Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিরিয়ায় মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৪৩

ইদলিবে হামলা জোরদার করছে সিরিয়া বাহিনী

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় একটি গ্রামে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। শনিবার ফোরাত নদীর পূর্বতীরের হাজিনের কাছে বুকান এলাকায় চালানো হামলায় এরা নিহত হয় বলে জানিয়েছে আইএস ও স্থানীয় কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। এক সংবাদ সম্মেলনে জোট বাহিনীর মুখপাত্র বুকানে হামলার কথা নিশ্চিত করলেও সেখানে বেসামরিক হতাহতের কথা অস্বীকার করেছেন। জোটের মুখপাত্র কর্নেল সিন রায়ান বলেছেন, বেসামরিক হতাহত এড়ানোর জন্য জোট আইএসআইএসের জঙ্গিদের শনাক্তে ও সঠিক লক্ষ্যে হামলা চালাতে অত্যন্ত সতর্র্কতা অবলম্বন করে। আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক একটি মেডিকেল সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাও ওই হামলায় বহু বেসামরিক নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। অপরদিকে, সিরিয়ার ইদলিবে সরকারি বাহিনী সামরিক অভিযান জোরদার করছে বলে জানিয়েছে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী। তাদের অভিযোগ সেনামুক্ত অঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও তাদের মিত্ররা হামলা শুরু করেছে। রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সেই অঞ্চলে অস্ত্রবিরতি চলছিলো বলে দাবি বিদ্রোহীদের। সিরিয়ার ইদলিব টিকে থাকা বিদ্রোহীদের সর্বশেষ শক্তিশালী অবস্থান সেখানে অস্ত্রবিরতির উদ্দেশ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন, ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বৈঠকে বসলেও পুতিন ও রুহানি এর বিরুদ্ধে যান। পুতিনের ভাষ্য, ইসলামিক স্টেট ও জাভাত আল নুসরার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো তো আর এই অস্ত্র বিরতির চুক্তি মেনে চলবে না। তরাপরও সেপ্টম্বরে সেখানে সেনামুক্ত অঞ্চল তৈরির ব্যাপারে একমত হয় রাশিয়া ও তুরস্ক। বিদ্রোহীরা জানায়, বিদ্রোহী অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে সেনাবাহিনী মর্টার ও রকেট হামলা শুরু করেছে। হামার উত্তরাঞ্চলীয় ও ইদলিবের দক্ষিণাঞ্চলীয় ওই শহরগুলো সেনামুক্ত অঞ্চলের আওতায় পড়েছে। সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে আড়াই লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীতধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া-ইরানও আইএস এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ছায়াযুদ্ধে মেতে উঠেছে বলে অনেকেই মনে করেন। মার্কিন জোট থেকে এখনও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এর প্রধান রামি আবদুর রহমান বলেন, শনিবার আবু আল হাসান গ্রামে ওই হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, ওই হামলায় ১৭ শিশু ও ১২ নারীসহ ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। তবে নিহত পুরুষরা আইএস সদস্য কি না তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। সিরীয় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানাও বিমান হামলার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে। তবে তারা নিহতের সংখ্যা জানিয়েছে ৪০ জন। আইএস সংশ্লিষ্ট বার্তা সংস্থা আমাকও জানিয়েছে এই হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১৯১ জন বেসামরিক নিহতের কথা নিশ্চিত করেছে সিরিয়ান অবজারভেটরি। এরমধ্যে অনেক আইএস পরিবার ছিলো। রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়া

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ