মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মুসলিম রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনবিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়নে ধীর গতির কারণে কিভাবে এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কটটিতে কিভাবে সাড়া দেবে তা নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ানে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক শিরোনামগুলোতে সম্মিলিত ও অর্থপূর্ণ অবস্থান গ্রহণে ১০ সদস্যের গ্রুপটির অক্ষমতার বিষয়টিই ফুটে ওঠেছে।
স্থানীয় মিডিয়ায় ২২ অক্টোবর মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনার জন্য অক্টোবরের শেষ দিকে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স মিয়ানমার সফরের পরিকল্পনা করছেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট ২০১৭ সাল থেকেই প্রবল আকার ধারণ করে আছে। তবে এই প্রথম আসিয়ান দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী শুদ্ধি অভিযান শুরু করলে লাখ লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানকে মানবতাবিরোধী ও গণহত্যা অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।
মালয়েশিয়ার ওই প্রতিবেদনের এক দিন পর মালয়েশিয়ার মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সমন্বয়ে দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই মিয়ানমার সফর করবে। তারা ২০১৯ সালের শুরুর দিকে প্রত্যাবাসন-প্রক্রিয়া শুরুর বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
ব্যাংকক পোস্টে খবর প্রকাশিত হয়, আসিয়ান-অনুমোদিত মিশনের লক্ষ্য হলো নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু তারপর ২৪ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আসিয়ান বিশেষ টাস্ক ফোর্সের অস্তিত্ব থাকার কথা অস্বীকার করে।
এর দুদিন পর জার্কাতা পোস্টে খবর প্রকাশিত হয়, মিয়ানমার ‘সীমিত আকারে আসিয়ান টাস্ক ফোর্স স্বাগত’ জানিয়েছে। কিন্তু এতেও নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করে। সিঙ্গাপুর সাথে সাথে আবদুল্লারহ ঘোষণা অস্বীকার করে। এতে মনে হচ্ছে, আসিয়ান প্রবলভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
সঙ্কটের শুরু থেকেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে একমতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছিল আসিয়ান। মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া দ্রুততার সাথে সঙ্কটটি নিয়ে মিয়ানমারের তীব্র সমালোচনা করে। কিন্তু সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশগুলো তাদের সুর চড়া করা থেকে বিরত থাকে।
অবশ্য আসিয়ানে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির একটি সমাধান পাওয়া সহজ নয়। এর অন্যতম কারণ হলো আসিয়ান সনদ। এতে বলা হয়েছে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। কিন্তু একটি দেশের ভয়াবহ মানবিক সঙ্কটেও নীরবতা পালন করা হলে সংস্থাটিই বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। এ প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় আসিয়ানকে এই সমস্যাটির সমাধান বের করতেই হবে।
বেশ কিছু কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটির ব্যাপারে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে আসিয়ানের জন্য। মিয়ানমারের সাথে আসিয়ানভুক্ত সব দেশের সম্পর্ক একই রকম নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যাপক প্রভাব রাখতে পারে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর। মনে রাখতে হবে, সিঙ্গাপুর হলো চলতি বছর মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগকারী। তারা ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ১৯.৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। একমাত্র চীনা বিনিয়োগই সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছে। মিয়ানমারের সাথে বিশেষ সম্পর্ক থাকার কারণে সিঙ্গাপুর রোহিঙ্গা ইস্যুতে অং সান সু চি সরকারকে ক্ষুব্ধ করতে চায় না।
থাইল্যান্ডের সাথে মিয়ানমারের ২,২০৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। দেশটি এখনো মিয়ানমারের অন্যতম বিশ্বস্ত দেশ। চীন ও সিঙ্গাপুরের পর থাইল্যান্ড হলো মিয়ানমারের তৃতীয় বৃহত্তম বিদেশী বিনিয়োগকারী দেশ। ২০১৮ সালে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১৪. বিলিয়ন ডলার। অতীতে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করেছিল থাইল্যান্ড। এই প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বহুজাতিক সংস্থাটি নাটকীয় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, এমনটা আশা করা যায় না। সূত্র: এশিয়া টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।