নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই বৃষ্টির শঙ্কা ছিলো সিলেটে। তবে নির্বিঘ্নেই হয় দেশের সপ্তম ভেন্যু সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পথচলা। আগের রাতের এক পষলা বৃষ্টি সেই শঙ্কার মেঘ উড়িয়ে এনেছিলো সবুজ চা বাগানবেষ্টিত লাক্কাতুড়ার ভেন্যুটিতে, তাতে ভেস্তে যেতে বসেছিল অভিষেক টেস্টটি। সেটি অবশ্য হয়নি, তবে গতকাল দিনভর চলেছে মেঘ-রোদ্দুরের লুকোচুরি। কখনও গুমোট, কখনও আলোর ঝলকানি। ঠিক যেন ম্যাচে বাংলাদেশের সম্ভাবনার মতোই। কখনও শঙ্কার আঁধার, কখনও আশার আলো। দিন শেষের ছবিতেও থাকল আশা ও নিরাশার দোলাচল। জয় দিয়ে অভিষেক টেস্ট রাঙাতে হলে গড়তে হবে রেকর্ড, বাংলাদেশের জন্য কাজটি কঠিন হলেও এই জিম্বাবুয়ের সামনে অসম্ভব নয়।
শেষ ইনিংসে এসে সিলেটের অভিষেক টেস্ট দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চকর মোড়ে। জয়ের জন্য শেষ দুই দিনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৯৫ রান। চ্যালেঞ্জ জয়ের পথে আপাতত স্বস্তির উপলক্ষ্য ১০ উইকেটই অক্ষত থাকায়। আগের দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে দেড়শ মধ্যে আটকে রাখার লক্ষ্য জানিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। সফরকারীরা করতে পেরেছে একটু বেশি, ১৮১। প্রথম ইনিংসের ১৩৯ রানের লিড মিলিয়ে শেষ ইনিংসে বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩২১। তৃতীয় দিন শেষে রান বিনা উইকেটে ২৬। দুই ওপেনার ইমরুল-লিটন দিন শুরু করবেন যথাক্রমে ১২ ও ১৪ রান নিয়ে।
টেস্টে রান তাড়া করে তিনটা মাত্র ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ২০০৯ সালে তখনকার ভাঙাগড়ার মধ্যে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সেন্ট জর্জেসে ২১৫ রান তাড়া করে হারিয়েছিল সাকিব আল হাসানের দল। গত বছর দেশের শততম টেস্টে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯১ রান তাড়া করে জিতেছিল মুশফিকুর রহিমের দল। আর ঘরের মাঠে একবারই রান তাড়া করে জেতে বাংলাদেশ। সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। তবে ২০১৪ সালে লক্ষ্যটা ছিল মাত্র ১০১ রানের। বাংলাদেশের মাটিতেও এত রান তাড়া করে টেস্ট জেতেনি কোন দল। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১৭ রান তাড়া করে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারাতে হলে তাই রেকর্ড বইয়ে উলটপালট করতে হবে বাংলাদেশকে।
তাইজুল ইসলামের সৌজন্যে লক্ষ্যটা খুব বেশি নাগালের বাইরে যায়নি। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে এই বাঁহাতি স্পিনার নিয়েছেন ৫ উইকেট। ১৭০ রানে ১১ উইকেট, টেস্টে বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা বোলিং ফিগার। দিনের শুরুটায় জিম্বাবুয়ে ছিল বেশ সতর্ক। প্রথম ১০ ওভারে উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। প্রথম ব্রেক থ্রু আসে মেহেদী হাসান মিরাজের হাত ধরে। লাইন মিস করে বোল্ড ওপেনার ব্রায়ান চারি। এই স্পিন অলরাউন্ডার পরে ফিরিয়েছেন গলার কাঁটা হয়ে থাকা হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকেও। ৪৮ রানে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।
এই দুই উইকেটের মাঝে তাইজুল ধরেন প্রথম শিকার। তিনে নেমে আগ্রাসী কিছু শট দ্রæত রান বাড়াচ্ছিলেন ব্রেন্ডন টেইলর। সেই চেষ্টায়ই ইমরুল কায়েসের দারুণ ক্যাচে ফিরেছেন ২৪ রানে। এরপর শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা চেষ্টা করেছেন লিড বাড়াতে। কিন্তু কাউকেই খুব বেশি এগোতে দেননি তাইজুল। প্রথম ইনিংসে প্রাচীর হয়ে থাকা পিটার মুরকে ফিরিয়েছেন প্রথম বলেই। শেষ ব্যাটসম্যান টেন্ডাই চাটারাকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেছেন ম্যাচে দ্বিতীয় ৫ উইকেট।
তাইজুলের সঙ্গে অন্য দুই স্পিনার মিরাজ ও নাজমুল ইসলাম অপুও যোগ দিয়ে খুব বেশি বাড়তে দেননি লিড। ১৬ রানের মধ্যে জিম্বাবুয়ে হারিয়েছে শেষ ৪ উইকেট। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ১০ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন তাইজুল। বাংলাদেশের হয়ে ১০ উইকেট পাওয়া চতুর্থ বোলার তিনি। সাকিব আল হাসান এই স্বাদ পেয়েছেন দুইবার।
বাংলাদেশের মূল চ্যালেঞ্জ শুরু হয় অবশ্য এরপরই। মেঘলা আকাশে অন্ধকার হয়ে আসা মাঠে ফ্লাড লাইট জ্বলে ওঠে বেলা সাড়ে তিনটার দিকেই। বিকেলটা কাটিয়ে দেওয়া তাই সহজ ছিল না। ইমরুল-লিটন মিলে তবু পার করে দেন ৬১ বলের সময়টুকু। আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের ২৫ মিনিট আগে। শেষ পর্যন্ত যদি দারুণ কিছু করে ফেলতে পারে বাংলাদেশ, সিলেটের অভিষেকটাও হয়ে থাকবে স্মরণীয়। প্রায় ১১ মাস পর টেস্ট খেলতে নামা জিম্বাবুয়েও নিশ্চয়ই শুনতে পাচ্ছে জয়ের ডাক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।