মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিভিন্ন প্রশাসনিক পদক্ষেপে গত দু’বছরে যিনি নিজেকে কার্যত, প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানবিরোধী হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যসমাপ্ত মাঝপর্বের নির্বাচনে সেই ট্রাম্পেরই বিজ্ঞান নীতিকে জোর ধাক্কা দিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা। বিজ্ঞানকেই ‘হাতিয়ার’ করে।
বছর দু’য়েক আগে ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হয়েই রক্তচক্ষু দেখাতে শুরু করেন নিরীহ বিজ্ঞানীদের। একের পর এক প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, পদক্ষেপে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বুঝিয়ে দিতে সময় নেননি যে, বিজ্ঞান তার অপছন্দের বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যাবতীয় গবেষণা, নাসার যাবতীয় ভূবিজ্ঞান গবেষণাকে পাত্তা না দিয়ে তাদের বাজেট কাটছাঁট করতেও দ্বিধা করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তারই জবাব পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সদ্যসমাপ্ত মাঝপর্বের নির্বাচনে। জয়ী ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণায় বেশ কয়েকটি পরিচিত নাম। যেমন, ভার্জিনিয়ায় জয়ী হয়েছেন এলেইন লুরিয়া। যিনি এক সময় কাজ করতেন মার্কিন নৌবাহিনীতে। শিক্ষাগত যোগ্যতায় যিনি নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার। পেনসিলভানিয়ায় জয়ী হয়েছেন ক্রিসি হাওলাহান। প্রাক্তন বিজনেস এগজিকিউটিভ ক্রিসির ডিগ্রি রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। ইলিনয়ে বিজয়ী হয়েছেন লরেন আন্ডারউড। পেশায় যিনি এক জন নার্স আর যাঁকে অনেকেই চেনেন। ইলিনয়েই জয়ী হয়েছেন বায়োকেমিস্ট্রি ও ইঞ্জিনিয়ারি-এর দু’টি ডিগ্রিধারী সিন কাস্টেন। বিশিষ্ট পরিবেশকর্মী সিন এক সময় ছিলেন মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানবকল্যাণ দফতরের সিনিয়র উপদেষ্টা। চার জনই জিতেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দু’বছরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেওয়া কার্বন ট্যাক্স নীতি, জলবায়ু পরিবর্তন নীতি, মহাকাশে অস্ত্র-প্রতিযোগিতা নীতি ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার ওপর সরকারি জোরজবরদস্তির নীতিই এ বার বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করে তুলেছিল মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচনে।
বহু মানুষের সমর্থন নিয়ে ভোটে লড়লেন এমন অন্তত ৫০ জন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রয়েছে যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতায়। জয়ী হলেন ১১ জন। এর আগে কোনও মার্কিন নির্বাচনে বায়ো়ডেটায় বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা থাকা এত জন প্রার্থী এক সঙ্গে লড়তে নামেননি। এত জন প্রার্থী একই নির্বাচনে জয়ীও হননি। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন, আগে কখনও যারা রাজনীতিতে আসেননি। আমেরিকায় নির্বাচনের ইতিহাসে যা একটি সর্বকালীন রেকর্ড। বায়োডেটায় বিজ্ঞান থাকা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাও ছিল উল্লেখযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ফলাফল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিজ্ঞানবিরোধী একের পর এক প্রশাসনিক পদক্ষেপকেই কার্যত, চ্যালেঞ্জ জানাল। বায়োডেটায় বিজ্ঞান থাকা যে ৫০ জন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী এ বার ভোটে লড়তে নেমেছিলেন, তাদের প্রায় অর্ধেকই এত দিন রীতিমতো অনভিজ্ঞ ছিলেন রাজনীতিতে। রাজনীতিকে তারা এত দিন দূরেই রেখেছিলেন। কিন্তু অনায়াসেই তারা পেরিয়ে গিয়েছেন ভোটপর্বের প্রাথমিক ধাপে প্রাইমারিগুলির নির্বাচন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুই বিজ্ঞান নয়, মহিলারাও যোগ্য জবাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। তিনটি বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপছন্দের কথা সকলেরই জানা আছে। প্রথমত, তিনি মুসলিমদের পছন্দ করেন না। দ্বিতীয়ত, তিনি পছন্দ করেন না লাতিন আমেরিকার বাসিন্দা বা ‘ল্যাতিনো’দের। আর, তৃতীয়ত, সব সময় মহিলাদের তিনি হেয় করতে ভালবাসেন। কারণে-অকারণে অপমান করতে ভালবাসেন মহিলাদের। ট্রাম্পের সেই ‘সহজাত অভ্যাস’কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাতেই এ বার মার্কিন নির্বাচনে বায়োডেটায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি থাকা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের মধ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল মহিলাদের। ছিলেন অনেক মুসলমান প্রার্থীও। সূত্র: দা সায়েন্টিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।