Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মির্জাপুরে প্রতারনার মাধ্যমে সরকারি বিপুল অংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:৪৮ এএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে দেখিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা হতে প্রতারনার মাধ্যমে ০.৫৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরন বাবদ বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ০.৯০ একর ভূমির ক্ষতিরপূরণ বাবদ টাকা উত্তোলন করলেও তা গোপনে একই হোল্ডিং এ প্রতিবছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে যাচ্ছিলেন। এই পুকুর চুরির বিষয়টি স্থানীয় ভূমি অফিসের নজরে আসলে ওই প্রতারকের নামে থাকা ০.৯০ ভূমির নামজারী জমাভাগ ও হোল্ডিং বাতিল এবং প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া .০৫৮ একর ভূমির টাকা ফেরৎ পেতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে বলে মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন জানিয়েছেন।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন মির্জাপুর পৌর এলাকায় অবস্থিত মা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. ইব্রাহিম মিয়া জালিয়াতির মাধ্যমে এই বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ১৯৯৫-৯৬ সালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস নির্মাণের জন্য সরকার এলএ ৫৪নং কেসের মাধ্যমে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী মৌজার এসএ ৪২৪ নং দাগের ৩.১০একর ভূমির মধ্যে ১.৫৪ একর ভূমি অধিগ্রহন করে। অধিগ্রহনকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকার মূল্যও নির্ধারণ করেন। কিন্ত অধিগ্রহণকৃত দাগের ওই ভূমি অর্পিত সম্পতি হওয়ায় ক্ষতিপূরনের টাকা সরকারি তহবিলে আটকে থাকে।
২০১২ সালে সরকারি নির্বাহী আদেশে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্তির আইন পাস হলে ইব্রাহিম মিয়া ২০১৩-১৪ সালে ৯০৩(IX-I) নং মোকাদ্দমামূলে ওই দাগে ০.৯০ একর ভূমি নিজ নামে নামজারী ও জমাভাগ করে ২০০৮ নং হোল্ডিং এ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেন। ০.৯০ একর ভূমি নামজারী ও জমাভাগ করলেও একই হোল্ডিংমূলে ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে প্রতারনার মাধ্যমে তিনি ১.৪৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৯৪০ টাকা উত্তোলন করেন।এ সময় তিনি অতিরিক্ত ০.৫৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লাখ ১২ হাজার ৭০৬ টাকা সরকারি হওবিল থেকে হাতিয়ে নেন। এরপরও তথ্য গোপন রেখে প্রতারক ইব্রাহিম একই হোল্ডিং এ ০.৯০ একর ভূমির বাবদ প্রতিবছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে যাচ্ছেন। প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত ০.৫৮ একর ভূমির ক্ষতিপুরনের টাকা হাতিয়ে নেয়া ও উত্তোনকৃত ভূমির উন্নয়ন কর পরিশোধ করার বিষয়টি মির্জাপুর উপজেলা সহাকরী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেনের নজরে আসলে তিনি ০.৯০ একর ভূমির নামজারী জমাভাগ ও হোল্ডিং বাতিল করেন।এছাড়া প্রতারনার মাধ্যমে অতিরিক্ত ০.৫৮ একর ভূমি টাকার বিষয়ে প্রয়োজনী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমানকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ইব্রাহিম মিয়ার নামে ০.৯০ একর ভূমির নামজারী ও জমাভাগ থাকলেও কিভাবে তিনি ১.৪৮ একর ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে উত্তোলন করলেন এ বিষয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সার্ভেয়ার মো. সাখাওয়াত হোসেন।

মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজগর হোসেন বলেন, বাওয়ার কুমারজানী মৌজার ৪২৪ নং দাগে ০.৯০ একর ভূমি ইব্রাহিম মিয়ার নামে নামজারী জমাভাগ হোল্ডিং ছিল। ওই একই নামজারী জমাভাগ ও হোল্ডিং মূলে তিনি টাঙ্গাইল ভূমি শাখা হতে ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করায় তা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া নামজারী ও জমাভাগ ছাড়া ০.৫৮ একর অর্পিত সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ বাবাদ কিভাবে তিনি সরকারি টাকা উত্তোলন করেছেন তা দেখে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়মের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ