Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উত্তর রাখাইনে এখনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে : জাতিসংঘ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা স্থগিত করে পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেত বলেছেন, উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর এখনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে বলে নিয়মিতভাবে জানতে পারছে জাতিসংঘ হাইকমিশন। যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, গুম, গ্রেপ্তারের পাশাপাশি চলাচল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা গ্রহণের স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ আরোপ। বাশেলেত বলেন, রোহিঙ্গাসহ অভ্যন্তরীণভাবে বিচ্ছিন্ন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ রাখাইনে রয়েছে। আরও পাঁচ হাজার নো ম্যান্স ল্যান্ডে রয়েছেন। এছাড়া চার হাজারেরও বেশি অং মিঙ্গালার ওয়ার্ডে রয়েছেন, যেখানে তারা বিস্তৃত সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছেন। রাখাইনের অন্য অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ তাদের চলাফেরার অধিকার, মৌলিক সেবা এবং জীবিকা- পাশাপাশি তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। কয়েকজন উদ্বাস্তু জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন করা হলে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছে। তিনি বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো বৈষম্য ও নিপীড়নের মূল কারণ সমাধান করে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারকে আন্তরিকতা দেখাতে হবে। সে সাথে তিনি ২২ শতাধিক রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনা স্থগিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন। বাশেলেত সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এই প্রত্যাবাসন আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাধীনতা গুরুতর ঝুঁকিতে পড়তে পারে।’ যেকোনো ধরনের প্রত্যাবাসন যাতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, সম্মানের সাথে, পূর্ণ স্বচ্ছতায় এবং শুধুমাত্র সঠিক পরিবেশে হয় তা সতর্কভাবে নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানিয়েছেন হাইকমিশনার বাশেলেত। এর আগে, ব্রাসেলসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ অবিলম্বে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা স্থগিত করতে আহ্বান জানিয়েছে। ১২ নভেম্বর ক্রাইসিস গ্রুপের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠালে কী কী বিপদ বা ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে তাও তুলে ধরা হয়েছে। জেনেভা থেকে পাওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ইতিহাস সহিংসতা, পলায়ন ও ফেরার পুনরাবৃত্তিমূলক পর্বে পরিপূর্ণ। এই চক্রের পুনরাবৃত্তি রোধে আমাদের এক হয়ে কথা বলা দরকার।’ বাশেলেত বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজ দেশে না ফেরার কথা বার বার বলছে রোহিঙ্গারা। এমন কিছু পরিবারকে প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যাদের পরিবারের প্রধান কোনো নারী অথবা শিশু।’ হাইকমিশনার বাশেলেত বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করা উদ্বাস্তুদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভয় দেখছি, যারা মিয়ানমারে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফিরে আসার আসন্ন ঝুঁকিতে রয়েছে। জোরপূর্বক উদ্বাস্তুদের এবং আশ্রয় প্রার্থীদের প্রত্যাবাসন নন-রিফিউলেটমেন্ট নীতির পরিষ্কার লঙ্ঘন, যা অত্যাচারের হুমকি বা জীবনের ঝুঁকি রয়েছে এমন স্থানে প্রত্যাবাসন নিষিদ্ধ করেছে।’ বাশেলেত আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন সবচেয়ে ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এমনকি সম্ভাব্য গণহত্যা। দায়বদ্ধতার প্রায় সম্পূর্ণ অভাবের সাথে- প্রকৃতপক্ষে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যেই - মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের অর্থ কার্যকরভাবে এই যে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চক্রের মধ্যে ফেলে দেয়া। যা এই সম্প্রদায়টি কয়েক দশক ধরে ভোগ করছে।’ রয়টার্স, এএফপি,পার্সটুডে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ