রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে লক্ষীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। চলছে জল্পনা-কল্পনা ও নানা হিসাব-নিকাশ। আসনটিতে আ.লীগ, বিএনপি, জেএসডি, জাতীয় পর্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, বিকল্পধারা, জামায়াত ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী তৎপর রয়েছেন। এ আসনে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলক জেএসডি সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা আ স ম আবদুর রব, আ.লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, বিকল্প ধারার কেন্দ্রীয় মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানসহ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেবেন।
এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১০ হাজার ৮৪০ জন। পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৬ ও নারী ভোটার এক লাখ ৫৩ হাজার ২৮১ জন।
স্বাধীনতার পর এ আসনে আ.লীগ থেকে দুইবার, বিএনপি থেকে চারবার এবং জেএসডি থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দলীয় বিভক্তির কারণে নির্বাচনে আসনটি হারাতে পারে আ.লীগ বলে মনে করেন বিজ্ঞজনরা।
এখানে আ.লীগের নেতাকর্মীরা দুই শিবিরে বিভক্ত। একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন আ.লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, অপর অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান এমপি মো. আবদুল্লা আল মামুন। তারা দু’জনই নৌকার মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও আ.লীগের মনোনয়ন পেতে জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক আব্দুর জাহের সাজু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুল কবির, রামগতি পৌরসভার সাবেক মেয়র আজাদ উদ্দিন চেীধুরী প্রমুখ দলীয় মনোনয়ন পেতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এমপি আবদুল্লার অনুসারীরা মনে করেন, গত পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করছেন। রামগতি-কমলনগর নদীভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণসহ সার্বিক দিক বিবেচনায় দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়লাভ করবেন তিনি।
এ আসন থেকে আ.লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরিদুন নাহার লাইলী বলেন, জীবনের বেশির ভাগ সময়ই আমি দলের জন্য কাজ করেছি, আজীবন কাজ করে যাব। সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি, কর্মীসৃষ্টি ও সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম জনগণের মাঝে প্রচার-প্রচারণায় রাত-দিন কাজ করছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়লাভ করব বলে আশাবাদী। মনোনয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মেনে নিয়ে দলীয় প্রার্থীর জয়ের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
এ আসনটিতে মহাজোটরে শরিক দল জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভক্তি না থাকায় ব্যক্তি ইমেজ, দল ও জোটের ভোটে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী জাপার মনোনয়নপ্রত্যাশী শিল্পপতি ও সমাজসেবক আবুল কালাম আজাদ। তিনি দল ও জোটের মনোনয়ন পেতে তিনি তৎপর রয়েছেন। জয়ের বিষয়ে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
অপরদিকে বিএনপির দুর্গ খ্যাত এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শপিউল বারী বাবু, কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সহ-সভাপতি আবদুল মতিন চৌধুরীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় কাজ করে এলেও সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘোষণার পর থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিশ্চুপ রয়েছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নিজ এলাকা হওয়ায় এ আসনে তার মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত এমনটি মনে করছেন স্থানীয়রা।
আ স ম আবদুর রব জানান, বিগত সময়ে এ আসনে এমপি ও মন্ত্রী থাকাকালীন এ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তার দলকে যে খান থেকে যত আসনই দেয়া হোক না কেন, জাতীয় ও ফ্রন্টের স্বার্থে তিনি তা মেনে নেবেন।
এ ছাড়াও এ আসন থেকে নাগরিক ঐক্যের প্রার্থী আবুল বারাকাত দুলাল, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আহম নোমান সিরাজী, জামায়াত ইসলামীর ড. রেদওয়ান উল্যা শহিদ, আবদুস সাত্তার পলোয়ান প্রমুখ মনোনয়নের প্রত্যাশায় লবিং করে যাচ্ছেন।
সকল দলের অংশগ্রহণ ও সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে চান এ আসনের ভোটাররা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।