Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নজিরবিহীন রায় প্রত্যাখ্যান বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার মেয়াদ ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করার রায় প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা এ রায়ে পুরোপুরি স্তম্ভিত ও বিস্মিত। এটি নজিরবিহীন রায়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই রায় দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের ইচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন হয়েছে। কারণ সরকার বিএনপি, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখতে ও রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে দেয়ার ঘটনা প্রায় নজিরবিহীন। কারণ নিম্ন আদালত এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছিল। আমরা তার বিরুদ্ধে আপিল করেছি। হাইকোর্ট সেটি বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে। এটি প্রায় নজিরবিহীন। প্রায় বলছি এ কারণে যে, এ সরকারের সময়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলায় নিম্ন আদালত তাকে খারিজ করে দিয়েছিল। কিন্তু পরে উচ্চ আদালতে তাকে সাত বছরের কারাদন্ড দিয়েছে। এটি অন্য কোন মামলার ক্ষেত্রে দেখা যায় না। কেবল বিএনপি চেয়ারপারসন এবং তারেক রহমানের বেলায় ঘটছে। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলায় আমাদের আইনজীবীদের ধারণা ছিল বেগম খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ খালাস পাবেন। কারণ তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের তথ্য প্রমাণ দিয়েই প্রমাণিত হয়নি যে তিনি এর সাথে জড়িত।
তিনি বলেন, সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন এই এই অস্বাভাবিক রায় দেয়া হয়েছে। সরকার আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলকে ধ্বংস করতে চায় এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রধান যে চেতনা সেই গণতান্ত্রিক পরিবেশকে নষ্ট করতে চায়। এজন্য তারা একে একে সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার বিভাগ সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে অভিযোগ করে মহাসচিব বলেন, বিচার বিভাগ সম্পর্কে আমাদের নতুন করে কিছু বলতে হবে না কারণ বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা তার বইয়ে বলেছেন, বিচার বিভাগ কিভাবে চলছে? সরকার সম্পূর্ণ বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে? সরকারের ইচ্ছানুযায়ি রায় না দেয়ায় কিভাবে তাকে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে? আদালকে কিভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে সরকার?
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে রায় দেওয়া হয়েছে তা সরকারের ইচ্ছায় দেয়া হয়েছে। আমরা এ রায় প্রত্যাখ্যান করছি। ভবিষ্যতে জনগণই বিচার করবে বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হওয়া উচিত ছিল কি না।
এসময় তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, জিয়া চ্যারিটেবল মামলার রায়ের প্রতিবাদে বিএনপি তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। আপাতত সেই কর্মসূচিই পালিত হবে। পরবর্তীতে আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে বিক্ষোভ করছে দলটির নেতাকর্মীরা, আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, ১ নভেম্বর গণঅনশন করবে বিএনপি এবং ২ নভেম্বর সমাবেশ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখান থেকেই পরবর্তীতে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংলাপের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংলাপে সরকার কতটুকু আন্তরিক তা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় দেখলেই বোঝা যায়। জনমনে ইতোমধ্যেই সংলাপ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি›র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমূখ।
মানববন্ধন ও অনশনের মৌখিক অনুমতি: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদন্ড দেয়ার প্রতিবাদে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচির প্রথম দিনে গতকাল সারাদেশে বিক্ষোভ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। একই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং ১ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে গণঅনশন করবেন তারা। মানববন্ধন এবং গণঅনশনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ। তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সাথে দেখা করতে যান। সেখানে তারা এসব কর্মসূচির জন্য পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ কমিশনার তাদেরকে মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন। তবে ২ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে সমাবেশ সেটির এখনো কোন অনুমতি দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ