পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। হামলা, মামলা, গ্রেফতারের কারণে এলাকা ছাড়া লাখ লাখ নেতাকর্মী। তারপরও দল ও শীর্ষ নেতাদের ডাকে সভা-সমাবেশে আসতেন গ্রেফতার আতঙ্ক মাথায় রেখে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অংশ নিতেন ঝটিকা মিছিলসহ অন্যান্য কর্মসূচিতে। গ্রেফতার আতঙ্ক না থাকলে, একটু সুযোগ পেলে সেই নেতাকর্মীরাই কি হয় তা দেখা গেছে গত দুই দিনেই। রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা ও মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় নির্ধারণের পরপরই যেন বদলে গেছে সব চিত্রই। খাঁচার ভেতর বন্দি থাকার পর ছাড়া পেলে যেমনটি হয় একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকায়। দলে দলে নেতাকর্মীরা ছুটে আসছেন নয়াপল্টনে। ব্যান্ড পার্টি, হাতি, মোটার সাইকেল শোভাযাত্রা, গাড়িবহর, মিছিলসহ একেক নেতা আসছেন একেকভাবে। সাথে থাকছেন শত শত নেতাকর্মী-সমর্থক। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের সাথে সাথে শ্লোগান দিচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের নামে। মুক্তি চাচ্ছেন খালেদা জিয়ার। দলে দলে ছুটে আসা লাখো নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে নয়াপল্টন সড়ক ও আশপাশের এলাকা হয়ে ওঠে জনসমুদ্র। মানুষের ভিড় নয়াপল্টন-ফকিরাপুল-নাইটিঙ্গেল মোড় ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে এর আশাপাশে। তখনও কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী মিছিল নিয়ে ছুটছেন রাজধানী ও সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীরা। যেন সব সড়ক গতকাল মিশেছিল নয়াপল্টনের সাথে।
মনোনয়ন ফরম বিতরণের প্রথম দিনে গত সোমবার নয়াপল্টন এলাকায় দীর্ঘদিন পর দেখা যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের স্বত:স্ফূর্ত উপস্থিতি। সেটি যেন ছিল প্রাথমিক প্রস্তুতি। গতকাল মঙ্গলবার সেই নয়াপল্টনেই দেখা গেল বিএনপি নেতাকর্মীদের বাঁধভাঙা জোয়ার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি সকাল ১০টা থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় নির্ধারণ করা হলেও এর দুই ঘণ্টা আগেই সকাল ৮টা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। হাতে হাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে প্রার্থীদের ছবি সম্বলিত পোস্টার। মাথায় বাঁধা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কাপড়। কণ্ঠে গগণ বিদারী শ্লোগান। রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের সাথে আসা নেতাকর্মীরা গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তুলছেন গোটা এলাকা। যেন প্রতিযোগিতা হচ্ছে কোন প্রার্থীর চেয়ে কার শ্লোগান বেশি উচ্চকিত হয়।
ছাত্রদল নেতা মুক্তার হোসেন বলেন, ভয়-ভীতি, গ্রেফতার আতঙ্ক না থাকায় এখন নির্বিঘ্নে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে আসছেন। ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে বিএনপি নেতাকর্মী ও দেশের সাধারণ মানুষ ধানের শীষের পক্ষে রায় দেবে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির প্রতি সমর্থন জানাবে।
প্রথম দিন দেরি হলেও দ্বিতীয় দিনে গতকাল সকাল ১০টায় মনোনয়ন বিতরণ শুরু করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ততক্ষণে মনোনয়ন ফরম কিনতে আসা নেতাকর্মীদের ভিড় দলীয় কার্যালয়, কার্যালয়ের সামনে থেকে ছাড়িয়ে যায় একদিকে ফকিরাপুল অন্যদিকে নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে বিজয়নগর-কাকরাইল পর্যন্ত। তখনো মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় মুখী হাজার হাজার নেতাকর্মীরা। লাখো নেতাকর্মীরা ভিড়ে গোটা এলাকা হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য। ফকিরাপুল-কাকরাইল সড়কের কোথাও ছিল না কোন তিল ধারণের ঠাঁই। সড়কের এপাশ থেকে ওপাশে যেতে হলেও বেগ পেতে হয়েছে যথেষ্ট। আর কেন্দ্রীয় কার্যালয় পার হতে চাওয়া ছিল অকল্পনীয়। আশপাশের অলিগলিতেও একই অবস্থা। নেতারা কর্মী সমর্থকদের বিশাল বহর নিয়ে মনোনয়ন ফরম তুলতে আসেন নয়াপল্টনে। অনেকে ব্যান্ড পার্টি, হাতি, মোটর সাইকেল বহর নিয়েও হাজির হন দলীয় কার্যালয়ে। মনোনয়ন ফরম তোলার পর পল্টন ও আশপাশের এলাকা দিয়ে মিছিল করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত দেখা যায় একই চিত্র। দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু। বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-৬ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জেল খানায় রাখা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন সর্ব ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের অধিনে কিছু আছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এরপরেও আমরা নির্বাচনে গেছি একটি ভালো পরিবেশ আসবে বলে প্রত্যাশা করি। আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবো নির্বাচনে থাকা কিন্তু সরকার যদি সেই পরিবেশ তৈরি করতে না পারে বা কোনো কারণে যদি নির্বাচন পন্ড হয়ে যায় তাহলে তার দায় ভার সরকারের। কাজী আবুল বাশার বলেন, আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয়া সম্ভব হবে কিনা সেটা নির্ভর করবে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণ এবং আমাদের দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তের উপর। ঢাকা-১৩ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনতে আসা বিএনপির সহ-শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এবং মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে শোডাউন দিয়েছেন। হেলেন জেরিন খান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। আমি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছি। আশা করি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে বিবেচনা করবেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।