বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সংসদে পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। গতকাল সংগঠনটির সভাপতি ওয়াজি উদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে গতকাল বিকেলে আন্দোলন ও পরবর্তী করণীয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করে সংগঠনটি। এতে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী-পথচারীসহ সাধারণ নগরবাসী।
সমাবেশে সংগঠনের সহ সভাপতি সাদেকুর রহমান হিরুর সভাপতিত্বে অপর সহ সভাপতি আব্দুর রহিম দুদু, সাধারণ সম্পাদক উসমান আলীসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়ক পরিববহন আইনটি সংসদে পাস হওয়ার পর থেকেই তারা বিভিন্ন ধারা সংশোধনসহ শাস্তি কমানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের দাবির প্রতি কোন তোয়াক্কা না করে শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী আইনের পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছে।
শ্রমিক নেতারা বলেন, নতুন আইনটিতে বেশ কয়েকটি ধারা আছে যা শ্রমিক স্বার্থের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। যা দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না হয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এসব ধারা জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। যার কারণে কোন চালক বা শ্রমিকের অনিচ্ছায় কোন দুর্ঘটনা ঘটলেও কঠিন শাস্তি পেতে হবে। এমনকি বিদ্যমান আইনে মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত রাখা হয়েছে।
শ্রমিক নেতারা বলেন, বর্তমান আইনের কারণে অনেকে পরিবহন পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। বিশেষ মহলকে খুশি করতে এমন আইন করা হয়েছে। তারা চলমান সমস্যা নিরসনে অতিদ্রুত ৮ দফা দাবি মেনে নিতে বলেন।
বক্তরা বলেন, কাল (আজ) সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন কার্যক্রম শুরু হবে। এরপরেও দাবি না মানলে বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ফেডারেশনের নেতারা।
গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করছে ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। এ সময় রাস্তায় সব ধরণের যান বাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা।
কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, শনিবার সরকারী অফিস বন্ধ থাকলেও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। অফিস ছুটির পর যানজটে পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদেরকে। বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে, গাড়ি এক চুলও সরছিল না। মিরপুরের বাসীন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, দেশটা মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। যে যার ইচ্ছেমতো রাস্তা ঘাট দখল করে সমাবেশ করছে। মোহাম্মদপুরের বাসীন্দা আলী হোসেন বলেন, আইনের সঠিক ব্যবহার থাকলে এমনটি সম্ভব হতো না। তখন কেউ রাস্তা দখল করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার সাহস পেত না।
আট দফা দাবি হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করা। শ্রমিকদের অর্থদন্ড ৫ লাখ টাকা কমানো। সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করা। ওয়েস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করা। সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা। গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করা। সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।