বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, জাতীয় পার্টির সভাতে যেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বক্তব্য দিয়ে, সেলিম ওসমানের জন্য ভোট চেয়েছেন তাদেরকে আমি ধিক্কার জানাই। জেলা আওয়ামীলীগের সদস্যও সেখানে ছিল। আমি জানি না তারা দলকে এবং নেত্রীকে কেমন ভালোবাসে। কি কারণে সেখানে যাবেন? যদি নেত্রী তাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে দলের স্বার্থে আমরা সবাই তার পক্ষে থাকবো। কিন্তু দলের নির্দেশ ছাড়া আমরা তার পক্ষে থাকতে পারি না, ভোট চাইতে পারি না। এতো সুবিধাবাদী হলে তো চলবে না। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় নগরীর ২ নম্বর রেলগেইটে অবস্থিত আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার দল আওয়ামী লীগ আজকে ক্ষমতায় আছে বলেই ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে, কাজ হচ্ছে। আমরা মাথা উচু করে দাড়াতে পারছি এটাই আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া। আগের নেতাদের চাল চুলোর খবর ছিল না। কিন্তু আজকে আমরা চিন্তা করি, আমার পকেটে কয় টাকা গেলো? এভাবে চলতে থাকলে এ দলের অস্তিত্ব থাকবে না। দল ক্ষমতায় না আসলে কি হবে তা ভাবতেও পারবেন না। তাই দল ক্ষমতায় আসতেই হবে। আমাদের সততার উপর নির্ভর করছে আওয়ামীলীগে মানুষ ভোট দিবে কি দিবে না। জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করে মেয়র আইভী বলেন, একটি নিরাপদ স্থানে গুলি করে চার নেতাকে হত্যা করা হলো। খুব নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যা করার আগে চার নেতাকে মন্ত্রীসভায় আহ্বান করেছিল খন্দকার মোশতাক। কিন্তু চার নেতা বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানী করেনি। এই কথা বললাম কারণ আজকে যারা আওয়ামী লীগ করি, বঙ্গবন্ধুর অনুসারী তারা মুহূর্তের মধ্যেই বেকে বসি। কিন্তু জাতীয় চার নেতা জীবনের ভয়েও দলের সাথে, জাতির সাথে বেঈমানী করেননি। আমরা হিসাব নিকাশ করা শুরু করি, কি পেলাম, কি পেলাম না। আমরা নগদে বিশ্বাসী। সেই সময়ের নেতাদের আদর্শ আর আমাদের আদর্শের কথা চিন্তা করুন। আমি সেই আদর্শের কথাই বলতে চাচ্ছি।
বিভিন্ন মিথ্যা কথা বলে, ভয় দেখিয়ে সড়ক পরিবহন ও যোগযোগ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নারায়ণগঞ্জ সফর বাতিল করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন নাসিক মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। তিনি বলেছেন, আপনারা কর্মীরা যেসব কথা বলেন সেসব কথা আওয়ামী লীগের নেতারা জানে। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের আসার কথা ছিল। তিনি এসে সরকারের সাফল্য এই নারায়ণগঞ্জে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন তাকে আসতে দেয়া হলো না? আমার দৃঢ় বিশ্বাস সেদিন নারায়ণগঞ্জ নৌকায় নৌকায় একাকার হয়ে যেতো। এই ভয়ে কারা তাকে হুমকি দিল যে, আজকে গন্ডগোল হবে? হকার ইস্যু নিয়ে সমস্যা, ফতুল্লাতে শ্রমিকদের সমস্যা এইসব মিথ্যা দিয়ে তাকে আসতে বারণ করা হলো। কারা করলো এই কাজ?
নারায়ণগঞ্জের মানুষ সাহসী উল্লেখ করে মেয়র বলেন,আপনারা দেখেছেন, হকার উচ্ছেদ করতে আমরা চাইনি। আমরা কেবল জনগণকে শান্তিতে চলতে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে হামলা করা হলো। সেসময় আমি আমার কর্মী বলবো না, আমার ভাইয়েরা আমাকে বাঁচাতে ওই পিস্তল ধরে ফেলেছিল। সেদিন কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মানুষ ভয় পায়নি। পিস্তল ধরে ফেলে তাকে এখান থেকে সরিয়ে দেয়।
নারায়ণগঞ্জের প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের বিপক্ষে উল্লেখ করে নাসিক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদের ভোটে আওয়ামী লীগের নেতাদের হারিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কে তাদের ফেল করালো, কি কারণে করলো? বর্তমানের প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েই এই কাজগুলো হয়েছে। তার মানে নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনও আওয়ামী লীগের নৌকার বিপক্ষে কাজ করে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, আরজু রহমান ভ‚ইয়া, আসাদুজ্জামান আসাদ, মিজানুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।