মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত (ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউমান রাইটস সংক্ষেপে ইসিএইচআর) নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননাকে মত প্রকাশের অনুমোদিত সীমার লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে। আদালত বলেছে যে, তার অবমাননা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়। ইসিএইচআর বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার এক আদালতের রায় বহাল রেখে দেয়া রায়ে এ কথা বলে। আদালত আরো বলেছে যে, নবী মুহাম্মদ (সা.) কে শিশু যৌন নিপীড়ক বলে অভিযুক্ত করে বক্তব্য প্রদানকারিণী এক অস্ট্রিয়ান মহিলাকে ফৌজদারি অপরাধে সাজা প্রদান ও জরিমানা করে অস্ট্রিয়ার আদালতের দেয়া রায়ে তার মত প্রকাশের অধিকার লঙ্ঘিত হয়নি। ৭ জন বিচারকের একটি প্যানেল এ রায় প্রদান করেন।
আদালত কর্তৃক এ.এস বলে চিহ্নিত অস্ট্রীয় নাগরিক ঐ মহিলা ২০০৮ ও ২০০৯ সালে অস্ট্রিয়ার চরম ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টির (এফপিও) জন্য ইসলাম বিষয়ে কয়েকটি সেমিনারের আয়োজন করেন। এসব সেমিনারে তিনি শিশু আয়েশার সাথে নবী (সা.)-এর বিয়ের বিষয়ে আলোচনা করেন এবং জোর দিয়ে বলেন যে, তিনি শিশু যৌন নিপীড়ক ছিলেন।
২০১১ সালে অস্ট্রিয়ার একটি আদালত ধর্মীয় মতবাদ অবমাননার জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ৪৮০ ইউরো (৫৪৮ ডলার) জরিমানা করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে ঐ মহিলা দু’বার আপিল করলেও তার বিরুদ্ধে পূর্বের রায় বহাল থাকে।
আদালত বলে, তারা দেখতে পেয়েছেন যে, বাদিনীর কট‚ক্তি যৌক্তিকভাবেই মুসলমানদের জন্য অবমাননামূলক হয়ে থাকতে পারে এবং সত্যভিত্তিক তথ্য ছাড়াই তা সাধারণীকরণের পর্যায়ে পড়ে। এ প্রেক্ষিতে ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গ ভিত্তিক ইসিইচআর রায়ে বলে যে, মহিলার বক্তব্য মত প্রকাশের স্বাধীনতার আওতায় পড়ে না।
আদালত বলে, তারা সুনির্দিষ্টভাবে দেখতে পেয়েছেন, স্থানীয় আদালত ব্যাপকভাবে বাদিনীর বক্তব্য বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে মূল্যায়ন করেছে এবং সতর্কতার সাথে তার মতপ্রকাশের অধিকারের সাথে অন্যদের ধর্মীয় অনভূতি সুরক্ষার অধিকারের ভারসাম্য রক্ষা করেছে। তারা অস্ট্রিয়ায় ধর্মীয় শান্তি বজায় রাখার বৈধ উদ্দেশ্য পালন করেছেন।
আদালতের রায়ে আরো বলা হয়, এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্বলিত ইউরাপীয় মানবাধিকার চুক্তির ১০ নং অনুচ্ছেদের কোনো লঙ্ঘন হয়নি। ১০ নং অনুচ্ছেদের (মতপ্রকাশের স্বাধীনতা) ভিত্তিতে বাদিনী ই.এস অভিযোগ করেন, স্থানীয় আদালতগুলো তার মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের আলোকে তার বিরোধিতামূলক বক্তব্যের নির্যাস উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইসিএইচআর বলে, ই.এস-র বক্তব্য নিরপেক্ষ আচরণমূলক নয়, বরং তার উদ্দেশ্য শিশু বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়কে গণবিতর্কিত করে তোলা। আদালত আরো বলে, তাকে যে সামান্য পরিমাণ জরিমানা করা হয়েছে তা অন্যায্য বলে বিবেচনা করা যায় না।
অস্ট্রিয়ার আদালত শিশু যৌন নিপীড়ন ও শিশু বিবাহের মধ্যে একটি পার্থক্য টেনেছে যা ্ঐতিহাসিকভাবে ইউরোপের শাসক পরিবারগুলোতে সাধারণ প্রথা হিসেবে প্রচলিত ছিল।
ইসিএইচআর উল্লেখ করে, তারা বাদিনীর কট‚ক্তিকে ইসলামের নবীর উপর এক অপমানজনক আক্রমণ হিসেবে গণ্য করেছেন যা গোঁড়া বিশ্বাসকে আরো গভীর করতে ও ধর্মীয় শান্তিকে হুমকিগ্রস্ত করতে সক্ষম।
আদালত উল্লেখ করে, অস্ট্রিয়ার আদালতগুলো বলেছে, ই.এস আংশিক অসত্য ঘটনা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ছাড়া বিচারের রায়কে মূল্যায়ন করছেন। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলে, ধর্মীয় বিষয় প্রত্যাখ্যান করা যায় বা সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে, কিন্ত ধর্ম বিষয়ে কারো বক্তব্য সমালোচনা প্রত্যাখ্যানের বাইরে চলে গেলে এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার উস্কানি দিলে রাষ্ট্র যুক্তিযুক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
৮৮ লাখ জনসংখ্যার দেশ অস্ট্রিয়ায় প্রায় ৬ লাখ মুসলমানের বাস। এখন দেশটি ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ইসলামফোবিয়ার নেতায় পরিণত হয়েছে। ইউরোপ যখন অভিবাসন সঙ্কটে পড়ে আরো অভিবাসী আগমন রোধের অঙ্গীকার করেছে ও নতুন অভিবাসী ও উদ্বাস্তুদের জন্য সুবিধা কর্তন করেছে, সে সময় অস্ট্রিয়ায় রক্ষণশীল ও চরম ডানপন্থীদের জোট সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এপ্রিলে অস্ট্রিয়ার চরম ডানপন্থী চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুরজ ভিয়েনার বৃহত্তম মসজিদটি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন। সেই সাথে নগরীর মুসলিম সংগঠনগুলোকে ভর্তুকি দেয়ার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।