মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ক্যালিফোর্নিয়ায় ছড়িয়ে পড়া দুটি দাবানলের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে শুরু হওয়া এ দাবানলের তান্ডবে এখন পর্যন্ত গৃহহীন হয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। উদ্ধার কর্মকর্তারা এ হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভয়াবহ এই আগুনের পরিধি চারগুণ হয়ে গেছে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলীয় ক্যালিফোর্নিয়ার ৩০ হাজার অধিবাসীর প্যারাডাইস টাউন প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দেড় লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর লস অ্যাঞ্জেলসের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান মহাসড়ক ও উপকূলীয় অঞ্চলে এ দাবানলটি আঘাত হানে। আর যার ফলে স্থানীয় শহর মালিবুর অসংখ্য বাড়িঘর ইতোমধ্যে আগুনে পুড়ে গেছে। তাছাড়া অঙ্গরাজ্যটির রাজধানী স্যাক্রামেন্টোতে একটি গাড়ি থেকে পুড়ে যাওয়া পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধার কর্মীরা।
উল্লেখ্য, এই দু’টি দাবানল খুব দ্রুতই আশপাশের সব এলাকাগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাতে লস অ্যাঞ্জেলসের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মহাসড়কসহ এ দাবানলটি আশপাশের প্রায় ১৪ হাজার একর এলাকার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া সেখানকার গুরুত্পূর্ণ শহর থাউসেন্ড ওকসের পাশে ৪০ মাইলব্যাপী আঘাত হেনেছে দাবানল দুটি। দাবানলের কবলে পড়ে শহরটির প্রায় ৭৫ হাজার মানুষকে নিরাপদে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের বেশ কিছু শহরের মানুষকে নিরাপদে অন্য জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই দাবানল সামনে আরও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা উদ্ধার কর্মীদের।
ক্যালিফোর্নিয়ার বন ও অগ্নি সুরক্ষা বিভাগের ক্যাপ্টেন স্কট ম্যাকলিন বলেছেন, কোনও দমকলকর্মী আগুন নেভানোর চেষ্টা করেনি। তার ভাষায় আগুন এতো ভয়াবহ ছিল যে, আগুন নেভানোর চেয়ে মানুষজনকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে সাহায্য করেছে দমকলকর্মীরা। তিনি বলেন, গতকাল শনিবার সারাদিন উদ্ধারের মুডে ছিল দমকলকর্মীরা। পুরো শহরকে খালি করতে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সবাই গাড়িতে করে শহর ছাড়ার চেষ্টা করেন কিন্তু প্রচন্ড জ্যামের কারণে গাড়ি রেখে পায়েই হাঁটা শুরু করেন অনেকে। আগুনে পুড়ে গেছে ঘরবাড়ি, সুপারমার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, স্কুল এবং অবসর হোম।
প্যারাডাইস শহরে বসবাসকারী একজন পুলিশ কর্মকর্তা মার্ক বাস বলেন, আমরা আগুনের চাদরে মোড়া, রাস্তার দু’পাশে আগুনের মধ্য দিয়ে আমরা গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি।
ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবু ও ক্যালাবাসাস হলো শত শত সেলিব্রেটি ও বিনোদন জগতের নির্বাহীদের বসবাস। সেখানে বারবারা স্ট্রেইস্যান্ড, টম হ্যাঙ্কস, জুড অ্যাপোটো ও ব্রিটনি স্পিয়ার্স, কিম কারদাশিয়ান, লেডি গাগা সহ অনেক সেলিব্রেটিদের বাড়িও আগুনে পুড়ে গেছে। শুক্রবার দাবানল মালিবুর আবাসনগুলোতে গ্রাস করার আগেই হাজার হাজার মানুষ সেখান থেকে প্রাণ নিয়ে দৌড়ে পালায়। স্বামী কেনি ওয়েস্টের সঙ্গে মালিবুর ক্যালাবাসাসের বাড়িতে থাকতেন কিম কারদাশিয়ান। দাবানল সব গ্রাস করছে এমন খবরে বৃহস্পতিবার তিনি সেখান থেকে সব নিয়ে সরে পড়েন। শুক্রবার এক টুইটে কারদাশিয়ান জানান, ‘শুনেছি আগুন আমাদের সম্পদ ছুঁয়েছে। তবে এখন তা কমে এসেছে এবং থেমে গেছে।’
মালিবুতে সুপরিচিত হিজড়া অধিকারকর্মী কেইতলিন জেনারের বাড়িটি আগুন একেবারে ছাই বানিয়ে দিয়েছে। তবে জেনার নিরাপদে আছেন। ১৯৭২ সাল থেকে মালিবুতে বসবাস করতেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেত্রী চ্যার। তিনি টুইট করে বলেছেন, আগুন তার বাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। যদিও সেই বাড়িতে তেমন কোনো সম্পদ নেই। চলচ্চিত্র পরিচালক গুলেরমো ডেল তোরো টুইটে বলেছেন, তিনি তার বিশাল ‘ব্লিক হাউজ’ ফেলে এসেছেন।
মালিবুতে ১২ হাজার মানুষের বসবাস। এটি দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ও সান্তা মনিকা পাহাড়ের মধ্যবর্তী ২৭ মাইল দীর্ঘ একটি সরু এলাকা। শুক্রবার সিটি অব মালিবু টুইটে সতর্কবাণী দেয় যে, আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সূত্র: ইউএসএটুডে, এপি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।