Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আড়াইহাজারে ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না সাতগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গ্রাহক ভোগান্তি চরম আকার ধারন করেছে। ভূমি সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি নির্ধারিত ফি নির্ধারন থাকা সত্বেও এই ভূমি অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে বড়কর্তাও যেনো ঘুষ বাণিজ্যে মুখর। ঘুষ দিয়ে মাসের পর মাস সেবাপ্রার্থীরা তাদের ফাইল নাড়াতে পারছেন না। বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিলের অপসারনের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তাতেও কাজ না হওয়ায় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ ও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল ও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সাতগ্রাম ভূমি অফিসে পাঁচরুখী, বড় নওগাঁও, সাতগাঁও, রছুলপুর, দেয়াবৈ, দক্ষিণ সরুপাব, চাইরগাঁও ও উরিয়াম মৌজার জমির নামজারি জমাভাগ, খাজনা প্রদান, পর্চা উত্তোলনসহ জমি সংক্রান্ত নানা তথ্য প্রদান করা হয় এ অফিস থেকে। সাতগ্রাস ইউনিয়নের পাঁচরুখী মৌজায় অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়ায় সরকার প্রদত্ত ক্ষতিপুরণের টাকা উত্তোলন করতে জমা খারিজ ও খাজনা রশিদ বাধ্যতামূলক প্রয়োজন। তাই জমা খারিজ করতে উক্ত মৌজার লোকজন প্রয়োজনীয় কাজ করতে ভূমি অফিসে আসেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু এসব কাজ করতে আসা মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই। সংশ্লিষ্ট জমির যথাযথ কাগজপত্র ও দলিল উপস্থাপন করার পরও নানা অজুহাতে ও ভুল-ত্রু টি দেখিয়ে ফাইল আটকে রেখে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ আছে।

ভুক্তভোগীরা আরো অভিযোগ করেন, ইব্রাহীম খলিলের ঘুষ বাণিজ্য অনিয়ম দুর্নীতি ও নিজের নিয়োজিত দালাল-কর্মচারী সিন্ডিকেটের উৎপাতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। গোটা ভূমি অফিস হয়ে উঠেছে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া। এক্ষেত্রে ভয়ভীতিরও বালাই নেই।
ইচ্ছামতো অফিসে আসা-যাওয়া করেন তিনি

নিজের ইচ্ছামাফিক অফিসে-যাওয়া করেন সাতগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল, এমন অভিযোগ করেন স্থানীয় ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান অদুদ মাহমুদের। তিনি বলেন, ‘তিনি মনমত অফিস করেন। একদিন আসেন তো আরেকদিন আসেন না। প্রায় সময়েই দুপুর ২টার দিকে এসে ঘন্টাখানেক অফিস করে চলে যান। এ সময় কোনো পিয়নও অফিসে থাকেন না।
স্থানীয় চায়ের দোকানি লিটন, জাফর খান ও আমির হোসেন বলেন, ‘নায়েব সাহেব প্রকাশ্যেই বলেন টাকা খরচ কইরা এইখানে আইছি। এমনে টাকা কামাই না করলে তো অইবো না। উপরেও তো কমিশন দিতে অয়।

পাঁচরুখী এলাকার কিরণ ভূইয়া বলেন, আমি আমার এক বিঘা জমি জমা খারিজ এর জন্য দিলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল আমার কাছ থেকে শতাংশ প্রতি দুই হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে জমা খারিজ হবে না।
টাকা ছাড়া কোন কাজ না করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাতগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল। তিনি বলেন, ‘আমার কাছ থেকে যারা ফলস (অবৈধ) কাজ করতে পারে না তারাই আমার নামে এসব অপপ্রচার চালায়। অবৈধ কোনো কাজ আমার দ্বারা কখনো হয়নি। আমি কোন দুর্নীতি করি না। তিনি সরকারি নিয়ম মেনে নির্ধারিত সময়ে অফিসে আগমন প্রস্থান করে থাকেন বলে দাবি করেন।
উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) শেখ জাহিদ হাসান বলেন, আমি নতুন এসেছি। অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতি

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ