর আমল থেকেও উত্তম। (দারেমী)। সুন্নাত তরককারীর প্রতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের লানত। যেমন হযরত আয়েশা (রা:) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- এমন শ্রেণীর মানুষ রয়েছে যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা লানত করেছেন প্রাত্যেক নবী ও তাদেরকে লানত করেছেন। তারা হলো,( ১) আল্লাহর কিতাবে বুদ্ধিকারী। (২) আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকদীর নির্ধারিত এ কথার অধিকারী। (৩) যে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করে, আল্লাহ যাকে অসম্মানিত করেছেন তাকে সম্মানিত করে আর আল্লাহ যাকে সম্মানিত করেছেন তাকে অসম্মানিত করে। (৪) যে আল্লাহর হারামকৃত বÍকে হালাল মনে করে। (৫) আমার (নবীর) বংশ, পরিবার ও নিকটতম আত্মীয় যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা হারাম করেছেন তাঁদেরকে হালাল মনে করে। (৬) যে আমার সুন্নাতকে ছেড়ে দেয়। (তিরমিযী, হাদীস নং- ২০৮০)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাঁর হুকুমে এবং তাঁর রাসূলের অনুসরণে চলার যেন তাওফীক দান করুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।