পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনে সভাপতি পদে বিশাল জয় পেয়েছেন কাজী মো. সালাউদ্দীন। তিনি তৃতীয়বারে মতো এ পদে নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী হিসেবে ঘোষিত হবার পর সালাউদ্দীন তার প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ জয় ফুটবল এবং সত্যের। তার পরবর্তী করণীয় কি হবে তা তিনি দু’দিন পরে জানাবেন বলে সাংবাদিকদের অবহিত করেছেন। নির্বাচনে পরাজিত বাঁচাও ফুটবল পরিষদের প্রার্থী সংসদ সদস্য আশরাফ খান পোটন নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিয়েছেন। তিনি অবশ্য আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, যদি তিনি নির্বাচনে হেরে যান তাহলেও সালাউদ্দীন ডাকলে তার ডাকে সাড়া দেবেন এবং ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করবেন। নির্বাচনী ফলাফল অনুযায়ী, শুধু সালাউদ্দীন জেতেননি তিনটি সদস্য পদ বাদে বাকি ১৫টি আসনে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে তার পরিষদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাবিথ আউয়াল জয় লাভ করেছেন। এদিকে বাফুফের এবারের নির্বাচনকে ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেছেন ফুটবল বোদ্ধারা। তারা একে ফুটবলের বিজয় হিসেবে দেখছেন। স্বাধীনতার পর এমন বিজয় আর হয়নি বলেও তারা মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পারফরম্যান্স বেশ খারাপ হওয়ার সালাউদ্দীনের তীব্র সমালোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশে ফুটবল অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। গ্রামে-গঞ্জে, মাঠে-ঘাটে সর্বত্রই ফুটবল খেলা দেখা যায়। ফুটবল নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কোন কমতি না থাকলেও নিকট অতীতে এক সাফ ফুটবলে একবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া উল্লেখ করার মতো তেমন সাফল্য দেখা যায়নি। বরং ফুটবল নামেই তার মান যেমন হারাচ্ছে, তেমনি জনপ্রিয়তাও হারাচ্ছে। এ পরিস্থিতি উত্তরণে নানা পরিকল্পটনার কথা শোনা গেলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। সস্প্রতি চীন আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার সুনির্দিষ্ট অবদান ও বিজয় ছিনিয়ে আনার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা ঘোষণা করেছে। আমাদের ফুটবল কেন পিছিয়ে রয়েছে তার কোন সুনির্দিষ্ট জবাব পাওয়া যায় না। এর দায় অবশ্যই ফুটবল ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের উপরই বর্তায়। এক সময় অমাদের ক্রিকেট নিয়েও নানা বিরূপ মন্তব্য শোনা যেত। সৌভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাম করেছে, আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে এবং এধারা অব্যাহত রেখে চলেছে। কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আগ্রহ আন্তরিকতা এবং খেলোয়াড়দের ঐকান্তিকতার ফলেই এবিজয় অর্জন ও তা ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে এবং হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন ক্রিকেট নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে। তারা মনে করছে, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া এখন আর খুব দূরে নয়। অথচ এক সময়ে ক্রিকেটের অবকাঠামো বলতে কিছু ছিল না। সে তুলনায় ফুটবল যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা লাভ করেছিল। তারপরও তা ফুটবলামোদীদের প্রত্যাশা পূরণে খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারেনি। সেবিবেচনা থেকেই বিপুল ভোটে বাংলাদেশের কিংবদন্তীর ফুটবলার সালাউদ্দীন ভোটারদের আস্থা পেয়েছেন। একে ধরে রাখতে হলে তার এবং তার পরিষদের করণীয় রয়েছে অনেক কিছু। ফুটবলের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তার কার্যকর ভূমিকা ফটবলপ্রেমীরা দেখতে চাইবে। এদেশে ফুটবলের সাথে জাতীয় সংস্কৃতির সম্পর্ক রয়েছে। ফুটবলকে জননন্দিত করে তোলার দায়িত্ব মূলত কর্তৃপক্ষের উপরই বর্তায়।
আধুনিক বিশ্বে একটি দেশকে সত্যিকার অর্থে তুলে ধরতে ক্রীড়ার কোন বিকল্প নেই। বিশ্ব ফুটবল অঙ্গনে প্রবেশ করতে পারলে বাংলাদেশের ভামর্যাদা আকাশচুম্বী পর্যায়ে পৌঁছত। আমাদের দেশের ব্যাপক সংখ্যক জনগণ এখনও অধীর আগ্রহে তাদের প্রিয় ফুটবল দলের খেলা টিকিট কেটে দেখে থাকেন। সে অর্থে এ খেলার অর্থনৈতিক গুরুত্বও কম নয়। ব্যক্তিগত দলাদলি, রেষারেষি ভুলে ফুটবলের প্রকৃত উন্নয়নে বর্তমান নেতৃত্বসহ সকলেই আন্তরিক থাকবে, এটাই জনগণ প্রত্যাশা করে। এ বিজয় যে ফুটবলের সেটা প্রমাণ করতেই বর্তমান নেতৃত্ব বিশেষ করে কাজী সালাউদ্দীন ফুটবলকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাবেন এমন আস্থা আমরা রাখতে চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।