Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিলো বাংলাদেশ কিশোর দল। গতকাল সকালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে টুর্নামেন্টের শেষ চারের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারায় ভারতকে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমিমাংসিত থাকায় টাইব্রেকারে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়। যেখানে শেষ হাসি হাসে লাল-সবুজের কিশোররা। একই দিন বিকেলে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাকিস্তান ৪-০ গোলে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয়। আগামীকাল একই ভেন্যুতে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে লাল-সবুজরা লড়বে পাকিস্তানের বিপক্ষে।

স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচের ৩৪ মিনিটে লালকার্ড পেয়েছিলেন বাংলাদেশের নিয়মিত গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ফলে বাকি ৫৬ মিনিট লাল-সবুজের গোলবার সামলাতে হয়েছে দলের দ্বিতীয় গোলরক্ষক মেহেদী হাসানকে। ওটাই ছিলো আন্তর্জাতিক ম্যাচে মেহেদীর অভিষেক। ওই ম্যাচে তার দল জিতে সেমিফাইনালে আসলে এখানে নিজের কারিশমা দেখান এই কিশোর গোলরক্ষক। শেষ চারে বাংলাদেশের সেরা একাদশে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেন মেহেদী। বনে যান ভারতকে হারানোর নায়ক। টাইব্রেকারে ভারতের নেয়া প্রথম দু’টি শট দৃঢ়তার সঙ্গেই রুখে দিয়ে নিজ দলকে পথ দেখান ফাইনালের। আর তৌহিদুল ইসলাম হৃদয়, রাজা আনসারী, কামরান উদ্দিন রাজু ও রোস্তম ইসলাম গোল করে বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।

যদিও কাল ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ১৭ মিনিটে ভারতীয় মিডফিল্ডার পাত্রে হার্শ শৈলাসের দূরপাল্লার শট বাংলাদেশ গোলরক্ষক মেহেদী হাসানকে বোকা বানিয়ে জালে জড়ায় (১-০)। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফিরতে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ কিশোর দল। ৩৭ মিনিটে নাজমুল আহমেদের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে গেলে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় তারা। তবে এগিয়ে থেকে ভারত বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের বেশীরভাগ সময় বাংলাদেশের আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত ছিলো। বিরতির পর লাল-সবুজরা গোলের জন্য মরিয়া হয়ে লড়ে একের পর এক আক্রমণ চালালেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না কিছুতেই। হতাশা যখন ভর করে বাংলাদেশ শিবিরে ঠিক তখনি আশার আলো হয়ে দেখা দেন আশিকুর রহমান। ম্যাচের যোগকরা সময়ে (৯০+৩ মিনিট) পেনাল্টি থেকে গোল করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তিনি।

এসময় ডান দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে রাসেল আহমেদ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার সময় ফাউলের শিকার হন। ফলে পেনাল্টির বাঁশি বাঁজান মালদ্বীপের রেফারি জিম আলী। পরে স্পট কিক থেকেই সাফল্য তুলে আনেন বদলি ফরোয়ার্ড আশিক। এটা টুর্নামেন্টে তার তৃতীয় গোল। এর আগে গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপকে বিধ্বস্ত করা ম্যাচে তিনি দু’গোল করেছিলেন।

নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমিমাংসিত থাকলে সরাসরি টাইব্রেকারের ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে বাংলাদেশ চার শটের সবগুলোতে গোল করলেও ভারতের ভাগ্যে জুটে দু’টি।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘ভারত খুবই শক্ত প্রতিপক্ষ ছিল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেমিফাইনালের শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকি। যেভাবে বলেছিলাম, ছেলেরা সেভাবেই খেলেছে। তবে কাউন্টার অ্যাটাকে একটি গোল হজম করেই আমরা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যাই। কিন্তু গোলরক্ষক মেহেদী হাসানের অসাধারন নৈপূণ্যে ফাইনালে উঠেছি।’ সমতা সূচক গোল করা আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে দু’গোল করেছিলাম। কোচ আমার উপর ভরসা রেখেছিলেন। সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছি পেনাল্টি থেকে গোল করে। এবার আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন।’ ম্যাচের নায়ক গোলরক্ষক মেহেদী হাসানের কথা, ‘এখন আমরা ফাইনালিষ্ট। খুব ভালো লাগছে। তবে আনন্দে গাঁ ভাসিয়ে দিলে চলবে না। যদি ফাইনালে জিততে পারি, তাহলে বিদেশের মাটিতে দেশের লাল-সবুজ পতাকা উড়াতে পারবো। দেশের জন্য সম্মান বয়ে নিতে পারবো।’

২০১১ সালে শুরু হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরদের এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয়বার ফাইনালে ওঠা। এর আগে ২০১৫ সালে সিলেটে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল লাল-সবুজরা।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ২ নভেম্বর, ২০১৮, ৯:২২ এএম says : 0
    Deshe nanarokom onnai obichar shash ruddho kor poribesh theke jokhon amara hotashai thik tokhoni amadermone ashar alo dekhai amader kishor kishori kriabidra!desher koti koti jonotar valo bashai shikto tomader janchsi tomader janachsi shoto koti ovinondon ebong vobishote aro shofolotar asha rakhi
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ