রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
লোকবলের অভাবে সাতটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ, নেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী, প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল টিকিট, কালোবাজারে টিকিট বিক্রির অভিযোগ, অপরিচ্ছন্ন প্ল্যাটফরম। এভাবেই চলছে ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনের কার্যক্রম। আর সরাসরি ট্রেন চালুর কথা থাকলে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে জেলাবাসি সে আশায় রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছেন অল্প সময়ের মধ্যে সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি হলেই আমরা যাত্রীদের সেবা দিতে পারব।
ঠাকুরগাঁও রেল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১০ সালের অক্টোবরে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটারের, মিটার গেজ রেলপথকে আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও ডুয়েল গেজে রূপান্তর করার কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আরো দুইবার নির্মাণ কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ করার অঙ্গীকার করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা ও ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন। সর্বশেষ মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ করে। এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৯০ কি.মি. রেলপথের মধ্যে ১৩১টি ছোট ব্রিজ ও তিনটি বড় ব্রিজ পুননির্মাণ ও রেলস্টেশন পুননির্মাণ কাজ। পরবর্তীতে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর রেলমন্ত্রী পঞ্চগড়ে এসে প্রত্যাশার আন্তঃনগর ট্রেনের পরিবর্তে শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন।
কিন্তু ওই দিন জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী। তারপর অজ্ঞাত কারণে চালু হয়নি ঢাকা- ঠাকুরগাঁও- পঞ্চগড় সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন। সে সময় সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে ফুঁসে উঠে দুই জেলার মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন চালু না হওয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও পালনও করে দুই জেলার সাধারণ মানুষ। এরপরও একাধিকবার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ সরাসরি ট্রেন চালু করার কথা বললেও এখন পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী গত ২৯ মার্চ আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই মতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রেল মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে চিঠিও যায়।
রেলপথ আর রেল স্টেশন আধুনিকায়ন হলেও লোকবলের অভাবে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্জগড় জেলার আখানগর, রুহিয়া, কিসমত, নয়নবুরুজ, শীবগঞ্জ, ভোমরাদহ ও বাজনাহার স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। শাটল ট্রেন উদ্বোধনের পর ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনে প্রতিদিন ২০টি শোভন চেয়ার টিকিট বিক্রি করা হলেও এখন এ সংখ্যা বাড়িয়ে ৩২টি করা হয়েছে। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৩০টি ও প্রথম শ্রেণি এসি দুটি। এ ছাড়াও পঞ্চগড়ে ৩৫টি, রুহিয়ায় ১০টি ও পীরগঞ্জে ২৬টি শোভন শ্রেণির টিকিট বিক্রি করা হয়। রুহিয়া রেল স্টেশনের জন্য ১০টি টিকিট বরাদ্দ থাকলেও রুহিয়া ও পঞ্চগড়ের স্টেশন মাস্টার হিসেবে একই ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ওই স্টেশন মাস্টার পঞ্চগড়ে দায়িত্ব পালন করায় রুহিয়ার টিকিটগুলো যাত্রীরা যথাসময়ে পান না বলে অভিযোগ অনেকের।
জেলার শিক্ষাবিদ মনোতোষ কুমার দে ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ, শহরের বাসিন্দা ইকবাল করিম, ফয়জুল হক, রোমানা আক্তারসহ অনেকে জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার জন্য আমরা মনেকরি গড়ে ১০০ টিকিট প্রয়োজন, কিন্তু এর রিপরীতে বর্তমানে ৩২ টিকিটের কথা বলা হলেও আমরা কখনোই টিকিট পাই না। বেশির ভাগ টিকিট করতে হয় দিনাজপুর থেকে দালাদের মাধ্যমে। প্রতি টিকিট দুই-তিনশ’ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়। আমরা চাই আশ্বাস নয় দ্রুত ট্রেন চালুর ব্যবস্থা নিবেন সংশ্লিষ্টরা।
ঠাকুরগাঁও রোড রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আখতারুল ইসলাম জানান, ৯দিন আগেই আগাম টিকিট ছাড়া হয়। নির্দিষ্ট তারিখের তিন-চারদিন আগেই সকল টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কেউ যদি যাত্রী সেজে আগাম টিকিট কেটে রেখে পরে সেটা বেশি দামে বিক্রি করে তবে আমরা সেটা কিভাবে ঠেকাব? জনবল সঙ্কটের কারণে দু’জেলার কয়েকটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে আর রেলওয়ের কোনো পরিচ্ছন্নতা কর্মী (সুইপার) নেই। এ পদের জন্য কোনো বরাদ্দও নেই। পকেটের পয়সা খরচ করে কাউকে দিয়ে শুধু ঝাড়– দেয়া হয়। ট্রেন চালুর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। তবে আশা করা হচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।