Inqilab Logo

সোমবার, ০৩ জুন ২০২৪, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহবান ইউএসসিআইআরএফ’র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে জাতিসংঘের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রও সতর্কতামূলক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটি বলেছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য এখনও সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। ৩০ অক্টোবর জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে একটি যথাযথ পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানায়। এরপরই জাতিসংঘ এর প্রতিবাদ জানায়। এবার তাদের সঙ্গে যোগ দিল যুক্তরাষ্ট্র। খবরে বলা হয়, স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতিও আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান, চলাফেরার স্বাধীনতা, জীবিকার অধিকারসহ আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করার আহবান জানানো হয়। বিবৃতিতে রাখাইন রাজ্যে সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধান করার জন্য গঠনমূলক ভূমিকা পালনের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। জাতিসংঘ অভিযোগ তুলেছে, এই পরিকল্পনায় শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-কে যুক্ত করা হয়নি। তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এমন সময় ওই প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা সম্পন্ন হয়, যার এক সপ্তাহ আগে জাতিসংঘের অনুসন্ধানে রাখাইনে গণহত্যা চলমান থাকার কথা জানা গেছে। জাতিসংঘের পর যুক্তরাষ্ট্রও বিষয়টি নিয়ে সবাইকে সতর্ক করলো। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর আগে সেখানকার পরিস্থিতি বোঝার জন্য মিয়ানমারে পূর্ণ প্রবেশাধিকার দরকার। বিবৃতিতে শরণার্থীদের ফিরে যাওয়া স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই করার জন্য প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া মেনে চলার জন্য আহবান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অপরিণত প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আমরা উভয় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বের কাছে আমাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আর এই প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক রীতি মেনে চলা, ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ এ মর্যাদাপূর্ণ করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য দুই দেশের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।’ এদিকে রোহিঙ্গা নিধনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা আরোপে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ক্রিস্টিনা অ্যারিজা। মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজে এক সাক্ষাতকারে, ওবামা প্রশাসনের প্রত্যাহার করা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালেরও আহবান জানান তিনি। এদিকে, মিয়ানমার সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও রাখাইনে এখনো শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফেরেনি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। রোহিঙ্গাদের জাতি-পরিচয় নিয়ে আবারও মিথ্যাচার শুরু করেছে মিয়ানমার। শনিবার মার্কিন গণমাধ্যম ফক্স নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদন জাতিসংঘে মিয়ানমার বিষয়ক রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নামের কোনো জাতির অস্তিত্ব নেই। মুসলিম বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহযোগিতা পাওয়ার জন্যে এ নামের সৃষ্টি করা হয়েছে। বলেন, ১৯ শতকের দিকে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করে ব্রিটিশরা। জাতিসংঘে মিয়ানমার প্রতিনিধি›র হাও দু সুয়ান বলেন, ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই বাঙ্গালি মুসলমান নিয়ে সমস্যায় আছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে আমাদের স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে। যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। এ মুহূর্তে বাস্তুচ্যুতেদের শান্তিপূর্ণ উপায়ে ফেরাতে সরকার কাজ করছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদারের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক পরিষদ (ইউএসসিআইআরএফ)। রয়টার্স, ফক্স নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ