Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা গণহত্যা চলছেই

নির্যাতন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জাতিসংঘের

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:১৫ এএম

রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর এখনও মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের তদন্তকারী কমিটির প্রধান। বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান তিনি। তবে, জাতিসংঘের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি। এর আগে বুধবার রাশিয়ার সমর্থনে ভোটের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক বাতিলের চেষ্টা করে চীন। রাশিয়া, চীন এবং ইথিওপিয়া বৈঠক বাতিলের পক্ষে ভোট দিলেও, এর বিপক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ নয়টি দেশ। মিয়ানমার সেনাবাহিনী হত্যাযজ্ঞ এবং নির্যাতনের মুখে গত এক বছরে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন ও গণহত্যা এখনো অব্যাহত আছে। মিয়ানমার সরকারের সম্পূর্ণরূপে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কোনো আগ্রহ নেই। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসমান জানান, ‘মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে এখনো রোহিঙ্গা নিধন করা হচ্ছে। শারীরিক নির্যাতন ও গণহত্যা অব্যাহত থাকায় রোহিঙ্গারা এখনো পালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মারজুকি দারুসমান। এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাউ দো সুয়ান ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ, পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ অভিহিত করে বলেন, মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ তদন্তকারী ইয়াংহি লি বলেন, তিনি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই আশা করেছিলেন, মিয়ানমার নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বে দেশটির পরিস্থিতি অতীতের চেয়ে অনেক আলাদা হবে; কিন্তু বাস্তবে এটি অতীতের চেয়ে বেশি আলাদা হয়নি। লি আরো বলেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী, সাবেক রাজনৈতিক বন্দি এবং বর্তমানে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারের নেতৃত্ব দেওয়া সু চি রোহিঙ্গাদের ওপর ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন এবং তাদের গ্রাম পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ‘পুরোপুরি অস্বীকার’ করেছেন। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাধ্য হয়ে নিজ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ‘মিয়ানমার সরকার ক্রমশ দেখিয়েছে যে তাদের সম্পূর্ণরূপে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কোনো আগ্রহ নেই, যেখানে সব মানুষ সমভাবে তাদের সকল অধিকার ও স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে। দেশটির সরকার ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনকে সমর্থন করে না,’ বলেন লি। ‘এ রকম চলতে থাকলে মানুষ নিরপেক্ষভাবে ন্যায্য বিচার পাবে না, দোষী সাব্যস্ত করা হবে না এবং আইন নিপীড়নের অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হবে না,’ যোগ করেন তিনি। দারুসমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের কঠোর অবস্থান এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বাধা। তাদের অব্যাহত অস্বীকার, জাতীয় সার্বভৌমত্বের আচ্ছাদনে নিজেদের রক্ষা করার প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সা¤প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে ৪৪৪ পৃষ্ঠার বিবরণী প্রত্যাখ্যানের কারণে মিয়ানমারের কাছ থেকে জবাবদিহি কোনোভাবেই আশা করা যায় না।’ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন দারুসমান এবং লি। মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, আইভরি কোস্ট, কুয়েত, পেরু এবং পোল্যান্ড রোহিঙ্গা নির্যাতনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেয়। চীন, রাশিয়া ও বলিভিয়া ‘না’ ভোট দিয়েছে এবং গিনি, ইথিওপিয়া ও কাজাখস্তান ভোট দেয়নি। এপি, এএফপি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • তামান্না ২৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:০৫ এএম says : 0
    আর কত মানুষ মরলে আহ্বান ছেড়ে একশনে যাবে জাতিসংঘ?
    Total Reply(0) Reply
  • রফিক ২৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৫:০৬ এএম says : 0
    এখন বিশ্ব মানবতা চুপ কেন ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ