Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পোকামাকড় দিয়ে হবে উন্নত প্রযুক্তির চাষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ৯:০০ পিএম

ক্ষতিকর পোকা-মাকড় থেকে ফসল রক্ষা করতে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার না করে বিকল্প উপায় নিয়ে অনেকদিন ধরেই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার পোকা-মাকড় দিয়েই পোকা-মাকড় ধ্বংস করে ফসল বাঁচানোর বিকল্প পদ্ধতি তুলে ধরেছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা। খবর ডয়েশ্চ ভ্যালে।
বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি শহরের ক্ষেতে নিয়মিত কীটপতঙ্গ পর্যবেক্ষণ করেন৷ কীটপতঙ্গ দূর করার বদলে কৃষিকাজকেই তাদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন তারা৷ তারা ক্ষেতের আলের দিকে সবার আগে নজর দেন৷ ঝোপঝাড় ও জংলি ফুল দিয়ে সাজানো সেই সীমানা প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে অসংখ্য পোকা-মাকড়৷
বন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসর টোমাস ড্যোরিং ও তার টিম এভাবে ক্ষেতে আরও কীটপতঙ্গ আকর্ষণ করতে চান৷ সেই ঝোপের মধ্যে ৫০টিরও বেশি প্রজাতির গুবরে পোকা শীতযাপন করে৷
প্রো. ড্যোরিং বলেন, ‘এটা এক ধরনের গুবরে পোকা, সেটি নানা রকম অনিষ্টকারী কীট খেয়ে ফেলে৷ তাদের বিশাল ঝাঁক ক্ষেতের উপর উড়ে বেড়িয়ে সেই সব কীট ধ্বংস করে৷ এই গুবুরে পোকা সতের সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে৷ মূলত এটির মুখের কাছে থাকা অস্বাভাবিক বড় চোয়ালের কারণে এটিকে এত লম্বা মনে হয়৷
কৃষি পরিবেশবিদরা ক্ষেতের ধারে এমন সব উপকারী পোকামাকড়ের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেন, যারা ক্ষতিকারক কীট খেয়ে ফেলে৷ ফলে কীটনাশকের আর প্রয়োজন পড়বে না বলে তাদের আশা৷ প্রো. টোমাস ড্যোরিং বলেন, ‘এখানেই লেডিবাগ প্রজাতির শূককীট রয়েছে, যারা অ্যাফিড বা জাবপোকা খায়৷ সার্বিক একটা প্রণালী হিসেবে আমরা উপকারী পোকামাকড়ের মাধ্যমে ক্ষতিকারক কীটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনতে পারি৷ তবে তাদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হবে না৷ তা সত্ত্বেও আমরা গোটা কাঠামোকে স্থিতিশীল করে তুলতে পারি৷’
ক্ষেতের ধারে গবেষকরা ফুলের সারি সৃষ্টি করেছেন৷ ফুলগুলি একসঙ্গে ফোটে না, একের পর এক তাদের বিকাশ ঘটে৷ ফলে পোকামাকড়ের খাদ্যের অভাব হয় না৷ প্রো. ড্যোরিং বলেন, ‘এখানে যেমন দেখা যাচ্ছে, নানা ধরনের পোকা এই ফুল ব্যবহার করতে পারে৷ ক্ষেতের ফাঁক দিয়ে ট্রাকটর চলে৷ ফলে সেখানকার মাটি সাধারণত বেশ শক্ত হয়৷ সে কারণে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এর তেমন উপযোগিতা নেই৷ মাটির এমন বৈশিষ্ট্যের ফলে সেখান থেকে আয়ের অঙ্ক কম৷ আয়ের চিন্তা না থাকায় সেই জায়গা পোকামাকড় আকর্ষণ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে৷’
শুধু ধারে নয়, এই ক্ষেতের উপরের অংশও জার্মানির বেশিরভাগ ক্ষেতের থেকে ভিন্ন৷ গবেষকরা আগাছা ধ্বংস করতে কোনো রকম রাসায়নিক ব্যবহার করেন না৷ ফলে পোকারা ক্ষেতের মধ্যেও খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে, যেমন বীজ, পরাগ, ক্যামোমিল ইত্যাদি
ক্ষেতের ধারে ফুলের মেলা, কোনো কীটনাশক নয়, সারের পরিমাণও কম এবং ফসল পরিবর্তনের মতো পদক্ষেপ বেশ সফল হচ্ছে৷ প্রচলিত কৃষিক্ষেত্রের তুলনায় এখানে জীববৈচিত্র্য প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি৷ সেইসঙ্গে পরাগবহনকারী পোকাদের মাত্রা ৫০ শতাংশ বেশি৷



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাষ

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৫ আগস্ট, ২০২২
২৩ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ